গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ২৮ হাজার ৭০১ জন নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন। গ্রাফিক- শৌভিক দেবনাথ।
লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে ভারতে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা। গত ২৪ ঘণ্টায় ২৮ হাজার ৭০১ জন নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন। এক দিনে এত সংখ্যক মানুষ এর আগে আক্রান্ত হননি। এ নিয়ে দেশে মোট আক্রান্ত হলেন আট লক্ষ ৭৮ হাজার ২৫৪ জন। আক্রান্তের সঙ্গে সংক্রমণের হারও ঊর্ধ্বমুখী। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে সংক্রমণের হার ১৩.১ শতাংশ।
সংক্রমণের হার কী? প্রতিদিন যে সংখ্যক মানুষের টেস্ট হচ্ছে, তার মধ্যে যত শতাংশের রিপোর্ট কোভিড পজিটিভ আসছে, সেটাকেই বলা হচ্ছে ‘পজিটিভিটি রেট’ বা সংক্রমণের হার।
আক্রান্তের পাশাপাশি ধারাবাহিক ভাবে বেড়ে চলেছে মৃত্যুও। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুসারে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনার জেরে মৃত্যু হয়েছে ৫০০ জনের। এ নিয়ে দেশে মোট ২৩ হাজার ১৭৪ জনের প্রাণ কাড়ল করোনাভাইরাস। এর মধ্যে মহারাষ্ট্রেই মারা গিয়েছেন ১০ হাজার ২৮৯ জন। মৃত্যুর তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে থাকা দিল্লিতে প্রাণ গিয়েছে তিন হাজার ৩৭১ জনের। গুজরাতে দু’হাজার ৪৫ জন প্রাণ হারিয়েছেন করোনার কারণে। নিয়মিত বেড়ে তামিলনাড়ুতে সংখ্যাটা দাঁড়াল এক হাজার ৯৬৬-তে। উত্তরপ্রদেশ (৯৩৪) ও পশ্চিমবঙ্গেও (৯৩২) মৃত্যুর তালিকাটা হাজারের কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছে। এর পর ক্রমান্বয়ে রয়েছে কর্নাটক (৬৮৪), মধ্যপ্রদেশ (৬৫৩), রাজস্থান (৫১০), তেলঙ্গানা (৩৫৬), অন্ধ্রপ্রদেশ (৩২৮), হরিয়ানা (৩০১), পঞ্জাব (১৯৯), জম্মু ও কাশ্মীর (১৭৯), বিহার (১৪৩)। বাকি রাজ্যগুলিতে মৃতের সংখ্যা এখনও ১০০ পেরোয়নি।
আক্রান্ত দ্রুত হারে বাড়লেও, ভারতে করোনা রোগীর সুস্থ হয়ে ওঠার পরিসংখ্যানটাও বেশ স্বস্তিদায়ক। এখনও পর্যন্ত সাড়ে পাঁচ লক্ষের বেশি মানুষ সুস্থ হয়েছেন। অর্থাৎ মোট আক্রান্তের ৬৩ শতাংশই সুস্থ হয়ে উঠছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় ১৮ হাজার ৮৫০ জন সুস্থ হয়েছেন। এ নিয়ে মোট পাঁচ লক্ষ ৫৩ হাজার ৪৭০ জন করোনার কবল থেকে মুক্ত হলেন।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
শুরু থেকেই মহারাষ্ট্রে বল্গাহীন ভাবে বেড়েছে সংক্রমণ। গোড়া থেকেই এই রাজ্য কার্যত সংক্রমণের শীর্ষে ছিল। তার পর সময় যত গড়িয়েছে, এই রাজ্য নিয়ে সারা দেশের শঙ্কা বেড়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় প্রায় আট হাজার সংক্রমণের জেরে সে রাজ্যে মোট আক্রান্ত আড়াই লক্ষ পেরলো। তামিলনাড়ু ও দিল্লির মোট সংক্রমণ এক লাখ পার করে ছুটছে। তামিলনাড়ুতে মোট আক্রান্ত এক লক্ষ ৩৮ হাজার ৪৭০ জন। রাজধানী দিল্লিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা এক লক্ষ ১২ হাজার ৪৯৪ জন।
মহারাষ্ট্র, তামিলনাড়ু ও দিল্লির অনেকটাই পিছনে রয়েছে চতুর্থ স্থানে থাকা গুজরাত। সেখানে মোট আক্রান্ত ৪১ হাজার ৮২০। কর্নাটক (৩৬,৪৭৬), উত্তরপ্রদেশ (৩৬,৪৭৬), তেলঙ্গানা (৩৪,৬৭১), পশ্চিমবঙ্গ (৩০,০১৩) ও অন্ধ্রপ্রদেশে (২৯,১৬৮) আক্রান্তের সংখ্যা রোজদিন উল্লেখযোগ্য হারে বেড়ে চলেছে। এর পর ক্রমান্বয়ে রয়েছে রাজস্থান (২৪,৩৯২), হরিয়ানা (২১,২৪০), মধ্যপ্রদেশ (১৭,৬৩২), বিহার (১৬,৬৪২), অসম (১৬,০৭১), ওড়িশা (১৩,১২১), জম্মু ও কাশ্মীর (১০,৫১৩)-এর মতো রাজ্য।
পশ্চিমবঙ্গেও রোজ দিন বাড়ছে কোভিডে আক্রান্তের সংখ্যা। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন দেড় হাজারেরও বেশি মানুষ (১৫৬০)। এই নিয়ে রাজ্যে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হল ৩০ হাজার ১৩ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে মৃত্যু হয়েছে ২৬ জনের। রাজ্যে এ পর্যন্ত মোট মৃত্যু হল ৯৩২ জনের।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
(চলন্ত গড় বা মুভিং অ্যাভারেজ কী: একটি নির্দিষ্ট দিনে পাঁচ দিনের চলন্ত গড় হল— সেই দিনের সংখ্যা, তার আগের দু’দিনের সংখ্যা এবং তার পরের দু’দিনের সংখ্যার গড়। উদাহরণ হিসেবে— দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণের লেখচিত্রে ১৮ মে-র তথ্য দেখা যেতে পারে। সে দিনের মুভিং অ্যাভারেজ ছিল ৪৯৫৬। কিন্তু সে দিন নতুন আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ছিল ৫২৬৯। তার আগের দু’দিন ছিল ৩৯৭০ এবং ৪৯৮৭। পরের দুদিনের সংখ্যা ছিল ৪৯৪৩ এবং ৫৬১১। ১৬ থেকে ২০ মে, এই পাঁচ দিনের গড় হল ৪৯৫৬, যা ১৮ মে-র চলন্ত গড়। ঠিক একই ভাবে ১৯ মে-র চলন্ত গড় হল ১৭ থেকে ২১ মে-র আক্রান্তের সংখ্যার গড়। পরিসংখ্যানবিদ্যায় দীর্ঘমেয়াদি গতিপথ সহজ ভাবে বোঝার জন্য এবং স্বল্পমেয়াদি বড় বিচ্যুতি এড়াতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy