Advertisement
E-Paper

Criminal Procedure Bill: হাত-পায়ের ছাপের সঙ্গে ধৃতের ডিএনএ নমুনাও সংগ্রহ করা যাবে! নয়া বিলে বিতর্ক

২০২২ পাশ হলে গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তির হাত ও পায়ের ছাপের সঙ্গেই তার চোখের মণি, রেটিনার স্ক্যান এমনকি ডিএনএ নমুনাও সংগ্রহ করতে পারবে তদন্তকারী সংস্থা।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৯ মার্চ ২০২২ ০৬:১৬
Share
Save

কেবল হাত বা পায়ের ছাপই নয়, আজ লোকসভায় পেশ হওয়া অপরাধী শনাক্তরণ বিল, ২০২২ পাশ হলে গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তির হাত ও পায়ের ছাপের সঙ্গেই তার চোখের মণি, রেটিনার স্ক্যান এমনকি ডিএনএ নমুনাও সংগ্রহ করতে পারবে তদন্তকারী সংস্থা। কেবল গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিরই নয়, বিলে বলা হয়েছে সতর্কতামূলক পদক্ষেপ মেনে আটক ব্যক্তিদেরও সমস্ত ধরনের শারীরিক মাপজোক ও নমুনা সংগ্রহ করার অধিকার থাকবে পুলিশ ও কারাকর্মীদের। প্রয়োজনে করা যাবে নার্কো পরীক্ষা ও ব্রেন ম্যাপিং-ও। সরকারের দাবি, এর ফলে পুলিশের যেমন তদন্তে সুবিধে হবে, তেমনি মামলার নিষ্পত্তি দ্রুত হবে। উল্টো দিকে ওই বিল ব্যক্তি স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ বলে সরব হন বিরোধীরা। বিরোধী শিবির আজ এক জোট হয়ে ওই বিলের পেশের বিরোধিতা করে ভোটাভুটি চায়। ভোটাভুটিতে সরকার পক্ষের জয়ের পরে বিলটি পেশ করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অজয় মিশ্র টেনি।

আজ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বিলটি লোকসভায় পেশ করার কথা থাকলেও তিনি সে সময়ে অনুপস্থিত ছিলেন। সাধারণত তিনি না থাকলে লোকসভায় বিল পেশের দায়িত্ব নেন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিত্যানন্দ রাই। কিন্তু তাঁর পরিবর্তে আজ বিলটি পেশ করেন উত্তরপ্রদেশ লখিমপুর খেরি কাণ্ডে নাম জড়িয়ে পড়া স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অজয় মিশ্র টেনি। ওই হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার হয়ে জামিনে রয়েছেন টেনির ছেলে আশিস। বিরোধীদের দাবি, খেরি কাণ্ডে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীরও প্রত্যক্ষ ভূমিকা ছিল। তাই ওই ঘটনার পর থেকেই টেনিকে মন্ত্রিসভা থেকে সরানোর জন্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়ে সরব রয়েছেন বিরোধীরা। কিন্তু আজ ওই বিলটি তাঁকে দিয়ে পেশ করিয়ে সরকার বার্তা দেয় যে উত্তরপ্রদেশের ব্রাহ্মণ নেতা টেনির প্রতি পূর্ণ আস্থা রয়েছে নরেন্দ্র মোদীর। স্বভাবতই আজ বিল পেশের সময়ে বিরোধীরা বারংবার টেনির সঙ্গে লখিমপুর খেরি কৃষক হত্যাকাণ্ডের যোগ রয়েছে বলে সরব হন। কংগ্রেস সাংসদ অধীর চৌধুরী দাবি তোলেন, ওঁর (টেনির) নমুনা নেওয়া উচিত। বারংবার তাঁকে নিশানা করায় ক্ষুব্ধ টেনি এক সময়ে বিরোধী শিবিরকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘‘আমি অধীররঞ্জন চৌধুরীকে বলতে চাই যে ২০১৯ সালে লোকসভায় নির্বাচিত হয়েছি। যদি আমার বিরুদ্ধে একটিও মামলা থাকে, আমি যদি এক মিনিটের জন্য থানায় বা জেলে গিয়ে থাকি তাহলে আমি এখনই রাজনীতি থেকে সন্ন্যাস নেব।’’

আজ টেনির পেশ করা বিলে বলা হয়েছে দোষী, অপরাধীদের সঙ্গেই গ্রেফতার কিংবা আটক ব্যক্তিদের শারীরিক শনাক্তকরণ ও বায়োলজিক্যাল নমুনা সংগ্রহ করতে পারবেন পুলিশ বা তদন্তকারী সংস্থা ও কারাকর্মীরা। টেনি বলেন, ‘‘বর্তমান আইনে কেবল হাত ও পায়ের ছাপ নেওয়া যায়। কিন্তু বর্তমান প্রযুক্তির দিনে অপরাধের ধারাও পাল্টেছে। তাই তদন্তের ক্ষেত্রে নমুনা সংগ্রহের পরিধি বাড়াতেই বিলটি আনা হচ্ছে।’’ বিলে বলা হয়েছে, ধৃত ব্যক্তির আঙুলের-তালুর-পায়ের ছাপ ছাড়াও চোখের মণি, রেটিনার স্ক্যান, ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করতে পারবে তদন্তকারী সংস্থা। ধৃতের সই ও হাতের লেখার নমুনা, চারিত্রিক গুণাবলী সংগ্রহ করার অধিকার থাকবে পুলিশের। সংগৃহীত তথ্য ভবিষ্যতে প্রয়োজনের জন্য ডিজিটাল ভাবে জাতীয় ক্রাইম রেকর্ড বুরোর কাছে জমা থাকবে। কোনও ব্যক্তির সংগৃহীত নমুনা সর্বাধিক ৭৫ বছর সংগ্রহ করে রাখা হবে। অনিচ্ছুক ব্যক্তির তথ্য সংগ্রহ করার অধিকার দেওয়া হয়েছে পুলিশকে।

বিরোধীদের মতে এ ভাবে নমুনা সংগ্রহ ব্যক্তিস্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ। লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীর চৌধুরী বলেন, ‘‘যাঁরা বিচারাধীন কিংবা কেবল সন্দেহের বশে আটক তাঁদের সম্পর্কেও তথ্য সংগ্রহের অধিকার চলে আসবে পুলিশের। যা স্বাধীনতার অধিকারে হস্তক্ষেপ। আর যেখানে তথ্য সুরক্ষা আইন নেই সেখানে ওই আইন আসলে হিতে বিপরীত হবে। তাছাড়া প্রযুক্তিরও ভুল হয়। উন্নত দেশে নমুনা সংগ্রহ করতে গিয়ে অনেক সময়েই ভুল হয়ে থাকে। সেখানে ভারতে অপরাধীদের নমুনা সংগ্রহের প্রশ্নে আধুনিক প্রযুক্তি নেই।’’ আরএসপি সাংসদ এন কে প্রেমচন্দ্রনের মতে, ‘‘আমি যদি কোনও ন্যায্য দাবির পক্ষে আন্দোলন করি তাহলে আমার নামে সরকার এফআইআর করে আমার ডিএনএ সংগ্রহ করে নিতে পারবে। এটি মানুষের ন্যূনতম প্রতিবাদের অধিকারকে কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা।’’ কংগ্রেস সাংসদ মণীশ তিওয়ারির ব্যাখ্যা, ‘‘ওই বিলে বায়োলজিক্যাল নমুনা সংগ্রহের কথা হয়েছে। যার মাধ্যমে কেবল সন্দেহের ভিত্তিতে ধৃতদের নার্কো পরীক্ষা কিংবা ব্রেন ম্যাপিং করার অধিকার দেওয়া হচ্ছে।’’ তৃণমূলের সৌগত রায়ও ওই বিলের বিরুদ্ধে সরব হয়ে বলেন, ‘‘আইনের মূল প্রতিপাদ্য হল যত ক্ষণ না দোষ প্রমাণিত হচ্ছে তত ক্ষণ কোনও অভিযুক্ত দোষী নন। ১৯২০ সাল থেকে একটি আইন চালু রয়েছে। হঠাৎ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মনে হল আঙুলের ছাপ, চোখের মণির ফোটো ও বায়োলজিক্যাল নমুনা সংগ্রহ করতে হবে। কেন? দেশে কি হঠাৎ অপরাধ বেড়ে গিয়েছে?’’

গোটা বিরোধী শিবির ওই বিল পেশের বিরোধিতা করে ভোটাভুটি চায়। স্পিকার ওম বিড়লা ভোটের নির্দেশ দিলে সরকারের পক্ষে পড়ে ১২০ ভোট। বিরুদ্ধে ভোট পড়ে ৫৮টি। তার পরেই লোকসভায় বিলটি পেশ করেন টেনি। তবে আজ লোকসভায় বিলটি কেবল পেশ হয়েছে। ওই বিল সংক্রান্ত মূল বিতর্ক এখনও শুরু হয়নি। বিতর্কের শেষে ওই বিলটি পাশ হলে বাতিল হয়ে যাবে ব্রিটিশদের তৈরি ‘আইডেন্টিফিকেশন অব প্রিজ়নার্স অ্যাক্ট, ১৯২০’’।

Criminal Bill Lok Sabha

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।