দেশের কোভিড পরিসংখ্যান। গ্রাফিক- শৌভিক দেবনাথ।
দেড় লক্ষের গণ্ডি পার করে দু’লক্ষের দিকে এগোচ্ছে দেশের দৈনিক করোনা সংক্রমণ। রবিবার প্রথমবার দেড় লক্ষের গণ্ডি পেরিয়েছিল দৈনিক আকার্ন্তের সংখ্যা। সোমবার হয়েছিল ১ লক্ষ ৬৮ হাজার। মঙ্গলবার তা কমে হয় ১ লক্ষ ৬১ হাজার। বুধবার দেশে নতুন করে আক্রান্ত হলেন ১ লক্ষ ৮৪ হাজার ৩৭২ জন। এই সংখ্যা একদিনে আক্রান্তের নিরিখে সর্বোচ্চ। এই বৃদ্ধির জেরে দেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা হল ১ কোটি ৩৮ লক্ষ ৭৩ হাজার ৮২৫ জন।
কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউ দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যাও বাড়িয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে ১ হাজার ২৭ জনের। গত বছর অক্টোবরের শুরু দিকে দেশে দৈনিক মৃত্যু ১ হাজারের আশপাশে ছিল। তার পর তা কমতে কমতে ১০০-র নীচেও নেমেছিল। গত কয়েক সপ্তাহে ধারাবাহিক ভাবে বেড়ে আবার ১ হাজার ছাড়াল। এ নিয়ে দেশে করোনাভাইরাস মোট প্রাণ কেড়েছে ১ লক্ষ ৭২ হাজার ৮৫ জনের। মহারাষ্ট্রে গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে ২৮১ জনের। দৈনিক মৃত্যু আচমকা বেড়েছে ছত্তীসগঢ়েও। সেখানকার সরকারি হাসপাতালের একটি ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে মর্গে জায়গা না থাকায় কী ভাবে মাটিতে সার দিয়ে ফেলে রাখা হয়েছে কোভিড রোগীদের দেহ। দিল্লিতেও বুধবার দৈনিক মৃত্যু ৮১। কর্নাটক, মধ্যপ্রদেশ, গুজরাতেও রোজ উল্লেখযোগ্য সংখ্যায় মৃত্যু হচ্ছে।
লাগামছাড়া সংক্রমণের জেরে দেশে সক্রিয় রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সক্রিয় রোগী বেড়েছে ১ লক্ষেরও বেশি। এখন দেশে মোট সক্রিয় রোগী রয়েছেন ১৩ লক্ষ ৬৫ হাজার ৭০৪ জন। সক্রিয় রোগীর বৃদ্ধির জেরে হাসপাতাল, নার্সিংহোমগুলির উপর চাপ বাড়ছে প্রবল। এই সংখ্যায় রোজ রোগী বাড়তে থাকলে কী ভাবে তাঁদের চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়া যাবে তা নিয়েও চিন্তার উদ্রেক হচ্ছে প্রশাসনিক মহলে। ইতিমধ্যেই বিভিন্ন রাজ্যে কোভিড রোগীদের জন্য শয্যা বাড়াচ্ছে। কিন্তু এখন দেশে যে সংখ্যক করোনা রোগী রয়েছে দেশে আগে কখনও ছিল না।
সংক্রমণের এই শৃঙ্খল ভাঙতে রাত্রিকালীন কার্ফু জারি করেছে বেশ কয়েকটি রাজ্য। পর্যটকদের আগমনের বিধিনিষেধ চাপানো হচ্ছে বিভিন্ন রাজ্যে। মহারাষ্ট্রে বুধবার থেকে শুরু হচ্ছে ‘জনতা কার্ফু’। চলবে ১ মে পর্যন্ত। সেখানকার মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে সেই সংক্রান্ত বিধিনিষেধের কথা মঙ্গলবার রাতে ঘোষণা করেছেন।
দেশের দৈনিক সংক্রমণের এক তৃতীয়াংশই হচ্ছে মহারাষ্ট্রে। গত ২৪ ঘণ্টায় সেখানে আক্রান্ত হয়েছেন ৬০ হাজার ২১২ জন। উত্তরপ্রদেশের পরিস্থিতিও লাগামছাড়া হয়েছে গত কয়েক দিনে। সে রাজ্যে কুম্ভ মেলায় ভিড় ইতিমধ্যই ‘সুপার স্প্রেডার’ হয়ে উঠতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সে রাজ্যে আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় ১৮ হাজার জন। ছত্তীসগঢ়ে তা ১৫ হাজার ছাড়াচ্ছে। দিল্লিতে গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত সাড়ে ১৩ হাজার ছাড়াল। যা গোটা অতিমারি পর্বে সর্বোচ্চ। কর্নাটক, মধ্যপ্রদেশে আক্রান্ত সাড়ে ৮ হাজারে বেশি, কেরলে সাড়ে ৭ হাজারের বেশি, তামিলনাড়ু এবং গুজরাতে সাড়ে ৬ হাজারের বেশি। পশ্চিমবঙ্গেও আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় এ রাজ্যে ৪ হাজার ৮১৭ জন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন। রাজস্থানেও আক্রান্ত ৫ হাজারের বেশি। অন্ধ্রপ্রদেশে, বিহার, পঞ্জাব, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশাতেও আক্রান্তের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ছে। যদিও দেশে টিকাকরণ চলছে পুরোদমে। গত ২৪ ঘণ্টায় ২৬ লক্ষ ৪৬ হাজার ৪৯৩ জনকে টিকা দেওয়া হয়েছে দেশে। এখনও অবধি মোট ১১ কোটি ১১ লক্ষ ৭৯ হাজার ৫৭৮ করোনা টিকার ডো়জ দেওয়া হয়েছে দেশে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy