(বাঁ দিকে) চাঁসোরিয়া দম্পতি। ঘাটকোপারের সেই পেট্রল পাম্প (ডান দিকে)। ছবি: সংগৃহীত।
কাজ থেকে অবসর নিয়েছিলেন সম্প্রতি। মধ্যপ্রদেশের জবলপুরে একটি বাড়িও কিনেছিলেন। সেখানে যাওয়ার জন্য মুম্বই থেকে রওনা হয়েছিলেন দম্পতি। গাড়িতে তেল ভরার জন্য ঘাটকোপারের একটি পেট্রল পাম্পে দাঁড়ান। সেটাই কাল হল তাঁদের। প্রবল ঝড়ে পেট্রল পাম্পের উপর বিশালাকার বিলবোর্ড আছড়ে পড়েছিল। আর তাঁর নীচেই চাপা পড়ে গিয়েছিলেন প্রায় ১০০ জন। তাঁদের মধ্যে ছিলেন এই দম্পতিও।
সোমবারের ঘটনার পর থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত বেশির ভাগকে উদ্ধার করা হয়ে গিয়েছিল। বুধবার ভেঙে পড়া বিলবোর্ডের একটা অংশ সরাতেই তাঁর নীচে দোমড়ানো-মোচড়ানো একটি গাড়ি দেখতে পান উদ্ধারকারীরা। সেই গাড়িটি বার করতেই তার ভিতর থেকে এক প্রবীণ দম্পতির দলা পাকানো দেহ উদ্ধার হয়। বিলবোর্ডের চাপে গাড়ির ভিতরেই পিষে গিয়েছিলেন দম্পতি।
পুলি জানিয়েছে, মৃত দম্পতির নাম মনোজ (৬০) এবং অনিতা চাঁসোরিয়া (৫৯)। এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোলের (এটিসি) এক জন অবসরপ্রাপ্ত জেনারেল ম্যানেজার ছিলেন মনোজ। সম্প্রতি কাজ থেকে অবসর নিয়েছিলেন। জবলপুরে পাকাপাকি ভাবে চলে গিয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু ভিসা সংক্রান্ত কিছু কাজ বাকি থাকায় সোমবার মুম্বইয়ে গাড়ি নিয়ে সস্ত্রীক এসেছিলেন মনোজ। সেই কাজ মিটিয়ে আবার জবলপুরের উদ্দেশে রওনা হন চাঁসোরিয়া দম্পতি। কিন্তু গাড়িতে পেট্রল কম থাকায় ঘাটকোপারের একটি পেট্রল পাম্পে ঢুকেছিলেন। সেই সময়েই প্রবল ঝড় ওঠে। বহু মানুষ আশ্রয় নিয়েছিলেন সেই পেট্রল পাম্পের ছাউনির নীচে। তবে গাড়িতেই ছিলেন মনোজ এবং তাঁর স্ত্রী। আচমকাই সেই ঝড়ের দাপটে পেট্রল পাম্প লাগোয়া একটি ১০০ ফুট উচ্চতার এবং ২৫০ টন ওজনের বিলবোর্ড পাম্পের ছাউনির উপর আছড়ে পড়ে। সেই বিলবোর্ড এবং পেট্রল পাম্পের ছাউনির নীচে চাপা পড়ে যান প্রায় ১০০ জন। এই দুর্ঘটনায় এখনও পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ১৬ জনের। আহত বহু। মৃতদের তালিকায় রয়েছেন চাঁসোরিয়া দম্পতি।
বিলবোর্ডের নীচ থেকে একে একে উদ্ধার করা হয় বেশির ভাগ আটকদের। কিন্তু চাঁসোরিয়া দম্পতির গাড়িটি বিলবোর্ডের নীচে এমন ভাবে চাপা পড়ে গিয়েছিল যে, দ্রুত উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। উদ্ধারকাজ এগোতেই বুধবার বিলবোর্ডের নীচ থেকে দুমড়ে যাওয়া গাড়ি এবং তাঁর ভিতরে প্রবীণ দম্পতির দেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
চাঁসোরিয়া দম্পতির পুত্র আমেরিকায় থাকেন। ঘটনার দিন তিনি বাবা-মাকে ফোন করে না পেয়ে মুম্বইয়েরই এক বন্ধুকে ফোন করে বিষয়টি দেখতে বলেন। খোঁজাখুঁজির পরেও না পেয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হন ওই বন্ধু। পুলিশ তখন দম্পতির মোবাইলের টাওয়ার লোকেশন চিহ্নিত করে। তারা দেখে, দম্পতির শেষ অবস্থান ছিল ঘাটকোপারের একটি পেট্রল পাম্প। ঘটনাচক্রে ওই পেট্রল পাম্পের উপরে বিলবোর্ড ভেঙে পড়েছিল। সঙ্গে সঙ্গে সেখানে ওই দম্পতির আত্ময়ীরো পৌঁছন। কিন্তু তাঁদের খোঁজ মেলেনি। বিলবোর্ডের নীচে আর কেউ আটকে রয়েছেন কি না তা চূড়ান্ত ভাবে খতিয়ে দেখার সময়েই বুধবার চাঁসোরিয়া দম্পতির দেহ উদ্ধার হয়। এই ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে ১৬ জনের। আহত হয়েছেন ৪১ জন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy