ভারতে অ্যাক্টিভ রোগী কমে হয়েছে ন’লক্ষ ১৯ হাজার ২৩। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
আশার আলো দেখাচ্ছে দেশের করোনাভাইরাস পরিসংখ্যান। গত কয়েক দিনে ধরেই দৈনিক সংক্রমণ কমছে। তেমনই গত দু’দিন দৈনিক মৃত্যুও হচ্ছে হাজারের কম। সংক্রমণের হারও ৬-৭ শতাংশের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকছে। নতুন আক্রান্তের থেকে সুস্থ বেশি হওয়ায় সক্রিয় করোনা রোগীর সংখ্যাও দিন দিন কমছে।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন ৬১ হাজার ২৬৭ জন। ওই সময়ের মধ্যে আমেরিকা ও ব্রাজিলে নতুন আক্রান্তের সংখ্যা যথাক্রমে ৩৬ হাজার ৩৪২ এবং ১১ হাজার ৯৪৬। গত দু’মাস ধরেই ওই দু’টি দেশের তুলনায় ভারতে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা অনেক বেশি।
মোট আক্রান্তের নিরিখে আমেরিকার পরই রয়েছে ভারত। দেশে এখনও অবধি আক্রান্ত হয়েছেন ৬৬ লক্ষ ৮৫ হাজার ৮২ জন। সেখানে বিশ্বের আক্রান্তের তালিকায় প্রথম স্থানে থাকা আমেরিকাতে মোট আক্রান্ত ৭৪ লক্ষ ৫৭ হাজার ও তৃতীয় স্থানে থাকা ব্রাজিলে ৪৯ লক্ষ ২৭ হাজার।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
দেশে কোভিড আক্রান্তদের সুস্থ হওয়ার হার শুরু থেকেই আশাব্যাঞ্জক। এখনও পর্যন্ত দেশে মোট ৫৫ লক্ষ ৬২ হাজার ৪৯০ জন করোনার কবল থেকে মুক্ত হয়েছেন। যা গোটা বিশ্বের মধ্যে সর্বোচ্চ। দেশের মোট আক্রান্তের ৮৪ শতাংশেরও বেশি সুস্থ হয়ে উঠেছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে সুস্থ হয়েছেন ৭৫ হাজার ৭৮৭ জন। এখন ভারতে অ্যাক্টিভ রোগী রয়েছেন ন’লক্ষ ১৯ হাজার ২৩ জন।
প্রতি দিন যে সংখ্যক মানুষের পরীক্ষা হচ্ছে তার মধ্যে যত শতাংশের কোভিড রিপোর্ট পজিটিভ আসছে, সেটাকেই বলা হচ্ছে পজিটিভিটি রেট বা সংক্রমণের হার। আজ তা ৫.৬২ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনা পরীক্ষা হয়েছে ১০ লক্ষ ৮৯ হাজার ৪০৩ জনের।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
আমেরিকা ও ইউরোপের দেশগুলির তুলনায় ভারতে মৃত্যুর হার কম। কিন্তু বাড়তে বাড়তে ভারতে মোট মৃত্যু এক লক্ষ ছাড়িয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনার জেরে মৃত্যু হয়েছে ৮৮৪ জনের। এ নিয়ে দেশে মোট এক লক্ষ তিন হাজার ৫৬৯ জনের প্রাণহানি ঘটিয়েছে করোনা। এর মধ্যে মহারাষ্ট্রেই মারা গিয়েছেন ৩৮ হাজার জন। দ্বিতীয় স্থানে থাকা তামিলনাড়ুতে মোট মৃত্যু ন’হাজার ৮৪৬। তৃতীয় স্থানে থাকা কর্নাটকে মৃতের সংখ্যা ন’হাজার ৩৭০। অন্ধ্রপ্রদেশে করোনা প্রাণ কেড়েছে ছ’হাজার জনের। উত্তরপ্রদেশ (৬,০৯২), দিল্লি (৫,৫৪২) ও পশ্চিমবঙ্গে (৫,২৫৫) মোট মৃত্যু বেড়ে চলেছে। গুজরাত (৩,৫০৯), পঞ্জাব (৩,৬৪১) ও মধ্যপ্রদেশ (২,৪৬৩) মৃত্যু তালিকায় উপরের দিকে রয়েছে। রাজস্থান, হরিয়ানা, তেলঙ্গানা ও জম্মু ও কাশ্মীরের মোট মৃত্যুও এক হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছে। এর পর তালিকায় রয়েছে বিহার, ওড়িশা, ছত্তীসগঢ়, ঝাড়খণ্ড, অসম, কেরল, উত্তরাখণ্ড, পুদুচেরি, গোয়া, ত্রিপুরার মতো রাজ্যগুলি।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
মোট আক্রান্তের তালিকায় শুরু থেকেই দেশের শীর্ষে মহারাষ্ট্র। এখনও অবধি ১৪ লক্ষ ৫৩ জন আক্রান্ত হয়েছেন মহারাষ্ট্রে। তবে গত কয়েকদিনে সেখানকার দৈনিক সংক্রমণ উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। সাত লক্ষ ২৩ হাজার আক্রান্ত নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে অন্ধ্রপ্রদেশ। কর্নাটকে ছ’লক্ষ ৪৭ হাজার আক্রান্ত হয়েছেন। গত কয়েকদিনে সেখানকার দৈনিক সংক্রমণ ফের ঊর্ধ্বমুখী। তামিলনাড়ুতে মোট আক্রান্ত ছ’ লক্ষ পেরলেও সেখানে দৈনিক সংক্রমণ পাঁচ হাজারে আশপাশেই ঘোরাফেরা করছে। উত্তরপ্রদেশে চার লক্ষ ১৭ হাজার জন কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন। দিল্লিতে দু’লক্ষ ৯২ হাজার ও পশ্চিমবঙ্গে দু’ লক্ষ ৭৩ হাজার জন সংক্রমিত হয়েছেন। ওড়িশাতে রোজ প্রায় তিন হাজারের ঘরে বাড়তে বাড়তে মোট আক্রান্ত দু’লক্ষ ৩৫ হাজারে পৌঁছেছে। কেরলও গত কয়েক দিনে দৈনিক সংক্রমণ বেড়েছে। এর জেরে সেখানে মোট আক্রান্ত দু’লক্ষ পেরিয়ে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। তেলঙ্গানাতে দু’ লক্ষ ছাড়িয়েছে মোট আক্রান্তের সংখ্যা।
পশ্চিমবঙ্গে দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণ সেপ্টেম্বরের শুরু থেকেই তিন হাজারের বেশি হচ্ছে। ইদানিং তা বাড়ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে তিন হাজার ৩৪৮ জন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন। এ নিয়ে রাজ্যে মোট আক্রান্ত হলেন দু’লক্ষ ৭৩ হাজার ৬৭৯ জন। যদিও এর মধ্যে দু’লক্ষ ৪০ হাজার রোগী সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে মৃত্যু হয়েছে ৬১ জনের। করোনার কবলে এ রাজ্যে এখনও অবধি প্রাণ হারিয়েছেন পাঁচ হাজার ২৫৫ জন।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
(চলন্ত গড় বা মুভিং অ্যাভারেজ কী: একটি নির্দিষ্ট দিনে পাঁচ দিনের চলন্ত গড় হল— সেই দিনের সংখ্যা, তার আগের দু’দিনের সংখ্যা এবং তার পরের দু’দিনের সংখ্যার গড়। উদাহরণ হিসেবে— দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণের লেখচিত্রে ১৮ মে-র তথ্য দেখা যেতে পারে। সে দিনের মুভিং অ্যাভারেজ ছিল ৪৯৫৬। কিন্তু সে দিন নতুন আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ছিল ৫২৬৯। তার আগের দু’দিন ছিল ৩৯৭০ এবং ৪৯৮৭। পরের দুদিনের সংখ্যা ছিল ৪৯৪৩ এবং ৫৬১১। ১৬ থেকে ২০ মে, এই পাঁচ দিনের গড় হল ৪৯৫৬, যা ১৮ মে-র চলন্ত গড়। ঠিক একই ভাবে ১৯ মে-র চলন্ত গড় হল ১৭ থেকে ২১ মে-র আক্রান্তের সংখ্যার গড়। পরিসংখ্যানবিদ্যায় দীর্ঘমেয়াদি গতিপথ সহজ ভাবে বোঝার জন্য এবং স্বল্পমেয়াদি বড় বিচ্যুতি এড়াতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy