প্রতীকী ছবি।
‘ওয়ান বটল হামিরা’।
‘টু বটল রয়্যাল আর্ম’।
বর্গাকার সাদা চিরকুট। তার উপরে কালো অক্ষরে লেখা এই কথাগুলো। হাতে লেখা চিরকুট নয়, ছাপানো কুপন। এই কুপন দেখালেই মিলবে মদ। যতগুলি বোতলের কথা লেখা রয়েছে, ততগুলিই মিলবে। যে ব্র্যান্ডের কথা লেখা রয়েছে, সেই ব্র্যান্ডই মিলবে।
যে কেউ কুপন ছাপিয়ে যাতে মদ নিতে না পারে, তার ব্যবস্থাও পাকা। তৈরি হয়ে গিয়েছে সিল-স্ট্যাম্প। সাদা চিরকুটে সিল থাকলে তবেই দেওয়া হবে মদের বোতল।
ভোটের পঞ্জাবে এখন এই সিল মারা কুপনেরই রমরমা। খোদ নির্বাচন কমিশনই জানাচ্ছে এ কথা। বিপুল পরিমাণ কুপন উদ্ধার করেছে কমিশন। উদ্ধার হয়েছে ১০ হাজার বোতল মদও। যে সে এলাকা থেকে আবার উদ্ধার হয়নি। মুখ্যমন্ত্রী তথা অকালি-বিজেপি জোটের মুখ প্রকাশ সিংহ এবং প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা কংগ্রেসের তরফে মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী অমরেন্দ্র সিংহ পরস্পরের বিরুদ্ধে যে কেন্দ্র থেকে লড়ছেন, সেই লাম্বির অদূরে একটি কটন মিল থেকেই এই বিপুল পরিমাণ মদ কমিশন বাজেয়াপ্ত করেছে।
ভোটারদের প্রলুব্ধ করতে বিভিন্ন রাজ্যেই যে নির্বাচনের আগে দেদার মদ বিলি চলে, তা কমিশনের অজানা নয়। পঞ্জাবেও যে হবে, তা কমিশন জানত। কিন্তু মদের রমরমা এমন সীমা ছাড়াবে, তা কমিশন আঁচ করেনি। মদের পাশাপাশি যে ভাবে ড্রাগের আদান-প্রদান চলছে দেদার, তাও কিছুটা অপ্রত্যাশিত ছিল কমিশনের কাছে। নজরদারি বেশ কিছু দিন ধরেই চলছে। কিন্তু কুপন ছাপিয়ে মদ বিলি করার এই কৌশল সামনে আসার পর কমিশনের কর্তারা বুঝতে পেরেছেন, এত দিন ধরে যে নজরদারি চলছিল, পঞ্জাবের জন্য তা যথেষ্ট নয়। পঞ্জাবের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক ভিকে সিংহ বলেছেন, ‘‘এই প্রথম বার কুপন ব্যবস্থা দেখলাম। বিষয়টা আমাদের একেবারেই জানা ছিল না। আমাদের কল সেন্টারে ফোন করে এক ব্যক্তি আমাদের খবরটা দেন।’’ সেই খবরের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়েই মদ ও মদের কুপন বাজেয়াপ্ত করেছে কমিশন। ৫৩৫৫ বোতল দেশি মদ, ১৩০৬ বোতল ভারতে তৈরি বিদেশি মদ এবং ৩৪৮০ বোতল বিয়ার বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে বলে কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে।
আরও পড়ুন: কেজরীর বিরুদ্ধে এফআইআরের নির্দেশ নির্বাচন কমিশনের
এই সাফল্যে অবশ্য স্বস্তিতে থাকতে পারছেন না কমিশনের কর্তারা। যে ভাবে কুপন ছাপিয়ে, তাতে সিল মেরে মদ বিলির ব্যবস্থা সামনে এসেছে, তাতে এই ব্যবস্থা গোটা পঞ্জাবেই চলছে বলে নির্বাচন কমিশনের কর্তারা মনে করছেন। কিন্তু তার বিশদ খোঁজ এখনও মেলেনি। যে সব জেলাগুলিতে রাজনৈতিক লড়াই তীব্র, সেই জেলাগুলির দিকেই বেশি নজর দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন। এর পাশাপাশি ড্রাগের কারবারের দিকেও নজর রাখতে হচ্ছে। পাকিস্তান থেকে বিপুল পরিমাণ মাদক পঞ্জাবে ঢোকানোর চেষ্টা হচ্ছে বলে খবর রয়েছে গোয়েন্দাদের কাছে। সে দেশ থেকে আসা মালবাহী ট্রেন থেকে মাদক উদ্ধারও হয়েছে। এ ছাড়া পথচলতি গাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে ইতিমধ্যেই বিপুল পরিমাণে মাদক উদ্ধার করেছে পুলিশ। রাজ্যের বিভিন্ন অঞ্চলে মাদক খোঁজার জন্য ২২টি পুলিশ কুকুরকে কাজে লাগাচ্ছে কমিশন। তবে ভোটমুখী পঞ্জাবের সব এলাকা থেকে মদ এবং মাদক বাজেয়াপ্ত করা যে খড়ের গাদায় সূচ খোঁজার সামিল, তাও কমিশনের কর্তারা বুঝতে পারছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy