নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে ভ্লাদিমির পুতিন। নয়াদিল্লিতে সোমবার। ছবি পিটিআই।
আফগানিস্তানের মাটিকে ব্যবহার করে অন্য দেশে সন্ত্রাসে মদত দেওয়া যাবে না। বন্ধ করতে হবে ভারতের প্রতিবেশী বলয়ে আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাস। পূর্ব লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা থেকে চিনকে পিছু হটানোর জন্য সক্রিয় হতে হবে মস্কোকে। আজ ভারত এবং রাশিয়ার বার্ষিক সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মধ্যে বিশদে আলোচনার পরে আঠাশটি চুক্তি সই হল। পাশাপাশি, দক্ষিণ এবং দক্ষিণ পশ্চিম এশিয়ার সামগ্রিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে এই মর্মে কথা হয়েছে। বৈঠকের শেষে প্রকাশিত যৌথ বিবৃতিতে রাখা হয়ছে পাকিস্তানের মদতে পুষ্ট জঙ্গি সংগঠনগুলির নাম।
বৈঠকের পরে বিদেশসচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা বলেন, “স্থির হয়েছে আফগানিস্তানের মতো গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক বিষয়ে রাশিয়া এবং ভারত ঘনিষ্ঠ সমন্বয় এবং সহযোগিতা বজায় রাখবে। দুটি দেশই চায় শান্তিপূর্ণ, সমৃদ্ধ এবং সুস্থির আফগানিস্তান। সে দেশের সরকারে সমস্ত সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব থাকা কাম্য।” শ্রিংলা বলেন, “আফগানিস্তানের মাটিকে ব্যবহার করে কোনও ধরনের সন্ত্রাসবাদ, মৌলবাদ, সন্ত্রাসবাদে পুঁজির জোগান, সহায়ক পরিস্থিতি গড়ে তোলা, মাদক চোরাচালানের মতো যাবতীয় বিষয়ের বিরুদ্ধে নয়াদিল্লি এবং মস্কো। পাশাপাশি আফগানিস্তানের মানুষের জন্য সাহায্য যাতে মসৃণ ভাবে পৌঁছে দেওয়া যায় তা নিয়েও কথা বলেছেন দু’দেশের রাষ্ট্রনেতা।”
আজ রাতে সাংবাদিক বৈঠকে পাকিস্তানের নাম বলেননি বিদেশসচিব ঠিকই। যৌথ বিবৃতিতেও ইসলামাবাদের নাম নেই। কিন্তু নিশানা করা হয়েছে পাকিস্তানকে। শ্রিংলা জানিয়েছেন, “লস্কর-ই-তইবা, আল কায়দা, আইএস-এর মতো জঙ্গি সংগঠনগুলিকে দমন করার জন্য যৌথ ভাবে কাজ করা হবে। ভারতের প্রতিবেশী ভূখণ্ডে যারা জঙ্গি কার্যকলাপ চালাচ্ছে তাদের সবার কথাই আজ আলোচনায় উঠে এসেছে।”
পুতিনের সঙ্গে বৈঠক শুরুর আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেন, “আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বহু সমীকরণ বদলাচ্ছে। ঘটছে বহু মৌলিক পরিবর্তন। কিন্তু তার মধ্যেও ভারত এবং রাশিয়া—এই দুই রাষ্ট্রের মধ্যে বন্ধুত্ব আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি উদাহরণ স্বরূপ।” আজ বাণিজ্য ক্ষেত্রেও একটি লক্ষ্যমাত্রা তৈরি করেছেন মোদী-পুতিন। মোদীর কথায়, “২০২৫ সালের মধ্যে ৩ হাজার কোটি ডলার দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য, এবং ৫ হাজার কোটি ডলার দ্বিপাক্ষিক বিনিয়োগে পৌঁছানো আমাদের লক্ষ্য।”
ভারত এটা ভাল করেই জানে যে রাশিয়ার বিভিন্ন আন্তর্জাতিক কারণে চিনের উপরে নির্ভরতা রয়েছে। অন্য দিকে চিনও কিছু ক্ষেত্রে নির্ভরশীল রাশিয়ার উপরে। এমন পরিস্থিতিতে চিনের সঙ্গে দরকষাকষি করতে মস্কোকে কাজে লাগানোটাই উপযুক্ত বলে মনে করছে নয়াদিল্লি। সূত্রের খবর, আজকের বৈঠকে বিশদে চিন প্রসঙ্গ ওঠে। সীমান্তে চিনের আচরণ নিয়ে ঘোর অসন্তোষ জানায় ভারত। আবার, তালিবানের সঙ্গেও সরাসরি সংযোগ রয়েছে পুতিন সরকারের। ফলে তালিবানের কাছে পাক-বিরোধী বার্তা পাঠানোই হোক অথবা, সে দেশের মানুষের জন্য সহায়তা ও ত্রাণ পৌঁছানো, রাশিয়া ভারতের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নির্ভরতার জায়গা হতে চলেছে। আজকের মোদী-পুতিন বৈঠকের পরে তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে।
রাতে যে যৌথ বিবৃতি প্রকাশ হয় তাতে বলা হয়েছে, ‘‘দু’পক্ষই আফগানিস্তানের পরিবর্তনশীল পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেছে। বিশেষ করে সেখানকার নিরাপত্তা পরিস্থিতি এবং গোটা অঞ্চলে তার প্রভাব নিয়ে। সেখানকার বর্তমান নিরাপত্তা পরিস্থিতি, সন্ত্রাসবাদ, মৌলবাদ এবং মাদক চোরাচালান নিয়েও কথা হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy