Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪
Auto Raja

Criminal Auto Raja: চুরি-ডাকাতিতে সিদ্ধহস্ত, সেই কুখ্যাত দুষ্কৃতী অটো রাজাই এখন মানবিকতার উদাহরণ

মায়ের মঙ্গলসূত্র চুরি করা, বাবার পকেট কাটা, এ ভাবে বাড়ি থেকে টাকা হাতিয়েই নিজের চাহিদা মেটাতে সিদ্ধহস্তও হয়ে উঠেছিলেন ক্রমশ।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৫ অক্টোবর ২০২১ ১৪:৪৩
Share: Save:
০১ ১০
ছোট থেকেই অপরাধমূলক কাজে এক রকম আসক্তই হয়ে পড়েছিলেন। চুরি, ছিনতাই, মারপিট এ সব ছিল বাঁ হাতের খেলা, তাঁর ভালবাসা। আর সেই ভালবাসার সূত্রপাত হয়েছিল নিজের পরিবার থেকেই। মায়ের মঙ্গলসূত্র চুরি করা, বাবার পকেট কাটা, এ ভাবে বাড়ি থেকে টাকা হাতিয়েই নিজের চাহিদা মেটাতে সিদ্ধহস্তও হয়ে উঠেছিলেন ক্রমশ। যত সময় এগিয়েছে সেই ‘শিল্পকলা’ বাড়ির সীমানা ছাড়িয়ে ক্রমে বাইরেও ছড়িয়ে ফেলেছিলেন তিনি।

ছোট থেকেই অপরাধমূলক কাজে এক রকম আসক্তই হয়ে পড়েছিলেন। চুরি, ছিনতাই, মারপিট এ সব ছিল বাঁ হাতের খেলা, তাঁর ভালবাসা। আর সেই ভালবাসার সূত্রপাত হয়েছিল নিজের পরিবার থেকেই। মায়ের মঙ্গলসূত্র চুরি করা, বাবার পকেট কাটা, এ ভাবে বাড়ি থেকে টাকা হাতিয়েই নিজের চাহিদা মেটাতে সিদ্ধহস্তও হয়ে উঠেছিলেন ক্রমশ। যত সময় এগিয়েছে সেই ‘শিল্পকলা’ বাড়ির সীমানা ছাড়িয়ে ক্রমে বাইরেও ছড়িয়ে ফেলেছিলেন তিনি।

০২ ১০
স্কুলে সহপাঠীদের কখনও ভয় দেখিয়ে, কখনও মারধর করে টাকা হাতিয়ে নিতেন। সহপাঠীদের থেকে টাকা না পেলে ছেলেমেয়েদের মারধরের হুমকি থেকে নিস্তার পেতেন না অভিভাবকেরাও। পরবর্তীকালে এলাকার কুখ্যাত দুষ্কৃতী হিসাবে চিহ্নিত হয়ে যান তিনি। সমাজবিরোধী কাজে অর্থ উপার্জনের নেশায় বুঁদ হয়ে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সারা জীবন মা-বাবা হাজার বুঝিয়েও যে পথে আনতে পারেননি তাঁকে, মাত্র ৩০ দিনের কারাবাসই সে পথে নিয়ে গেল তাঁকে।

স্কুলে সহপাঠীদের কখনও ভয় দেখিয়ে, কখনও মারধর করে টাকা হাতিয়ে নিতেন। সহপাঠীদের থেকে টাকা না পেলে ছেলেমেয়েদের মারধরের হুমকি থেকে নিস্তার পেতেন না অভিভাবকেরাও। পরবর্তীকালে এলাকার কুখ্যাত দুষ্কৃতী হিসাবে চিহ্নিত হয়ে যান তিনি। সমাজবিরোধী কাজে অর্থ উপার্জনের নেশায় বুঁদ হয়ে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সারা জীবন মা-বাবা হাজার বুঝিয়েও যে পথে আনতে পারেননি তাঁকে, মাত্র ৩০ দিনের কারাবাসই সে পথে নিয়ে গেল তাঁকে।

০৩ ১০
এক কালের কুখ্যাত দুষ্কৃতী রাজা এখন হাজার হাজার দুঃস্থ লোকের মনের মানুষ। সারা ভারতবাসীর কাছে তিনি অটো রাজা নামে পরিচিত। তাঁর পরিবর্তন দেখে বিস্মিত হন মানুষজন। নতুন প্রজন্মের কাছে তিনি ‘মানুষ’ হয়ে ওঠার উদাহরণ।

এক কালের কুখ্যাত দুষ্কৃতী রাজা এখন হাজার হাজার দুঃস্থ লোকের মনের মানুষ। সারা ভারতবাসীর কাছে তিনি অটো রাজা নামে পরিচিত। তাঁর পরিবর্তন দেখে বিস্মিত হন মানুষজন। নতুন প্রজন্মের কাছে তিনি ‘মানুষ’ হয়ে ওঠার উদাহরণ।

০৪ ১০
উত্তর তামিলনাড়ুর বানিয়াম্বাড়িতে জন্ম তাঁর। মা-বাবা ভালবেসে নাম রেখেছিলেন থমাস রাজা। কিন্তু চুরির নেশা তাঁকে ক্রমশ মা-বাবার থেকে দূরে সরিয়ে নিয়ে যায়। পাড়া-প্রতিবেশীদের, ছেলের স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের, ছেলের সহপাঠীদের, অভিভাবকদের অভিযোগ শুনতে শুনতে ছেলের কৃতকর্মে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিলেন তাঁরা। সহ্যের সীমা পেরিয়ে গেলে একদিন রাজাকে বাড়ি থেকেই বার করে দেন তাঁরা। তাতে যেন শাপে বর হয়েছিল রাজার। মা-বাবার ছত্রছায়া থেকে মুক্ত হয়ে আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছিলেন তিনি।

উত্তর তামিলনাড়ুর বানিয়াম্বাড়িতে জন্ম তাঁর। মা-বাবা ভালবেসে নাম রেখেছিলেন থমাস রাজা। কিন্তু চুরির নেশা তাঁকে ক্রমশ মা-বাবার থেকে দূরে সরিয়ে নিয়ে যায়। পাড়া-প্রতিবেশীদের, ছেলের স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের, ছেলের সহপাঠীদের, অভিভাবকদের অভিযোগ শুনতে শুনতে ছেলের কৃতকর্মে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিলেন তাঁরা। সহ্যের সীমা পেরিয়ে গেলে একদিন রাজাকে বাড়ি থেকেই বার করে দেন তাঁরা। তাতে যেন শাপে বর হয়েছিল রাজার। মা-বাবার ছত্রছায়া থেকে মুক্ত হয়ে আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছিলেন তিনি।

০৫ ১০
রাজা তখন ১৬ বছরের কিশোর। রাস্তায় রাস্তায় অসামাজিক কাজকর্ম করে বেড়াতে শুরু করেছিলেন। বিভিন্ন দুষ্কৃতীদের দলেও নাম লিখিয়েছিলেন তিনি। ওই বেপরোয়া ভাবই একদিন কাল হয়ে উঠেছিল তাঁর। শেষে পুলিশের হাতে ধরা পড়ে যান রাজা।

রাজা তখন ১৬ বছরের কিশোর। রাস্তায় রাস্তায় অসামাজিক কাজকর্ম করে বেড়াতে শুরু করেছিলেন। বিভিন্ন দুষ্কৃতীদের দলেও নাম লিখিয়েছিলেন তিনি। ওই বেপরোয়া ভাবই একদিন কাল হয়ে উঠেছিল তাঁর। শেষে পুলিশের হাতে ধরা পড়ে যান রাজা।

০৬ ১০
চেন্নাইয়ের কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে ৩০ দিন কাটাতে হয় তাঁকে। এই ৩০ দিনই হয়ে উঠেছিল তাঁর জীবনের সন্ধিক্ষণ। গারদে কাটানো দিনগুলি তাঁর কাছে বিভীষিকার মতো হয়ে উঠেছিল। সংশোধনাগারে থাকাকালীনই সুস্থ জীবনযাপনের জন্য মনস্থির করে ফেলেছিলেন।

চেন্নাইয়ের কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে ৩০ দিন কাটাতে হয় তাঁকে। এই ৩০ দিনই হয়ে উঠেছিল তাঁর জীবনের সন্ধিক্ষণ। গারদে কাটানো দিনগুলি তাঁর কাছে বিভীষিকার মতো হয়ে উঠেছিল। সংশোধনাগারে থাকাকালীনই সুস্থ জীবনযাপনের জন্য মনস্থির করে ফেলেছিলেন।

০৭ ১০
সংশোধনাগার থেকে ছাড়া পেয়ে নিজের জমানো টাকা দিয়ে একটি অটো কিনেছিলেন রাজা। সেই থেকেই তাঁর নাম হয় অটো রাজা। তবে অটো রাজা হিসাবে পরিচিতি পেয়েছেন আরও কিছু পরে। রাস্তায় পড়ে থাকা দুঃস্থদের পাশে দাঁড়ানো শুরু করার পর থেকে।

সংশোধনাগার থেকে ছাড়া পেয়ে নিজের জমানো টাকা দিয়ে একটি অটো কিনেছিলেন রাজা। সেই থেকেই তাঁর নাম হয় অটো রাজা। তবে অটো রাজা হিসাবে পরিচিতি পেয়েছেন আরও কিছু পরে। রাস্তায় পড়ে থাকা দুঃস্থদের পাশে দাঁড়ানো শুরু করার পর থেকে।

০৮ ১০
পরিবর্তিত রাজা অত্যন্ত মানবিক হয়ে ওঠেন। রাস্তার পাশে মানসিক ভারসাম্যহীন মানুষ, না খেতে পেয়ে শীর্ণকায় কাউকে দেখতে পেলেই বুকের ভিতরে যেন ছ্যাঁকা লাগত তাঁর। অটো থামিয়ে রাস্তার পাশ থেকে উদ্ধার করে নিজের বাড়িতে আশ্রয় দিতেন। অটো চালিয়ে যা রোজগার করতেন সেটা দিয়েই তাঁদের পেট চালাতেন। অন্তত ২০ বছর ধরে এ ভাবেই দুঃস্থদের পাশে দাঁড়িয়ে আসছেন তিনি। এই ২০ বছর ধরে অন্তত ১৯ হাজার দুঃস্থের ভরণপোষণের দায়িত্ব তুলে নিয়েছেন একার কাঁধেই।

পরিবর্তিত রাজা অত্যন্ত মানবিক হয়ে ওঠেন। রাস্তার পাশে মানসিক ভারসাম্যহীন মানুষ, না খেতে পেয়ে শীর্ণকায় কাউকে দেখতে পেলেই বুকের ভিতরে যেন ছ্যাঁকা লাগত তাঁর। অটো থামিয়ে রাস্তার পাশ থেকে উদ্ধার করে নিজের বাড়িতে আশ্রয় দিতেন। অটো চালিয়ে যা রোজগার করতেন সেটা দিয়েই তাঁদের পেট চালাতেন। অন্তত ২০ বছর ধরে এ ভাবেই দুঃস্থদের পাশে দাঁড়িয়ে আসছেন তিনি। এই ২০ বছর ধরে অন্তত ১৯ হাজার দুঃস্থের ভরণপোষণের দায়িত্ব তুলে নিয়েছেন একার কাঁধেই।

০৯ ১০
প্রথম দিকে নিজের ঘরেই আশ্রয় দিতেন তিনি। পরবর্তীকালে তাঁকে আলাদা করে একটি ঘর ভাড়া নিতে হয়েছে। অটো রাজা নিজের সমস্ত উপার্জন দিয়েই দুঃস্থদের পাশে দাঁড়ান।

প্রথম দিকে নিজের ঘরেই আশ্রয় দিতেন তিনি। পরবর্তীকালে তাঁকে আলাদা করে একটি ঘর ভাড়া নিতে হয়েছে। অটো রাজা নিজের সমস্ত উপার্জন দিয়েই দুঃস্থদের পাশে দাঁড়ান।

১০ ১০
অটো রাজার এই কাজের কথা ছড়িয়ে পড়তে সময় লাগেনি। সারা দেশেই তিনি প্রশংসিত হয়েছেন। জনহিতকর কাজের জন্য একাধিক পুরস্কারও পেয়েছেন। প্রচুর তারকার সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ পেয়েছেন। বিভিন্ন মহল থেকে তাঁর কাছে এখন অনুদানও পৌঁছে যায়।

অটো রাজার এই কাজের কথা ছড়িয়ে পড়তে সময় লাগেনি। সারা দেশেই তিনি প্রশংসিত হয়েছেন। জনহিতকর কাজের জন্য একাধিক পুরস্কারও পেয়েছেন। প্রচুর তারকার সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ পেয়েছেন। বিভিন্ন মহল থেকে তাঁর কাছে এখন অনুদানও পৌঁছে যায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy