পাত্রীর বাবা সাভিয়ো ফিগেরিদো।
দুই মেয়ের বাবা তিনি। সৎপাত্র খুঁজতে এ বার বিজ্ঞাপন ছাপিয়েছেন বাবা। তাঁর ন্যূনতম দাবি— হবু জামাইয়ের কোভিড টিকা দু’টি নেওয়া থাক।
বছর পঁয়তাল্লিশের সাভিয়ো ফিগেরিদো গোয়ার বাসিন্দা। গত ৪ জুন তিনি নিজের ফেসবুক দেওয়াল থেকে পাত্র চেয়ে বিজ্ঞাপন দেন। যার মোদ্দা বয়ান— ২৪ বছর বয়সি রোমান, ক্যাথলিক পাত্রীর জন্য উপযুক্ত পাত্র চাই। পাত্রের কোভিশিল্ডের দু’টি ডোজ় নেওয়া থাকতে হবে। পাত্রীরও এই টিকার দু’টি ডোজ় নেওয়া রয়েছে।
সমাজমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে ওই পোস্ট। কোনও সংবাদপত্রে নয়, একটি অ্যাপের মাধ্যমে নিজস্ব বয়ানকে খবরের কাগজের বিজ্ঞাপনের এফেক্ট দিয়ে পোস্ট করেছেন সাভিয়ো। উদ্দেশ্য— সকলের মধ্যে কোভিড টিকা নেওয়ার গুরুত্ব প্রচার করা। কংগ্রেস সাংসদ শশী তারুরও এ দিন ওই পোস্ট টুইট করে লেখেন, ‘ভ্যাকসিন-প্রাপ্ত কন্যে ভ্যাকসিন-প্রাপ্ত পাত্র চাইছেন! কোনও সন্দেহ নেই, বিয়ের পছন্দের উপহার হতে চলেছে একটা বুস্টার শট!? এটাই কি আমাদের নিউ নর্ম্যাল হতে চলেছে?’ পোস্টের শুরুতে সাভিয়ো-ও লিখেছেন— ‘দ্য ফিউচার অব ম্যাট্রিমোনিয়ালস’!
মঙ্গলবার সকালে গোয়ার বাড়ি থেকে ফোনে সাভিয়ো বলেন, ‘‘আমি প্রথমে পোস্ট দিই ফেসবুকে। গত তিন-চার দিনে শ্রীলঙ্কা, আমেরিকা থেকেও ফোন পেয়েছি। পাত্রেরা যোগাযোগ করে জানাচ্ছেন, তাঁদের কোভিড টিকার ডোজ় সম্পূর্ণ হয়েছে, আমার মেয়েকে বিয়ে করতে চান। বেশ মজা লাগছে।’’
কেন এমন বিজ্ঞাপন? সাভিয়ো জানালেন, তিনি ফার্মাসিস্ট, স্থানীয় এলাকায় ওষুধের দোকান রয়েছে। বলেন, ‘‘করোনা-মৃত্যুর থেকে মুক্তির উপায় গণ-টিকাকরণ। কিন্তু লোকের মনে এখনও ভ্যাকসিন নেওয়া নিয়ে ভয় কাজ করছে। আমার দুই বন্ধুকে কোভিডের কারণে কিছু দিন আগে হারিয়েছি। বার বার ওঁদের বলেছিলাম টিকা নিতে, কিন্তু ওঁরা কথা শোনেননি। তাই ভ্যাকসিন নেওয়ার জন্য প্রচার করছি।’’ পাত্রী কী বলছেন? বাবার জবাব— ‘‘মেয়ে তো হেসেই খুন! বলছে— বাবা, তুমি পারো বটে!’’
এই প্রসঙ্গে মন-সমাজকর্মী মোহিত রণদীপ বলছেন, ‘‘উদ্যোগ ভাল। তবে জোর করে টিকা দেওয়ানোর চেয়ে কেন টিকা নেওয়া জরুরি— সেটা সকলে বুঝুক। কারণ ভ্যাকসিন নিয়ে এখনও অনেকের মনের মধ্যে সংশয় রয়েছে।’’
তবে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসক অরুণাংশু তালুকদারের মতে, ‘‘বিজ্ঞাপনের বয়ান শুনে হচ্ছে, ভদ্রলোক এটা শর্ত দিচ্ছেন, আবেদন নয়। এই ভাবে করোনা টিকা নেওয়ার জন্য কেউ-ই শর্ত দিতে পারেন না। সরকার থেকেও কিন্তু সকলের কাছে ভ্যাকসিন নেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে, শর্ত দেওয়া হয়নি। কিছু বিশেষ ক্ষেত্রে বিষয়টা আলাদা। আমরা যাঁরা মেডিক্যাল ফিল্ডের সঙ্গে যুক্ত, সুপার স্প্রেডারের ভূমিকায় রয়েছি, তাঁদের ভ্যাকসিন নিতে হচ্ছে।’’
তবে গল্পের মোড়কে রয়েছে আরও চমক। সব শেষে, বিজ্ঞাপনদাতা বাবা জানাচ্ছেন, বছর বাইশের কন্যার বয়ফ্রেন্ড রয়েছে। ফলে, পাত্ররা যতই ফোন করুন না কেন, আপাতত তাঁদের কারও সঙ্গেই মেয়ের বিয়ে হচ্ছে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy