এ বার দুর্নীতির অভিযোগ উঠল শাসক ফ্রন্ট এলডিএফের আহ্বায়ক এবং সিপিএমের বর্ষীয়ান নেতা ই পি জয়রাজনের বিরুদ্ধে। —ফাইল চিত্র।
নজির গড়ে পরপর দু’বার ক্ষমতায় ফেরার পর থেকে বিতর্ক যেন পিছু ছাড়ছে না পিনারাই বিজয়নের রাজ্যের সিপিএমকে! এ বার শাসক ফ্রন্ট এলডিএফের আহ্বায়ক এবং সিপিএমের বর্ষীয়ান নেতা ই পি জয়রাজনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠল দলের ভিতর থেকেই। সিপিএম সূত্রের খবর, রাজ্য কমিটিতে ওঠা অভিযোগের প্রেক্ষিতে গড়া হতে চলেছে তদন্ত কমিশন। তবে জয়রাজন যে হেতু কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য, তাই চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের আগে দলের পলিটবুরোর অনুমোদন লাগবে। মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে বিজয়নের প্রথম ইনিংসে স্বজনপোষণ সংক্রান্ত অভিযোগে শিল্পমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিতে হয়েছিল এই জয়রাজনকে। পরে অবশ্য তদন্তে মুক্ত হয়ে তিনি মন্ত্রিসভায় ফিরেছিলেন।
কান্নুরে গত এপ্রিলে সিপিএমের পার্টি কংগ্রেস থেকে দলের পলিটবুরোয় জায়গা পেয়েছিলেন এ বিজয়রাঘবন। দলের কাজে তিনি দিল্লিতে চলে যাওয়ায় এলডিএফ আহ্বায়কের দায়িত্ব পান জয়রাজন। দলীয় সূত্রের খবর, কেরল সিপিএমের রাজ্য কমিটির সাম্প্রতিক দু’দিনের বৈঠকে তাঁর নাম করেই সরব হয়েছেন আর এক জয়রাজন। রাজ্য কমিটির সদস্য পি জয়রাজনের অভিযোগ, কান্নুর জেলার আন্তুর পঞ্চায়েত এলাকায় এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে আয়ুর্বেদিক রিসর্ট চালাচ্ছেন ই পি জয়রাজনের ছেলে জয়সন ও তাঁর স্ত্রী পি কে ইন্দিরা। জয়সনের কাছেই মূলধনী শেয়ার রয়েছে ১০ কোটি টাকার। রিসর্টের শেয়ার দেওয়ার নাম করে এলাকায় হাজারখানেক মানুষের কাছ থেকে অন্তত ৩০ কোটি টাকা তোলা হয়েছে বলে পি জয়রাজনের অভিযোগ। তাঁর ওই বক্তব্যের সময়ে মুখ্যমন্ত্রী বিজয়ন এবং কেরল সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক এম ভি গোবিন্দন বৈঠকে ছিলেন। তবে অভিযোগ যাঁর বিরুদ্ধে, সেই ই পি জয়রাজন বৈঠকে ছিলেন না।
সিপিএম সূত্রের খবর, রাজ্য সম্পাদক গোবিন্দন জানতে চেয়েছেন, পি জয়রাজন লিখিত আকারে অভিযোগ জানাতে চান কি না। অভিযোগকারী জয়রাজনের বক্তব্য, ‘‘মূল যে নীতি-আদর্শের ভিত্তিতে দল চলে, তা থেকে কোনও নেতার বিচ্যুতিই মেনে নেওয়া যায় না। যা জানানোর, দলকেই জানিয়েছি।’’ গত অক্টোবরে কোডিয়ারি বালকৃষ্ণনের মৃত্যুর পরে রাজ্য সম্পাদকের দায়িত্ব নিয়েই গোবিন্দন বলেছিলেন, দলের কোনও নেতা বা তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে অনৈতিক কাজ, দুর্নীতি, স্বজনপোষণের অভিযোগ গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে। অসদাচরণ, ভাবমূর্চির সঙ্গে আপস বরদাস্ত করা হবে না। পি জয়রাজন লিখিত বক্তব্য জমা দিলে তদন্ত কমিশন গড়া কাজ এগোবে বলে দলীয় সূত্রের ইঙ্গিত।
যে রিসর্ট ঘিরে অভিযোগ, তার নির্মাণের অনুমতি দিয়েছিল আন্তুরের পঞ্চায়েত। কান্নুর এমনিতেই সিপিএমের ‘দুর্গ’, ওই পঞ্চায়েতে আবার অধিকাংশ আসন সিপিএম জিতেছিল বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়। আর সেই পঞ্চায়েতের সভানেত্রী পি কে শ্যামলা সিপিএম রাজ্য সম্পাদকের স্ত্রী। সিপিএম সূত্রের ব্যাখ্যা, নিজের দিকে আঙুল ওঠা আটকাতেই এই অভিযোগে দ্রুত পদক্ষেপ করতে চাইছেন গোবিন্দন। অভিযুক্ত ই পি জয়রাজনের বক্তব্য অবশ্য এখনও জানা যায়নি। মুখ্যমন্ত্রী বিজয়ন, রাজ্য সম্পাদক গোবিন্দন, সংশ্লিষ্ট দুই জয়রাজন— সকলেই কান্নুর জেলার। তিনি ‘সিনিয়র’ হওয়া সত্ত্বেও গোবিন্দন রাজ্য সম্পাদকের দায়িত্ব পাওয়ায় ই পি ক্ষুণ্ণ হয়েছিলেন বলে দলের একটি সূত্রের খবর। তার পর থেকেই শারীরিক অসুস্থতার কারণে দলের কাজ থেকে ছুটি নিয়ে রয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy