দেশের কোভিড পরিসংখ্যান। গ্রাফিক- শৌভিক দেবনাথ।
করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ দেশে উদ্বেগজনক পরিস্থিতির তৈরি করছে। এই হারে সংক্রমণ চলতে থাকলে পরিস্থিতি একেবারে হাতের বাইরে চলে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন স্বাস্থ্যকর্তারা। কেন্দ্রের তরফেও মঙ্গলবার জানানো হয়েছে, দেশের পরিস্থিতি খারাপ থেকে আরও খারাপ হয়েছে গত কয়েক সপ্তাহে। সেই ধারা বুধবারও অব্যাহত। গত ৫ দিনের তুলনায় কম হলেও গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে আক্রান্ত ৫৩ হাজার ৪৮০। দেশে এখনও অবধি মোট আক্রান্ত হয়েছেন ১ কোটি ২১ লক্ষ ৪৯ হাজার ৩৩৫ জন।
এ বছরের শুরুতে একটা সময় মনে হচ্ছিল, করোনার প্রকোপ বোধহয় শেষ হতে যাচ্ছে। কিন্তু তার পরই প্রবল ভাবে ছড়িয়ে পড়তে থাকল করোনাভাইরাসের নতুন স্ট্রেন। যদিও স্বাস্থ্যকর্তারা বলছেন এই নতুন স্ট্রেন নিয়ে অতিরিক্ত আশঙ্কার কোনও কারণ নেই। কিন্তু বিগত ক’দিন সংক্রমণ বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে মৃত্যুর সংখ্যাও বেড়েছে দেশে। গত ২৪ ঘণ্টায় তা হয়েছে ৩৫৪। ২০২০ সালের ১৭ ডিসেম্বরের পর এক দিনে ৩৫০-র বেশি মৃত্যু হল দেশে। করোনা এখনও অবধি দেশে প্রাণ কেড়েছে ১ লক্ষ ৬২ হাজার ৪৬৮ জনের।
সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ে বেসামাল অবস্থা হয়েছে ৯-১০টি রাজ্যের। মহারাষ্ট্র তাদের মধ্যে শীর্ষে। গত ২৪ ঘণ্টায় ২৭ হাজার ৯১৮ জন আক্রান্ত হয়েছেন সেখানে। কর্নাটকেও তা প্রায় ৩ হাজার। ছত্তীসগঢ়ে তা ৩ হাজার ছাড়িয়েছে। পঞ্জাব, তামিলনাড়ু, গুজরাত, মধ্যপ্রদেশে দৈনিক সংক্রমণ দু’হাজারের বেশি। দিল্লি, রাজস্থান, উত্তরপ্রদেশে তা এক হাজারের আশপাশে। তুলনায় কেরলের অবস্থার নতুন করে অবনতি হয়নি। পশ্চিমবঙ্গেও দৈনিক সংক্রমণ গত ক’দিনে বেড়ে ৫০০-র বেশি।
সংক্রমণের হার কমাতে টিকাকরণেও জোর দেওয়া হয়েছে। জানুয়ারিতে টিকাকরণ শুরু হওয়ার পর এখনও অবধি ৬ কোটি ৩০ লক্ষ ৫৪ হাজার ৩৫৩ জনকে কোভিড টিকার ডোজ দেওয়া হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় টিকা নিয়েছেন ১৯ লক্ষ ৪০ হাজার ৯৯৯ জন। দোল এবং হোলির দু’দিন দেশের টিকাকরণে একটু ছেদ পড়েছিল। ১ এপ্রিল থেকে ৪৫ বছরের ঊর্ধ্বে সকলেই টিকা নিতে পারবেন।
সংক্রমণ যে শুধু টিকা দিয়েই রোখা যাবে না তা বারবার বলছেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের মতে, টিকাকরণের পাশাপাশি কোভিড ,সচেতনতা বিধি মেনে চলাও সমান গুরুত্বপূর্ণ। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের ছড়িয়ে পড়া আটকাতে ফের লকডাউনের কথাও চিন্তা করা হচ্ছে। অনেক রাজ্যেই বাজারে দোকানে মানুষের চলাফেরায় বিভিন্ন বিধি নিষেধ জারি করছে। মানুষকেও সচেতন থাকার জন্য আবেদন জানানো হচ্ছে। কিন্তু রাস্তাঘাটে, বাজারে-দোকানে অনেকের মধ্যেই সচেতন ভাবে চলাফেরার অভাব স্পষ্ট। এ জন্য ফের পথে নেমেছে প্রশাসন। যেমন নাসিকে। সেখানে সংক্রমণ লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। কিন্তু বাজারের ভিড় নিয়ন্ত্রণে আসছে না। বাধ্য হয়ে স্থানীয় প্রশাসন নিয়ম করেছে ৫ টাকা দিয়ে টিকিট কাটলে ১ ঘণ্টার জন্য বাজারে ঢোকা যাবে। সে শহরের পুলিশ কমিশনারের কথায়, লকডাউন থেকে বাঁচতেই এই পদক্ষেপ। লোকে যদি নিয়ম মেনে চলে, তাহলে লকডাউন থেকে বাঁচতে পারা যাবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy