(বাঁ দিক দিকে) জগদীপ ধনখড় এবং মল্লিকার্জুন খড়্গে। —ফাইল চিত্র।
রাজ্যসভার চেয়ারম্যান জগদীপ ধনখড়ের বিরুদ্ধে বিরোধীদের অনাস্থা প্রস্তাব আনার পর থেকে প্রতিদিন তিক্ততা বাড়ছে অধিবেশন কক্ষে। আজ তাতে নতুন সংযোজন ঘটল। রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খড়্গের সঙ্গে ব্যক্তিগত আক্রমণে জড়ালেন ধনখড়। রাজ্যসভার চেয়ারম্যানের তোপ, তিনি ‘কৃষকের সন্তান’ বলে তাঁর বিরুদ্ধে সরব হচ্ছে বিরোধীরা। খড়্গের পাল্টা, তিনিও ‘কৃষক মজুরের সন্তান’, ধনখড়ের তুলনায় অনেক বেশি সঙ্কট যুঝেছেন। এই উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের মধ্যে যথারীতি গোটা দিনের জন্য মুলতুবি হয়ে গেল অধিবেশন। পরিস্থিতি এমনই, রাজনৈতিক মহলের বক্তব্য লোকসভা যে ভাবে নির্বিঘ্নে চলছে, সংবিধান নিয়ে আলোচনা, তেমনটা না-ও হতে পারে রাজ্যসভায়।
বিরোধীদের উদ্দেশে আজ ধনখড় বলেন, “আমি কৃষকের সন্তান, নিজের দুর্বলতা প্রকাশ করি না। দেশের জন্য আমি জীবনও দিতে পারি। আপনাদের তো দিনের ২৪ ঘণ্টায় একটাই কাজ। একজন কৃষকের সন্তান কেন এই আসনে বসেছে, তার বিরোধিতা করা। অনেক সহ্য করেছি। আপনাদের অনাস্থা প্রস্তাব আনার অধিকার রয়েছে, কিন্তু সংবিধানকে অপমান করছেন।”
সংসদের উচ্চকক্ষের চেয়ারম্যানকে খড়্গেও মনে করিয়ে দেন, তিনিও অত্যন্ত সাধারণ ঘর থেকে উঠে এসেছেন। তাঁর কথায়, “আপনারা সরকার পক্ষের সদস্যদের উৎসাহিত করেন অন্য বিরোধী দলের সদস্যদের বিরুদ্ধে বলার জন্য। আপনি যদি কৃষকের সন্তান হন, তবে আমিও কৃষি মজদুরের সন্তান। আপনার থেকে অনেক বেশি সমস্যার মোকাবিলা করেছি। আপনি আমাদের দলীয় নেতাদের অপমান করেছেন, কংগ্রেসকে অপমান করেছেন। আমরা এখানে আপনার প্রশংসা শুনতে আসিনি। আলোচনার জন্য এসেছি।” গলার স্বর উঁচুতে তুলে ধনখড় বলতে থাকেন, “আপনি কার তারিফ শুনলে সবচেয়ে খুশি হন সে কথা সবাই জানে!”
চেয়ারম্যান, সরকার পক্ষ এবং বিরোধী দল সম্মিলিত চিৎকার চলে আধ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে। ধনখড়ের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব এনে বিরোধীরা জাঠদের অপমান করেছেন বলে অভিযোগ তুলেছে বিজেপি। ১৯৫১ সালে রাজস্থানের ঝুনঝুনুর কৈথানা গ্রামে কৃষক পরিবারে জন্ম ধনখড়ের। বিজেপির দাবি, তাঁকে উপরাষ্ট্রপতি পদ থেকে উৎখাত করার অর্থ, দেশের কৃষক পরিবারগুলিকে অপমান করা। বিরোধীরা এই তত্ত্ব উড়িয়ে দিচ্ছেন সংসদের ভিতরে ও বাইরে। তৃমমূল নেতৃত্বের বক্তব্য, ওই আসনে বসার পর চেয়ারম্যানের একটি পরিচয়। তিনি একজন ভারতীয়। বিরোধী আক্রমণের মুখে আত্মরক্ষার্থে পড়ে জাঠ তাস খেলছে বিজেপি। পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী তথা আপ নেতা ভগবন্ত সিংহ মান গতকাল সংসদে এসেছিলেন। তাঁর কথায়, “আজ আমি প্রথম শুনলাম জগদীপ ধনখড় জাঠ। দেশের উপরাষ্ট্রপতি তথা রাজ্যসভার চেয়ারম্যানের জাতপাত নিয়ে মাথা ঘামাতে যাব কেন?”
রাজ্যসভা মুলতুবি হয়ে যাওয়ার পর বাইরে এসে তৃণমূলের ক্ষুব্ধ সাংসদ সুস্মিতা দেব বলেন, “চেয়ারম্যান এবং বিরোধী দলের মধ্যে ম্যাচ ফিক্সিং চলছে। বিরোধী দলনেতার পদ কি সাংবিধানিক পদ নয়? কিন্তু সেই পদাধিকারীকেও ব্যক্তিগত আক্রমণ করেছে বিজেপি। মাইক বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। সাধারণ মানুষের সঙ্গে জড়িত বিষয়গুলি অধিবেশনে তোলা যাচ্ছে না। আসলে ওরা আমাদের বলার সুযোগ দিতে চাইছে না নিজেরা উলঙ্গ হয়ে যাওয়ার ভয়ে। বেকারিত্ব, মূল্যবৃদ্ধি, পশ্চিমবঙ্গের প্রতি কেন্দ্রীয় বঞ্চনা নিয়ে বলতে দিলে, ওরা হালে পানি পাবে না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy