দলীয় দফতরে করোনা কেন্দ্র। বিশাখাপত্তনমে। নিজস্ব চিত্র
সে দিনও ছিল পার্টি অফিস। প্রায় রাতারাতিই সেই বাড়ি এখন করোনা আইসোলেশন সেন্টার! পার্টি অফিসের চেয়ার-টেবিল সরিয়ে করোনা রোগীদের নিভৃতবাস ও চিকিৎসার জন্য শয্যা পেতে দিয়েছেন সিপিএমের নেতা-কর্মীরা।
চালু হয়ে গেলে বিশাখাপত্তনমের সিপিএম জেলা কমিটি দফতরই হতে চলেছে প্রথম রাজনৈতিক দলের কার্যালয়, যাকে আপৎকালীন পরিস্থিতিতে কোভিড সেন্টারে বদলে নেওয়া হয়েছে। আনুষ্ঠানিক ভাবে ওই কেন্দ্র স্বাধীনতা দিবসে খুলে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছিল সিপিএম। কিন্তু জেলা প্রশাসনের প্রয়োজনীয় অনুমতি না মেলায় সব বন্দোবস্ত করেও কাজ শুরু আপাতত থমকে। প্রশাসন সূত্রে বলা হয়েছে, কেন্দ্র পর্যবেক্ষণ করে, বিশেষত অগ্নি-সুরক্ষার ব্যবস্থা দেখে নিয়ে শীঘ্রই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
দক্ষিণ ভারতে পিঠোপিঠি দুই রাজ্য অন্ধ্রপ্রদেশ এবং তেলঙ্গানায় করোনা সংক্রমণের রেখচিত্র ক্রমশই ঊর্ধ্বমুখী। পরিস্থিতি সামাল দিতে দুই রাজ্যের নানা শহরে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে বেসরকারি কোভিড সেন্টারের সংখ্যা। সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, হায়দরাবাদে কয়েকটি পাঁচ তারা-সহ ৩৬টি হোটেল এখন কোভিড সেন্টার। বিজয়ওয়াড়ায় ৪৩টি, বিশাখাপত্তনমে ছোট-বড় মিলে ৩০টি হোটেল এখন ব্যবহৃত হচ্ছে করোনা রোগীদের নিভৃতবাস ও স্বল্প চিকিৎসার জন্য। বেসরকারি হাসপাতালগুলিকে হোটেল ‘লিজ’ দিয়ে উপার্জনও করছেন মালিকেরা। বিজয়ওয়াড়ায় এমন একটি সেন্টারেই আগুন লেগে গত সপ্তাহে ১০ জন রোগীর মৃত্যুও হয়েছে। এই বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ডের মাঝেই রাজনৈতিক দল হিসেবে সিপিএম তাদের জেলা দফতরকে কোভিড সেন্টার করছে বিনা পয়সায় এবং স্বেচ্ছাশ্রমে।
সুন্দরাইয়া, বাসবপুন্নাইয়াদের রাজ্যে বিশাখাপত্তনম জেলার ভারপ্রাপ্ত দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য নরসিংহ রাওয়ের বক্তব্য, ‘‘করোনার জন্য স্বাভাবিক রাজনৈতিক কাজকর্ম বন্ধ। পার্টি অফিসও বেশির ভাগই বন্ধ রাখতে হচ্ছে। যে ভাবে সংক্রমণ বেড়ে চলেছে, তার প্রেক্ষিতে সাধারণ মানুষের সুরাহার জন্য আমরা আমাদের জেলা কার্যালয়কেই কোভিড সেন্টারে রূপান্তরিত করেছি। প্রশাসন বললেই সেন্টার খুলে দেওয়া হবে।’’ সিপিএম সূত্রের বক্তব্য, বিশাখাপত্তনম শহরে পিতাপুরমের ওই কার্যালয়ে আপাতত ১২টি শয্যার বন্দোবস্ত করা হয়েছে। স্বেচ্ছাসেবক এবং জনস্বাস্থ্য সংক্রান্ত কমিটির মাধ্যমে চিকিৎসকের ব্যবস্থাও করা হয়েছে দলীয় উদ্যোগে।
বাংলায় সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র বলে রখেছেন, সরকার স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী গড়লে তাঁদের দলের থেকে লোক নিতে পারে। প্রয়োজনে কোভিড সেন্টারের কাজে সহায়তা করতেও তাঁরা তৈরি। কেরলের কাসারগোড়ে চার মাসে ৫৪১ শয্যার কোভিড হাসপাতাল তৈরি হয়েছে। কিন্তু অন্ধ্রে সিপিএম সরকারে তো দূর স্থান, প্রধান বিরোধী দলও নয়। সেখানে এমন উদ্যোগকে বাড়তি কৃতিত্ব দিচ্ছেন বাম নেতৃত্ব। ডিওয়াইএফআইয়ের সর্বভারতীয় সভাপতি পি এ মহম্মদ রিয়াস যেমন বলছেন, ‘‘অন্ধ্রের কমরেডরা যা করছেন, সেটা দৃষ্টান্তমূলক কাজ। দায়িত্বশীল রাজনীতিতে যাঁরা বিশ্বাস করেন, তাঁদের এই দৃষ্টান্ত অনুসরণ করা উচিত।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy