Advertisement
২২ ডিসেম্বর ২০২৪
Pinarayi Vijayan

CPIM: ক্ষুব্ধ দল, বিজয়নের মন্ত্রীর  ইস্তফা পলিটবুরোর চাপেই

সংবিধান সম্পর্কে বিতর্কিত মন্তব্য করার জেরে কেরলের মন্ত্রিসভা থেকে ইস্তফা দিয়েছেন চেরিয়ান।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

সন্দীপন চক্রবর্তী
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ জুলাই ২০২২ ০৬:৪৮
Share: Save:

শিবরাত্রির সলতের মতো একটি রাজ্যেই বাম-শাসিত সরকার রয়েছে এখন। সেই সরকারও গত বছর ক্ষমতায় ফিরেছে পাঁচ বছর অন্তর সরকার বদলানোর রেওয়াজ ভেঙে। কিন্তু কেরলে পিনারাই বিজয়নের দ্বিতীয় ইনিংস ক্রমাগতই অস্বস্তিতে ফেলছে সিপিএমকে! যার সর্বশেষ দৃষ্টান্ত হয়েছে বিজয়নের মন্ত্রিসভার সদস্য সাজ়ি চেরিয়ানের ইস্তফা। পরের পর ঘটনায় বিড়ম্বনার মুখোমুখি হওয়ায় কেরল রাজ্য নেতৃত্বের প্রতি দলে ক্ষোভ গোপন করছেন না সিপিএমের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।

সংবিধান সম্পর্কে বিতর্কিত মন্তব্য করার জেরে কেরলের মন্ত্রিসভা থেকে ইস্তফা দিয়েছেন চেরিয়ান। সিপিএম সূত্রের খবর, রাজ্যের মৎস্য, যুব ও সংস্কৃতি দফতরের মন্ত্রী চেরিয়ানকে পদত্যাগ করতে হয়েছে দলের পলিটবুরোর চাপে। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কড়া অবস্থানের মুখে কেরল সিপিএমের রাজ্য নেতৃত্বেরও কেউ চেরিয়ানের পক্ষে দাঁড়াতে যাননি। আপাতত তাঁকে ইস্তফা দিইয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করলেও ওয়েনাড়ে রাহুল গান্ধীর সাংসদ কার্যালয়ে হামলার পরেপরেই এমন ‘অবাঞ্ছিত ঘটনা’য় সীতারাম ইয়েচুরিরা যথেষ্টই ক্ষুব্ধ। দক্ষিণী ওই রাজ্যে একটার পর একটা বিতর্কিত কাণ্ডের রেশ জাতীয় স্তরে এসে পড়ে দলের জন্য প্রবল অস্বস্তির কারণ হচ্ছে, এই তথ্য স্মরণ করিয়ে দিয়ে কেরলের সিপিএম নেতৃত্বকে সতর্ক থাকতে বলেছেন শীর্ষ নেতৃত্ব।

পলিটবুরোর এক সদস্যের কথায়, ‘‘দ্বিতীয় বারের জন্য কেরলে ক্ষমতায় ফেরার পরে কিছু না কিছু বিতর্ক হয়েই চলেছে। দল ও সরকার পরিচালনার ক্ষেত্রে আরও সতর্কতার দরকার। আরএসএস-বিজেপির বিরুদ্ধে এমনিতেই কঠিন লড়াই লড়তে হচ্ছে জাতীয় স্তরে। তার উপরে নিজেদের ভুলের জন্য বিজেপি এবং কংগ্রেসের হাতেও অস্ত্র তুলে দেওয়া অর্থহীন!’’

মন্ত্রী চেরিয়ান মন্তব্য করেছিলেন, গণতান্ত্রিক ও ধর্মনিরপেক্ষ মূল্যবোধের সঠিক মর্যাদা সংবিধানে দেওয়া হয়নি। সংবিধান শ্রমজীবী শ্রেণির পক্ষে নয় বলেও মত দিয়েছিলেন তিনি। সঙ্গে সঙ্গেই বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়। বিরোধী দল কংগ্রেস ও বিজেপি চেরিয়ানের ওই বক্তব্যকে হাতিয়ার করে আসরে নেমে পড়ে। দেশের সংবিধানকে বাম দলগুলি এই দৃষ্টিভঙ্গিতেই দেখে কি না, সেই প্রশ্ন তুলে ইয়েচুরিদের জবাবদিহি দাবি করেন কংগ্রেস নেতৃত্ব। বিতর্কের আঁচ পেয়ে দিল্লিতে পলিটবুরোর ঘরোয়া বৈঠকে বসেছিলেন ইয়েচুরিরা। সেখানেই কথা বলে তাঁরা কেরলের রাজ্য নেতৃত্বকে জানিয়ে দেন, চেরিয়ানের পদত্যাগ চাই। আপাতত মন্ত্রিত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়াই তাঁর ‘শাস্তি’। এই ক্ষেত্রে ইয়েচুরি, প্রকাশ কারাটদের মধ্যে কারওরই কোনও ভিন্ন মত ছিল না। বক্তব্যের যে ব্যাখ্যা চেরিয়ান দিয়েছিলেন, ইয়েচুরিরা কেউই তা গ্রহণ করতে রাজি হননি। তাঁরাই দলের রাজ্য নেতাদের জানিয়ে দেন, চেরিয়ানের বক্তব্য নিয়ে আদালতে যে মামলা হয়েছে, তার রায় বেরোলে তখন যা হবে, দেখা যাবে। এখন তিনি আগে পদত্যাগ করুন।

চেরিয়ান অবশ্য ইস্তফা দেওয়ার পরে বলেছেন, তিনি নিজেই পদত্যাগ করেছেন। অস্বস্তি সামাল দিতে ব্যস্ত সিপিএম নেতারা আর তার উপরে মন্তব্য করতে যাননি। তবে দাবি উঠেছিল, সংবিধানকে ‘অমর্যাদা’ করার দায়ে চেরিয়ানকে বিধায়ক-পদও ছাড়তে হবে। সিপিএম এখনও তাঁকে তেমন নির্দেশ দেয়নি। সিপিএম নেতৃত্বের মতে, চেরিয়ান অবশ্যই ভুল করেছেন কিন্তু সংবিধানের শপথ ভঙ্গ করেছেন বলে মনে হয় না। এই অধ্যায়ের বাকিটা স্পষ্ট হবে আইনি প্রশ্নের নিষ্পত্তি হলে।

অন্য বিষয়গুলি:

Pinarayi Vijayan CPIM kerala
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy