প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।
দেশের বড় শহরগুলিতে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের গুরুত্বপূর্ণ সাফল্য তুলে ধরতে সবক’টি বিভাগকে ‘সেলফি পয়েন্ট’ তৈরির নির্দেশ দিল প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। একই সঙ্গে নির্দেশ, সে সব নিজস্বী কেন্দ্রে বাধ্যতামূলক ভাবে রাখতে হবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ছবি বা প্রমাণআকারের কাট আউট। যার অর্থ, সেই সব নিজস্বীতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ছবি নিশ্চিত করা।
বিরোধীদের অভিযোগ, আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের কথা মাথায় রেখেই এ ধরনের নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। তাঁদের বক্তব্য, এই ধরনের ঘটনায় সেনার রাজনীতিকরণ হবে। বিশেষ করে যখন লাদাখ ও অরুণাচল সীমান্তে চিন ভারতীয় ভূখণ্ড দখলে তৎপর, তখন সেনাদের নিয়ে রাজনীতি আদৌ কাম্য নয়।
গত ৬ অক্টোবর এই নির্দেশিকা জারি করে ‘কন্ট্রোলার জেনারেল অব ডিফেন্স অ্যাকাউন্টস’। দেশের বিভিন্ন শহরে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের দফতরগুলিতে ওই পয়েন্ট তৈরির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই কলকাতা, মিরাট, বেঙ্গালুরু, নয়াদিল্লি, প্রয়াগরাজের মতো ৯টি শহরের নিজস্বী কেন্দ্র ছাড়পত্র পেয়েছে কেন্দ্রের। প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছে, দেশে এ ধরনের ৮২২টি কেন্দ্র হবে, ভারতীয় সেনা তৈরি করবে প্রায় শ’খানেক।
পয়েন্টগুলিতে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরার পাশাপাশি কেন্দ্রের বিভিন্ন প্রকল্প যেমন স্বচ্ছ ভারত, আত্মনির্ভর ভারত, আবাস যোজনা, স্বচ্ছ জল, উজ্জ্বলা যোজনাকে গুরুত্ব দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে মন্ত্রক। শহরের জনবহুল স্থান যেমন ট্রেন বা মেট্রো স্টেশন, বাস ডিপো, বিমানবন্দর, শপিং মল, স্কুল, কলেজ, উৎসবস্থলে পয়েন্টগুলি তৈরি করতে বলা হয়েছে। কত জন সেখানে নিজস্বী তুলেছেন, তার হিসেব পেতে ওই সব পয়েন্টে নির্দিষ্ট মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন, এক্স সমাজমাধ্যমে অ্যাকাউন্ট ও হোয়াটস অ্যাপ নম্বর রাখতে বলা হয়েছে। যাতে আগ্রহীরা নিজেদের নিজস্বী ওই ব্যবস্থার মাধ্যমে প্রতিরক্ষা দফতরে পাঠাতে পারেন।
বছর ঘুরলেই লোকসভা নির্বাচন। বিরোধী শিবিরের দাবি, এই আবহে এ ধরনের প্রচার চালিয়ে নিজের নম্বর বাড়ানোর চেষ্টা করছেন প্রধানমন্ত্রী। রাজনীতির অনেকের মতে, সরকারের বিভিন্ন জনমুখী প্রকল্প আমজনতার কাছে প্রচারের লক্ষ্যেই এ ধরনের পদক্ষেপ করেছে কেন্দ্র। কিন্তু এতে ভারতীয় সেনার রাজনীতিকরণের আশঙ্কা উড়িয়ে দিচ্ছেন না প্রাক্তন সেনাকর্তা ও বিরোধী নেতৃত্ব। অবসরপ্রাপ্ত ভারতীয় সেনাপ্রধান জেনারেল বেদ প্রকাশ মনে করেন, সেনাদের নিয়ে রাজনীতি করা সমীচীন নয়। অনেকের মতে, সেনা রাজনীতিকরণ আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত। বিশেষ করে পাকিস্তানে সেনার ভূমিকা দেখার পর এ ধরনের পদক্ষেপ করার আগে দশ বার ভাবা উচিত সরকারের। তৃণমূলের লোকসভার সাংসদ কাকলি ঘোষদস্তিদার বলেন, ‘‘সেনাদের কাজ দেশের সীমান্ত পাহারা দেওয়া। ভোটে জেতার স্বার্থে তাঁদের রাজনীতিতে টেনে আনা উচিত নয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy