ভোট-প্রণাম: নির্বাচনের আগের দিন দিল্লির হনুমান মন্দিরে অরবিন্দ কেজরীবাল। শুক্রবার। ছবি: পিটিআই।
অরবিন্দ কেজরীবালের আপ, নাকি নরেন্দ্র মোদীর বিজেপি— কারা আগামী পাঁচ বছর দিল্লি শাসন করবে, শনিবার তা ঠিক করে দেবেন দিল্লিবাসী। শেষ মুহূর্তের প্রচার-উত্তেজনার পারদ চড়ছে দুই শিবিরেই।
এই যুদ্ধের আবহে, ভোটের ঠিক আগের দিন বজরংবলীর শরণ নিলেন অরবিন্দ কেজরীবাল। স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে বাবা খড়ক সিংহ মার্গের হনুমান মন্দিরে শুধু গেলেনই না, টুইট করলেন, ‘‘দেশ ও দিল্লির উন্নতির জন্য হনুমানজির কাছে প্রার্থনা করলাম। ভগবান বললেন, ভাল কাজ করছ। এই ভাবেই লোকের সেবা করো। ফলাফল আমার উপরে ছেড়ে দাও। সব ভাল হবে।’’ যা দেখে বিজেপির কটাক্ষ, শাহিন বাগের পাশে দাঁড়ানোটা বিরুদ্ধে যাচ্ছে বুঝে প্রথমে প্রচার সভায় ‘হনুমান চালিশা’ পাঠ, আর এখন ভগবানের নামে মিথ্যাভাষণ শুরু করেছেন কেজরী।
ভোটের আগের দিন নেতারা মন্দির-মসজিদ ঘুরে আশীর্বাদ নিয়েই থাকেন। কিন্তু এক সপ্তাহ ধরে কেজরীবাল যে ভাবে প্রচারের ফাঁকে হনুমান মন্দিরে ঘুরে বেড়াচ্ছেন, নির্বাচনী প্রচারে ‘হনুমান চালিশা’ পাঠ করে শোনাচ্ছেন— তাতে প্রশ্ন উঠেছে, হিন্দু ভোটারদের মন রাখতেই কি এই পথ? কেজরীর দাবি, চিরকালই বজরংবলীর ভক্ত তিনি। নিয়মিত চালিশা পাঠ করেন।
আরও পড়ুন: শাহিন বাগে শিশুমৃত্যুর শুনানি দিল্লি ভোটের পরে সোমবার
সব সমীক্ষাই বলছে, কেজরীর ক্ষমতায় ফেরা সময়ের অপেক্ষা। যদিও বিজেপির দাবি, অন্তত ৪০টি আসন তারা পাচ্ছেই। বজরংবলী শেষ পর্যন্ত কাকে জয়ী করেন, তা জানা যাবে ১১ ফেব্রুয়ারি। কিন্তু একটি বিষয় স্পষ্ট, কালকের যুদ্ধ সদ্য প্রাক্তন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহের কাছে মর্যাদার লড়াই। সভাপতি হিসেবে গত এক বছরে পাঁচটি রাজ্যে হেরেছেন তিনি। এ বার দিল্লিতে ভোট ঘোষণার সপ্তাহখানেকের মধ্যেই সভাপতির পদ জে পি নড্ডার হাতে ছেড়ে দিয়েছেন। তবে লড়াই থেকে সরেননি।
কার্যত গত এক মাস নির্বাচনী প্রচারে নিজেকে সঁপে দিয়েছিলেন শাহ। গত কাল প্রচারের শেষ দিনে দলের প্রায় আড়াইশো সাংসদ দিল্লির পথে নামেন। দলের এক শীর্ষ সূত্রের মতে, ‘‘গত বার তিনটি আসন পাওয়া বিজেপি যাতে ৩০টি আসন পায়, তার জন্যই এত প্রচেষ্টা। তাতে ধাক্কা খাবেন কেজরী। নৈতিক পরাজয় হবে তাঁর।’’ মরিয়া শাহ আজ সন্ধ্যায় একটি অডিয়ো বার্তায় প্রত্যেক বিজেপি সমর্থককে নিজের পরিবার ছাড়া আরও দু’টি পরিবারের ভোট দলের পক্ষে ফেলার জন্য উদ্যোগী হতে নির্দেশ দেন।
ধারে-ভারে কেজরী এগিয়ে থাকায় বিজেপি চোরাগোপ্তা আক্রমণের রাস্তা বেছে নিয়েছে বলে সরব আপ নেতৃত্ব। তাঁদের অভিযোগ, যথেষ্ট প্রমাণ না-থাকা সত্ত্বেও শাহিন বাগে গুলি চালানো কপিল গুজ্জরকে আপের সমর্থক বলে প্রচার করে দিল্লি পুলিশ। এর পরে কাল একটি দুর্নীতি মামলায় সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হন দিল্লির জিএসটি অফিসার জি কে মাধব। তিনি উপমুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসৌদিয়ার অফিসার অন স্পেশাল ডিউটি (ওএসডি)। বিজেপি সাংসদ প্রবেশ বর্মা বলেন, ‘‘ওএসডি মুখ। আসলে টাকা যাচ্ছিল সিসৌদিয়ার কাছে। যা দিয়ে শাহিন বাগের লোকেদের বিরিয়ানি খাওয়াচ্ছেন তিনি।’’ প্রবেশের বিরুদ্ধে আজ মানহানির নোটিস দিয়েছেন মণীশ।
অস্বস্তিতে পড়তে হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীকেও। একটি ভিডিয়ো বার্তায় কেজরীবাল বলেছিলেন, ‘উন্নয়নের পরিবর্তে অন্য দলগুলি মন্দির-মসজিদ নিয়ে প্রচার চালাচ্ছে।’ মুখ্যমন্ত্রীর ওই বক্তব্যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট হতে পারে ওই অভিযোগ আজ তাঁকে নোটিস পাঠায় কমিশন।
কাল বিকেল ৫টার মধ্যে জবাব দিতে হবে কেজরীবালকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy