প্রধান বিচারপতি শরদ অরবিন্দ বোবডে।—ফাইল চিত্র।
দেশ কঠিন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে— সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) নিয়ে চলতে থাকা হিংসা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে আজ এই মন্তব্য করেছেন প্রধান বিচারপতি শরদ অরবিন্দ বোবডে। শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরে জানান, হিংসা থামলে তবেই সিএএ সংক্রান্ত মামলা শুনবে সুপ্রিম কোর্ট।
সিএএ নিয়ে দেশ জুড়ে বিতর্ক চলছে। তার মধ্যেই আইনজীবী বিনীত ধান্ডে এই আইনকে ‘সাংবিধানিক’ স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য শীর্ষ আদালতে আর্জি জানিয়েছিলেন। প্রধান বিচারপতি বোবডে, বিচারপতি বি আর গাওয়াই ও বিচারপতি সূর্য কান্তের বেঞ্চ আজ এই আর্জি মেনে নেননি। বরং বিচারপতিরা আবেদনকারীর উদ্দেশে বলেন, ‘‘সংসদের পাশ করা কোনও আইনকে আমরা সাংবিধানিক ঘোষণা করে দেব কী ভাবে? সব সময়ে আমরা ধরে নিই এটা সাংবিধানিক। কিন্তু এক সময়ে আপনি তো আইনের ছাত্র ছিলেন। ব্যাপারটা আপনার জানা উচিত...জীবনে প্রথমবার এই ধরনের আর্জি শুনছি।’’ এর পরেই বিচারপতিদের মন্তব্য, ‘‘আইনটি বৈধ কি না, আদালতকে সেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আমরা ঘোষণা করে দিতে পারি না আইনটি সাংবিধানিক।’’
সিএএ নিয়ে দ্রুত শুনানির আবেদন জানিয়েছিলেন বিনীত। এই আইনকে সাংবিধানিক ঘোষণা করে একে রূপায়ণ করতে রাজ্যগুলিকে নির্দেশ দেওয়ার জন্য শীর্ষ আদালতের কাছে আর্জি জানান তিনি। পাশাপাশি, যে সব সমাজকর্মী, পড়ুয়া ও সংবাদমাধ্যম এই আইন নিয়ে ‘গুজব ছড়াচ্ছে’, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলা হয়। ওই আইন সংবিধান কিংবা দেশের নাগরিকদের বিরুদ্ধে নয়— সংবাদমাধ্যমে বিজ্ঞাপন দিয়ে তা তুলে ধরার জন্য কেন্দ্রকে নির্দেশ দিতে আদালতের কাছে আর্জি জানানো হয়। বলা হয়, এই আইনকে সামনে রেখে যে সব রাজনৈতিক দল ‘গুজব ও সন্ত্রাস ছড়াচ্ছে’ তাদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্বাচন কমিশনকে নির্দেশ দেওয়া হোক। আবেদনকারীর বক্তব্য, সংশয়ে থাকা নাগরিকদের দিকনির্দেশ করুক শীর্ষ আদালত। দ্রুত শুনানির আর্জি তো খারিজ হয়েইছে, অন্য প্রসঙ্গ নিয়েও কোনও নির্দেশ দেননি বিচারপতিরা। বরং শীর্ষ আদালত বলেছে, ‘‘দেশ কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে চলেছে। শান্তি প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করাকেই গুরুত্ব দিতে হবে। তার জন্য মামলাকারীর এই ধরনের আবেদন কোনও কাজে আসবে না।’’ আদালত জানিয়ে দেন, হিংসা থামলে তবেই সিএএ নিয়ে মামলা শোনা হবে। শেষ পর্যন্ত মামলাকারীর আইনজীবী আবেদন প্রত্যাহার করে নেন। তবে পরে এ নিয়ে মামলা করার সুযোগ পাবেন তিনি।
১৮ ডিসেম্বর সিএএ-র সাংবিধানিক বৈধতা বিচারের মামলা শুনতে রাজি হয় সুপ্রিম কোর্ট। তবে এই আইনকে স্থগিত করার নির্দেশ দেয়নি। এই সংক্রান্ত ৫৯টি আবেদন শীর্ষ আদালতে জমা পড়ে। রাজনৈতিক দলের কর্মী, আইনজীবী ও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা পক্ষে-বিপক্ষে আবেদন জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টে। আইনের পড়ুয়ারাও এই আইনের বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে শীর্ষ আদালতের দরজায় পৌঁছেছে। ২২ জানুয়ারি সিএএ সংক্রান্ত মামলার শুনানি হবে বলে আগেই জানিয়েছিল কোর্ট।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy