জটিল হচ্ছে দিল্লির পরিস্থিতি। ছবি—এএফপি।
ক্রমেই জটিল হচ্ছে রাজধানীর পরিস্থিতি।
দেশের অধিকাংশ রাজ্যে করোনা গ্রাফ যখন নিম্নমুখী তখন ঠিক বিপরীত চিত্র ধরা পড়ছে দেশের রাজধানীতে। করোনা সংক্রমণ যেমন ঊর্ধ্বমুখী, তেমনই কোভিডের কারণে মৃত্যুও বাড়ছে দিল্লিতে। বুধবার দৈনিক মৃত্যু সংখ্যায় তৈরি হয়েছে নয়া নজির। পরিস্থিতি আরও জটিল হচ্ছে, দিল্লির দূষণ এবং ঠান্ডা পাল্লা দিয়ে বেড়ে চলায়। সব মিলিয়ে, দেশের রাজধানীর পরিস্থিতি এখন যথেষ্ট ভয়াবহ।
নভেম্বরের শুরু থেকেই দিল্লির দৈনিক সংক্রমণ দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ। গত ২৪ ঘণ্টায় সেখানে ৭ হাজার ৪৮৬ জন নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। যার জেরে সেখানে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৫ লক্ষ ছাড়িয়েছে। এর মধ্যে শেষ এক লক্ষ কোভিড পজিটিভ রোগী ধরা পড়েছে গত ১৫ দিনে। দেশের বড় শহরগুলির মধ্যেও সবথেকে বেশি আক্রান্ত রাজধানীতেই।
দেশের মধ্যে সবথেকে বেশি আক্রান্ত মহারাষ্ট্রে। সেই রাজ্যে মোট আক্রান্ত সাড়ে ১৭ লক্ষ ছাড়িয়েছে। মহারাষ্ট্রের মধ্যে মুম্বইয়ে আক্রান্ত সর্বাধিক। এই মুম্বই এবং দিল্লির জনসংখ্যা প্রায় কাছাকাছি। মুম্বইয়ে এখন অবধি মোট আক্রান্ত হয়েছেন ২ লক্ষ ৭০ হাজার জন। সেখানে দিল্লিতে মোট আক্রান্ত ৫ লক্ষ। অর্থাৎ দেশের একই জনসংখ্যার দুই শহরে দিল্লির মোট আক্রান্ত মুম্বইয়ের প্রায় দ্বিগুণ।
বিগত ২০ দিনেরও বেশি সময় ধরে আক্রান্ত বৃদ্ধি বাড়াচ্ছে রাজধানীর মৃত্যু সংখ্যাও। গত ২৪ ঘণ্টায় দিল্লিতে কোভিডে মৃত্যু হয়েছে ১৩১ জনের। যা গোটা করোনা-কালের মধ্যে সর্বোচ্চ। এক দিনে এত সংখ্যক মৃত্যু এর আগে দেখেনি রাজধানী। সেখানে করোনা এখন অবধি প্রাণ কেড়েছে ৭ হাজার ৯৪৩ জনের। মৃত্যু তালিকায় দেশের চতুর্থ স্থানে দিল্লি। মহারাষ্ট্র, কর্নাটক এবং তামিলনাড়ুর পরই। কিন্তু এ মাসের শুরু থেকেই এই ৩ রাজ্যে দৈনিক মৃত্যু গোটা করোনা কালের মধ্যে কম। কিন্তু রাজধানীর চিত্র সম্পূর্ণ বিপরীত।
করোনা রোগী বৃদ্ধি পাওয়াতে বিঘ্নিত হচ্ছে স্বাস্থ্য পরিষেবাও। অসুস্থ অনেকেই জায়গা পাচ্ছেন না হাসপাতালে। যার জেরে রোগীর পরিজনদের মধ্যে বাড়ছে ক্ষোভ। দিল্লির করোনা অ্যাপের পরিসংখ্যান জানাচ্ছে, সেখানকার হাসপাতালগুলিতে ভেন্টিলেশন সাপোর্ট যুক্ত আইসিইউ বেডের ৯২ শতাংশই ভর্তি। ভেন্টিলেশন সাপোর্ট ছাড়া আইসিইউ বেডের ৮৭ শতাংশই পূর্ণ।
আরও পড়ুন: দৈনিক সংক্রমণ বেড়ে ফের ৪৫ হাজার ছাড়াল, ২৪ ঘণ্টায় বাড়ল মৃত্যুও
করোনার এমন দাপটের পাশাপাশি দিল্লিবাসীর চিন্তা বাড়াচ্ছে দূষণ এবং ঠান্ডা। নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও দীপাবলির সময় বিভিন্ন জায়গায় পুড়েছে বাজি। সে সময় দিল্লির দূষণের মাত্রা হয়েছিল ভয়াবহ। এ বছর দীপাবলির সময় দিল্লির বাতাস ছিল গত ৪ বছরের মধ্যে সবথেকে খারাপ। যদিও এ সপ্তাহের শুরু হওয়া হাল্কা বৃষ্টি এবং হাওয়া সেই দূষণের মাত্রাকে কিছুটা হলেও কমিয়েছে। তবে এই হাওয়ার জেরে ঠান্ডা বাড়ছে রাজধানীতে। সোমবার দিল্লিতে ছিল এ মরসুমের এখনও অবধি সবথেকে শীতলতম দিন। মেঘের কারণে বুধ-বৃহস্পতিবার কিছুটা হলেও বেড়েছে সেখানকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। কিন্তু আবহাওয়া দফতর দিল্লিবাসীকে সতর্ক করে জানিয়েছে, আগামী দিনে ২-৩ দিনের মধ্যে সেখানকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নেমে যেতে পারে ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। করোনা, দূষণ এবং ঠান্ডার ত্রিফলা আক্রমণে বেসামাল দেশের রাজধানী।
আরও পড়ুন: বিহারে কংগ্রেস প্রচারে পাঠায়নি, অধীরকে তোপ সিব্বল শিবিরের
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy