বিগত মাসগুলির তুলনায় মহারাষ্ট্র, অন্ধ্রপ্রদেশ, তামিলনাড়ুতে দৈনিক সংক্রমণ কিছুটা হলেও নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। গ্রাফিক-শৌভিক দেবনাথ।
গত এক সপ্তাহ ধরে দেশের দৈনিক করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৮০ হাজারে গণ্ডিতেই ঘোরাফেরা করছে। যদিও দৈনিক মৃত্যু রোজ হাজার পেরনোর জেরে মোট মৃত্যু সংখ্যা পৌঁছে গিয়েছে এক লক্ষের দোরগোড়ায়। বিগত মাসগুলির তুলনায় মহারাষ্ট্র, অন্ধ্রপ্রদেশ, তামিলনাড়ুতে দৈনিক সংক্রমণ কিছুটা হলেও নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। কিন্তু ওড়িশা, কেরল, ছত্তীসগড়ের মতো রাজ্যে তা নতুন করে বাড়ছে।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন ৮১ হাজার ৪৮৪ জন। গতকালের থেকে প্রায় পাঁচ হাজার কম। ওই সময়ের মধ্যে আমেরিকা ও ব্রাজিলে নতুন আক্রান্তের সংখ্যা যথাক্রমে ৪৪ হাজার ৯৮১ ও ৩৬ হাজার ১৫৭। গত দু’মাস ধরেই ওই দু’টি দেশের তুলনায় ভারতে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা অনেক বেশি।
মোট আক্রান্তের নিরিখে আমেরিকার পরই রয়েছে ভারত। দেশে এখনও অবধি আক্রান্ত হয়েছেন ৬৩ লক্ষ ৯৪ হাজার ৬৮ জন। সেখানে বিশ্বের আক্রান্তের তালিকায় প্রথম স্থানে থাকা আমেরিকাতে মোট আক্রান্ত ৭২ লক্ষ ৭৭ হাজার ও তৃতীয় স্থানে থাকা ব্রাজিলে ৪৮ লক্ষ ৪৭ হাজার।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
দেশে কোভিড আক্রান্তদের সুস্থ হওয়ার হার শুরু থেকেই আশাব্যাঞ্জক। এখনও পর্যন্ত দেশে মোট ৫৩ লক্ষ ৫২ হাজার ৭৮ জন করোনার কবল থেকে মুক্ত হয়েছেন। যা গোটা বিশ্বের মধ্যে সর্বোচ্চ। দেশের মোট আক্রান্তের ৮৩ শতাংশেরও বেশি সুস্থ হয়ে উঠেছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে সুস্থ হয়েছেন ৭৮ হাজার ৮৭৭ জন। এখন ভারতে অ্যাক্টিভ রোগী রয়েছেন ন’লক্ষ ৪২ হাজার ২১৭ জন।
প্রতি দিন যে সংখ্যক মানুষের পরীক্ষা হচ্ছে তার মধ্যে যত শতাংশের কোভিড রিপোর্ট পজিটিভ আসছে, সেটাকেই বলা হচ্ছে পজিটিভিটি রেট বা সংক্রমণের হার। আজ তা ৭.৪২ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনা পরীক্ষা হয়েছে ১০ লক্ষ ৯৭ হাজার ৯৪৭ জনের। যা গত কয়েকদিনের তুলনায় অনেক বেশি।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
আমেরিকা ও ইউরোপের দেশগুলির তুলনায় ভারতে মৃত্যুর হার কম। কিন্তু বাড়তে বাড়তে ভারতে মোট মৃত্যু ইতিমধ্যেই এক লক্ষের দোরগোড়ায় পৌঁছে গিয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনার জেরে মৃত্যু হয়েছে এক হাজার ৯৫ জনের। এ নিয়ে দেশে মোট ৯৯ হাজার ৭৭৩ জনের প্রাণহানি ঘটিয়েছে করোনা। এর মধ্যে মহারাষ্ট্রেই মারা গিয়েছেন ৩৭ হাজার জন। দ্বিতীয় স্থানে থাকা তামিলনাড়ুতে মোট মৃত্যু ন’হাজার ৫৮৬। তৃতীয় স্থানে থাকা কর্নাটকে মৃতের সংখ্যা আট হাজার ৯৯৪। অন্ধ্রপ্রদেশে করোনা প্রাণ কেড়েছে পাঁচ হাজার ৮৬৯ জনের। উত্তরপ্রদেশ (৫,৮৬৪) ও দিল্লিতে (৫,৪০১) মোট মৃত্যু বেড়ে চলেছে। পশ্চিমবঙ্গ (৫,০১৭), গুজরাত (৩,৪৬০), পঞ্জাব (৩,৪৫১) ও মধ্যপ্রদেশ (২,৩৩৬) মৃত্যু তালিকায় উপরের দিকে রয়েছে। রাজস্থান, হরিয়ানা, তেলঙ্গানা ও জম্মু ও কাশ্মীরের মোট মৃত্যুও এক হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছে। এর পর তালিকায় রয়েছে বিহার, ওড়িশা, ছত্তীসগঢ়, ঝাড়খণ্ড, অসম, কেরল, উত্তরাখণ্ড, পুদুচেরী, গোয়া, ত্রিপুরার মতো রাজ্যগুলি।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
মোট আক্রান্তের তালিকায় শুরু থেকেই দেশের শীর্ষে মহারাষ্ট্র। দেশের মোট আক্রান্তের ২০ শতাংশেরও বেশি সেখানে। এখনও অবধি ১৪ লক্ষ জন আক্রান্ত হয়েছেন মহারাষ্ট্রে। ৭ লক্ষ আক্রান্ত নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে অন্ধ্রপ্রদেশ। কর্নাটক ও তামিলনাড়ুতে মোট আক্রান্ত ৬ লক্ষ ছাড়িয়েছে। উত্তরপ্রদেশেও আজ চার লক্ষ পেরলো। দিল্লিতে দু’লক্ষ ৮২ হাজার। পশ্চিমবঙ্গে এখনও অবধি দু’ লক্ষ ৬০ হাজার জন সংক্রমিত হয়েছেন। ওড়িশাতে প্রায় তিন হাজারের ঘরে বাড়তে বাড়তে ২ লক্ষ ২২ হাজারে পৌঁছেছে। কেরলও গত কয়েক দিন আট হাজার করে দৈনিক সংক্রমণ হচ্ছে। এর জেরে সেখানে মোট আক্রান্ত ২ লক্ষ পেরিয়ে গেল। তেলঙ্গানাতে আক্রান্ত ১ লক্ষ ৯৫ হাজার জন। বিহার (১.৮৪ লক্ষ) ও অসমেও (১.৮২ লক্ষ) আক্রান্তের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য। গুজরাত (১.৩৮ লক্ষ), রাজস্থান (১.৩৭ লক্ষ), হরিয়ানা (১.২৯ লক্ষ), মধ্যপ্রদেশে (১.৩০ লক্ষ), পঞ্জাব (১.১৫ লক্ষ), ছত্তীসগড়ে (১.১৬ লক্ষ) আক্রান্তের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য। এর পর ক্রমান্বয়ে রয়েছে ঝাড়খণ্ড, জম্মু ও কাশ্মীর, উত্তরাখন্ড, গোয়া, পুদুচেরি, ত্রিপুরা, হিমাচল প্রদেশের মতো রাজ্যগুলি। এই রাজ্যগুলিতে মোট আক্রান্ত এখনও এক লক্ষের কম।
পশ্চিমবঙ্গে দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণ সেপ্টেম্বরের শুরু থেকেই তিন হাজারের বেশি হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে তিন হাজার ২৭৫ জন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন। এ নিয়ে রাজ্যে মোট আক্রান্ত হলেন দু’লক্ষ ৬০ হাজার ৩২৪ জন। যদিও এর মধ্যে ২ লক্ষ ২৮ হাজার রোগী সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে মৃত্যু হয়েছে ৫৯ জনের। করোনার কবলে এ রাজ্যে এখনও অবধি প্রাণ হারিয়েছেন পাঁচ হাজার ১৭ জন।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
(চলন্ত গড় বা মুভিং অ্যাভারেজ কী: একটি নির্দিষ্ট দিনে পাঁচ দিনের চলন্ত গড় হল— সেই দিনের সংখ্যা, তার আগের দু’দিনের সংখ্যা এবং তার পরের দু’দিনের সংখ্যার গড়। উদাহরণ হিসেবে— দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণের লেখচিত্রে ১৮ মে-র তথ্য দেখা যেতে পারে। সে দিনের মুভিং অ্যাভারেজ ছিল ৪৯৫৬। কিন্তু সে দিন নতুন আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ছিল ৫২৬৯। তার আগের দু’দিন ছিল ৩৯৭০ এবং ৪৯৮৭। পরের দুদিনের সংখ্যা ছিল ৪৯৪৩ এবং ৫৬১১। ১৬ থেকে ২০ মে, এই পাঁচ দিনের গড় হল ৪৯৫৬, যা ১৮ মে-র চলন্ত গড়। ঠিক একই ভাবে ১৯ মে-র চলন্ত গড় হল ১৭ থেকে ২১ মে-র আক্রান্তের সংখ্যার গড়। পরিসংখ্যানবিদ্যায় দীর্ঘমেয়াদি গতিপথ সহজ ভাবে বোঝার জন্য এবং স্বল্পমেয়াদি বড় বিচ্যুতি এড়াতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy