চলছে করোনাভাইরাস আক্রান্ত এক রোগীর স্বাস্থ্যপরীক্ষা।—ছবি এএফপি।
নোভেল করোনাভাইরাসের (সিওভিআইডি) আক্রমণের জেরে চিন থেকে ওষুধ তৈরির কাঁচামাল আমদানিতে সমস্যা দেখা দিয়েছে। তবে তার জন্য এখনই ওষুধের সঙ্কট তৈরি হবে না বলে কেন্দ্রকে আশ্বস্ত করল শিল্প মহল।
শিল্প মহলের সঙ্গে কথা বলার পাশাপাশি, বিভিন্ন রাজ্যের ড্রাগ কন্ট্রোলের সঙ্গেও যোগাযোগ করে পরিস্থিতি জানতে চেয়েছিল সেন্ট্রাল ড্রাগস স্ট্যান্ডার্ড কন্ট্রোল অর্গানাইজেশন (সিডিএসসিও)। সূত্রের খবর, পশ্চিমবঙ্গ এখনও সুনির্দিষ্ট ভাবে তথ্য না-দিলেও অন্যান্য রাজ্য থেকে যা তথ্য মিলেছে, তাতে আগামী দু’মাস ওষুধের কাঁচামাল নিয়ে চিন্তা নেই। রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তার মতে, ‘‘দু’মাসের কাঁচামালের জোগান রয়েছে মানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে।’’
এ দেশে ওষুধ তৈরির জন্য কাঁচামাল বা ‘অ্যাকটিভ ফার্মাসিউটিক্যাল ইনগ্রেডিয়েন্টস’ চিন থেকে আমদানি করা হয়। যার মূল্য প্রায় ১৪০ কোটি ডলার। চিন থেকে ১১০ কোটি ডলার মূল্যের অ্যান্টিবায়োটিকও আমদানি করে ভারত। সিওভিআইডি-র দাপটে দীর্ঘদিন পণ্য আমদানি সম্ভব না-হলে কী ধরনের পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে, সেই বিষয়ে আন্দাজ পেতে ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে তথ্য জানার জন্য সিডিএসসিও-কে নির্দেশ দেয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। যার প্রেক্ষিতে রাজ্য ড্রাগ কন্ট্রোলগুলির কাছে এই বিষয়ে তথ্য জানতে চাওয়া হয়।
এখনও পর্যন্ত যে-সব রাজ্য তথ্য পাঠিয়েছে, সেই তালিকায় নেই পশ্চিমবঙ্গ। সিডিএসসিও-র এক কর্তা জানান, রাজ্য ড্রাগ কন্ট্রোল তথ্য জোগাড়ে সময় চেয়েছে। যদিও স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, কয়েকটি কাঁচামালের উল্লেখ করে সেগুলির মজুত কেমন, তা জানতে চাওয়া হয়েছিল। কাঁচামালের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রাথমিক ভাবে সিডিএসসিও-কে সেই তথ্য জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। দু’-এক দিনের মধ্যে সবিস্তার রিপোর্টও দিয়ে দেওয়া হবে।
সিডিএসসিও-র মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহের পাশাপাশি আজ সব বণিকসভা ও শিল্প মহলের সঙ্গে বৈঠক করেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। বৈঠকে শিল্প মহল বলে, করোনাভাইরাসের ধাক্কায় চিন থেকে ওষুধের কাঁচামাল রফতানি ধাক্কা খেতে পারে। ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে অ্যান্টিবায়োটিক, ভিটামিন ও অন্যান্য ওষুধের দাম বেড়ে যেতে পারে। তাই আমেরিকা, ভিয়েতনামের মতো দেশ থেকে প্রয়োজনে বিমানে করে হলেও এ সব ওষুধের কাঁচামাল আমদানি করতে হতে পারে। সে জন্য ওষুধের কাঁচামালের ওপরে শুল্ক ছাঁটাই করার দাবি জানায় তারা। বৈঠকের পর অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমি যা বুঝেছি, ওষুধ বা তার কাঁচামালের কোনও ঘাটতি নেই। ওষুধপত্রের দাম বেড়ে যাওয়া নিয়েও চিন্তার কারণ নেই।’’ আমদানি শুল্ক ছাঁটাইয়ের দাবি সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘‘অর্থ মন্ত্রকের সচিবদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রকের সচিবদের সঙ্গে কথা বলতে। বুধবার বিকেলের মধ্যেই তাঁরা বৈঠক সেরে ফেলবেন। গোটা পরিস্থিতি যাচাই করে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর দফতরের সঙ্গে আলোচনা হবে। তার পরে কিছু প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ ঘোষণা করা হবে।’’
অর্থমন্ত্রী জানান, চিন থেকে এখনও পণ্য নিয়ে জাহাজ এসে পৌঁছচ্ছে। কিন্তু করোনাভাইরাসের ধাক্কায় চিনের প্রশাসন প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দিতে পারছে না। ফলে বন্দরে জাহাজবন্দি হয়ে জিনিসপত্র পড়ে রয়েছে। কিন্তু করোনাভাইরাসের প্রভাব দীর্ঘায়িত হলে কী হবে? ওষুধ শিল্পের আশঙ্কা, জোগান বন্ধ হয়ে গেলে ওষুধের অভাব দেখা দিতে পারে। কারণ প্যারাসিটামল, আইবুপ্রোফেনের মতো রোজকার প্রয়োজনীয় ওষুধের কাঁচামাল ১৫ দিনের মতো মজুত করা রয়েছে। অন্যান্য ওষুধের ক্ষেত্রে অবশ্য কাঁচামাল দু’তিন মাস চলে যাবে। সেই কারণেই জরুরি পরিস্থিতিতে জাহাজের ভরসায় না-থেকে বিমানে করে কাঁচামাল আনতে হতে পারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy