ইয়েস ব্যাঙ্কের উদ্বিগ্ন আমানতকারীরা। ছবি- এপি।
ইয়েস ব্যাঙ্কের আপৎকালীন পরিত্রাতা হয়ে উঠতে চলেছে স্টেট ব্যাঙ্ক (এসবিআই)। রীতিমতো ধুঁকতে থাকা ইয়েস ব্যাঙ্কের ৪৯ শতাংশ মালিকানা নিয়ে নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্টেট ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান রজনীশ কুমার।
তাঁদের টাকা মার যাবে না বলে শুক্রবারই ইয়েস ব্যাঙ্কের আমানতকারীদের আশ্বস্ত করেছিলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। একই আশ্বাস দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য অর্থনৈতিক উপদেষ্টা কৃষ্ণমূর্তি সুব্রমনিয়ন ও রিজার্ভ ব্যাঙ্কের (আরবিআই) গভর্নর শক্তিকান্ত দাস।
শনিবার স্টেট ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যানও জানিয়েছেন, তাঁদের মূল লক্ষ্যই হবে ইয়েস ব্যাঙ্কের আমানতকারীদের সঞ্চয় সুরক্ষিত রাখা। এও জানিয়েছেন, ইয়েস ব্যাঙ্কের সমস্যার আদত কারণটা কী, তা নিয়ে তদন্ত শুরু করা হয়েছে। আগামী সোমবারের মধ্যেই তার ফলাফল আরবিআই-কে জানানো হবে।
ধুঁকতে থাকা ইয়েস ব্যাঙ্কের ৪৯ শতাংশ শেয়ার কিনে নেওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে স্টেট ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান রজনীশ কুমার এ দিন বলেছেন, ‘‘দেশের বৃহত্তম ব্যাঙ্ক হিসাবে আমাদের কিছু দায়িত্ব রয়েছে। কর্তব্য রয়েছে। সেই দায়িত্ব আমাদেরই পালন করতে হবে। কোনও এক জনের ভুলের খেসারত কেন একটা প্রতিষ্ঠান দেবে? ব্যাঙ্ক লাটে উঠলে তার ভয়াবহ প্রভাব পড়ে। কিন্তু এসবিআই পাশে দাঁড়ালে পরিস্থিতিটা ঘুরে যাবে। তা সে বেসরকারি বা সরকারি মালিকানাধীন, যা-ই হোক না কেন, দেশের যে কোনও প্রতিষ্ঠানই জাতীয় সম্পদ।’’
আরও পড়ুন- তোলা যাবে না ৫০ হাজারের বেশি, ইয়েস ব্যাঙ্কে টাকা তোলায় নিয়ন্ত্রণ রিজার্ভ ব্যাঙ্কের
আরও পড়ুন- করোনা, ইয়েস ব্যাঙ্কের খবরে প্রভাব শেয়ার বাজারে, সেনসেক্স পড়ল ১০০০ পয়েন্ট
ও দিকে, গত কালের পর এ দিনও এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) কর্তারা জোর তল্লাশি চালাচ্ছেন ইয়েস ব্যাঙ্কের প্রতিষ্ঠাতা রানা কপূরের মুম্বইয়ের বাড়ি-সহ নানা জায়গায়। ইডি সূত্রের খবর, তল্লাশি চলবে সপ্তাহভর।
ইয়েস ব্যাঙ্ককে ভরাডুবি থেকে উদ্ধার করতে স্টেট ব্যাঙ্ককে মাঠে নামানোর সিদ্ধান্ত পাকা হয়ে যায় শুক্রবারই। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের পরিকল্পনার খসড়া অনুযায়ী, বেসরকারি ইয়েস ব্যাঙ্কের ৪৯ শতাংশ মালিকানা কিনে নেবে রাষ্ট্রায়ত্ত স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া (এসবিআই)। সে জন্য তাদের প্রায় ১১,৭৬০ কোটি টাকা ঢালতে হবে।
বৃহস্পতিবারই ইয়েস ব্যাঙ্কের নিয়ন্ত্রণ নিজের হাতে তুলে নিয়েছিল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। গ্রাহকদের টাকা তোলা ও ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রেও শর্ত আরোপ হয়। আজ সকাল থেকেই টাকা তুলতে গিয়ে নাস্তানাবুদ হন ইয়েস ব্যাঙ্কের গ্রাহকরা। তাঁদের আশ্বস্ত করতে আজ অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন বলেন, ‘‘সমস্ত আমানতকারীর টাকা সুরক্ষিত রয়েছে। আমি নিজে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সঙ্গে পরিস্থিতির উপর নজর রাখছি।’’
শুধু গ্রাহক নয়, আতঙ্কিত ইয়েস ব্যাঙ্কের ১৮ হাজারের বেশি কর্মীও। পরিস্থিতি সামলাতে সকাল থেকে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কর্তাদের সঙ্গে দফায় দফায় কথা বলেন অর্থমন্ত্রী। বৈঠক করেন স্টেট ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান রজনীশ কুমার, সেবির চেয়ারম্যান অজয় ত্যাগীর সঙ্গেও। এর পরেই বিকেলে পুনরুদ্ধার পরিকল্পনার খসড়া ঘোষিত হয়।
অর্থ মন্ত্রক ও রিজার্ভ ব্যাঙ্কের লক্ষ্য, যে পর্যন্ত টাকা তোলার উপর কড়াকড়ি ও ঋণের উপর বিধিনিষেধ জারি করা হয়েছে, সেই ৩ এপ্রিলের মধ্যেই পুনরুজ্জীবনের পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করে ফেলা। কিন্তু কীসের ভিত্তিতে এক মাসের মধ্যে ইয়েস ব্যাঙ্ককে চাঙ্গা করার আত্মবিশ্বাস মিলছে, তার কোনও ব্যাখ্যা অর্থমন্ত্রী দেননি। স্টেট ব্যাঙ্ক টাকা ঢাললে তার আর্থিক স্বাস্থ্য কেমন হবে, সে প্রশ্নেরও উত্তর দিতে চাননি তিনি। স্টেট ব্যাঙ্কের সঙ্গে এলআইসি বা কোনও বেসরকারি লগ্নি সংস্থাকে নামানো হবে কি না, তারও জবাব দিতে চাননি তিনি। প্রশ্ন উঠেছে, এখানেই শেষ, না কি ভবিষ্যতে আরও ব্যাঙ্ক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান ভেঙে পড়তে চলেছে? নির্মলার জবাব, ‘‘আমি আগেই বলেছি, কোনও প্রতিষ্ঠানকেই খাদে পড়তে দেব না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy