দেশে ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমণ বৃদ্ধি এই প্রথম ১০ হাজার ছাড়াল। গ্রাফিক- শৌভিক দেবনাথ।
স্পেন, ইটালিকে টপকে গিয়েছিল আগেই। করোনাভাইরাসে মোট সংক্রমণের নিরিখে এ বার ব্রিটেনকে পিছনে ফেলল ভারত। উঠে এল বিশ্বের চতুর্থ স্থানে। সংক্রমিতের হিসাবে আমেরিকা, ব্রাজিল ও রাশিয়ার পরই এখন ভারত।
তবে শুধু ব্রিটেনকে টপকে যাওয়া নয়। দেশে রোজদিন সংক্রমণের গতি বৃদ্ধি জাগাচ্ছে নতুন শঙ্কা। সংক্রমণ ও মৃত্যুর সংখ্যা বৃদ্ধিতে প্রতিদিনই তৈরি হচ্ছে নতুন রেকর্ড। শুক্রবারও তার অন্যথা হল না। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তথ্য অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় ১০ হাজার ৯৫৬ জন নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন। দেশে ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমণ বৃদ্ধি এই প্রথম ১০ হাজার ছাডাল। এই বৃদ্ধির জেরে কোভিড-১৯-এ মোট আক্রান্ত হলেন দু’লক্ষ ৯৭ হাজার ৫৩৫ জন। ব্রিটেনের মোট আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় দু’লক্ষ ৯৩ হাজার।
মৃত্যুতেও শুক্রবার তৈরি হল নতুন রেকর্ড। বৃহস্পতিবারই কোভিডে মোট মৃত্যুর হিসাবে কানাডাকে পিছনে ফেলেছিল ভারত। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তথ্য অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে মৃত্যু হয়েছে ৩৯৬ জনের। এই বৃদ্ধির জেরে করোনা দেশে মোট আট হাজার ৪৯৮ জনের প্রাণ কাড়ল। এর মধ্যে তিন হাজার ৫৯০ জন মারা গিয়েছেন মহারাষ্ট্রে। গুজরাতে করোনা প্রাণ কেড়েছে এক হাজার ৩৮৫ জনের। বিগত কয়েক দিনে দিল্লিতেও লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে মৃত্যু সংখ্যা। রাজধানীতে এখনও অবধি এক হাজার ৮৫ জন মারা গিয়েছেন কোভিডে আক্রান্ত হয়ে। মোট মৃত্যুর নিরিখে দেশের চতুর্থ স্থানে পশ্চিমবঙ্গ। করোনায় আক্রান্ত হয়ে, এ রাজ্যে মোট ৪৪২ জন মারা গিয়েছেন। শতাধিক মৃত্যুর তালিকায় রয়েছে মধ্যপ্রদেশ (৪৩১), তামিলনাড়ু (৩৪৯), উত্তরপ্রদেশ (৩৪৫), রাজস্থান (২৬৫) ও তেলঙ্গানা (১৬৫)।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
দেশের মধ্যে আক্রান্তের সংখ্যা সব থেকে বেশি মহারাষ্ট্রে। সেখানে এখনও অবধি আক্রান্ত হয়েছেন ৯৭ হাজার ৬৪৮ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় তিন হাজার ৬০৭ জন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন সেখানে। এর পরই রয়েছে তামিলনাড়ু। সেখানে মোট আক্রান্ত হয়েছেন ৩৮ হাজার ৭১৬ জন। আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধিতে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে দেশের রাজধানীও। দিল্লিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা এখন ৩৪ হাজার ৬৮৭। এর পরই রয়েছে গুজরাত। সেখানে আক্রান্ত ২২ হাজার ৩২ জন।
আরও পড়ুন: বাংলা-গুজরাত বিতর্কে ইতিহাসবিদ রামচন্দ্র গুহ
মোট আক্রান্তের নিরিখে ১০ হাজারে গন্ডি পার করেছে উত্তরপ্রদেশ (১২,০৮৮), রাজস্থান (১১,৮৩৮) ও মধ্যপ্রদেশ (১০,২৪১)। পশ্চিমবঙ্গের অবস্থাও দশ হাজার ছুঁই ছুঁই। এ রাজ্যে মোট আক্রান্ত হয়েছেন ন’হাজার ৭৬৮ জন। এর পর ক্রমান্বয়ে রয়েছে কর্নাটক (৬,২৪৫), বিহার (৫,৯৮৩), হরিয়ানা (৫,৯৬৮), অন্ধ্রপ্রদেশ (৫,৪২৯), জম্মু ও কাশ্মীর (৪,৫৭৪), তেলঙ্গানা (৪,৩২০), ওড়িশা (৩,৩৮৬), অসম (৩,৩১৯), পঞ্জাব (২,৮৮৭), কেরল (২,২৪৪), উত্তরাখণ্ড (১,৬৪৩), ঝাড়খণ্ড (১,৫৯৯) ও ছত্তীসগঢ় (১,৩৯৮)-র মতো রাজ্যগুলি।
আক্রান্তের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ছে পশ্চিমবঙ্গেও। গত ২৪ ঘণ্টায় ৪৪০ জন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন এ রাজ্যে। এ নিয়ে রাজ্যের মোট আক্রান্তের সংখ্যা হল ন’হাজার ৭৬৮। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনার কারণে ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে রাজ্যে মোট ৪৪২ জনের মৃত্যু হল করোনায় আক্রান্ত হয়ে।
আরও পড়ুন: গোষ্ঠী সংক্রমণ ঘটেনি, আশ্বাস কেন্দ্রের
রোজ লাফিয়ে লাফিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা যেমন বাড়ছে, তেমন সুস্থও হয়ে উঠছেন আক্রান্তরা। প্রতিকূল পরিস্থিতিতে এটাই কিছুটা আশার আলো। করোনায় আক্রান্ত হয়ে এখনও অবধি এক লক্ষ ৪৭ হাজার ১৯৫ জন সুস্থ হয়ে উঠেছেন। যা অ্যাক্টিভ করোনা রোগীর সংখ্যার থেকে বেশি। গত ২৪ ঘণ্টায় ৬ হাজার ১৬৬ জন করোনার কবল থেকে মুক্ত হয়েছেন।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
(চলন্ত গড় বা মুভিং অ্যাভারেজ কী: একটি নির্দিষ্ট দিনে পাঁচ দিনের চলন্ত গড় হল— সেই দিনের সংখ্যা, তার আগের দু’দিনের সংখ্যা এবং তার পরের দু’দিনের সংখ্যার গড়। উদাহরণ হিসেবে— দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণের লেখচিত্রে ১৮ মে-র তথ্য দেখা যেতে পারে। সে দিনের মুভিং অ্যাভারেজ ছিল ৪৯৫৬। কিন্তু সে দিন নতুন আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ছিল ৫২৬৯। তার আগের দু’দিন ছিল ৩৯৭০ এবং ৪৯৮৭। পরের দুদিনের সংখ্যা ছিল ৪৯৪৩ এবং ৫৬১১। ১৬ থেকে ২০ মে, এই পাঁচ দিনের গড় হল ৪৯৫৬, যা ১৮ মে-র চলন্ত গড়। ঠিক একই ভাবে ১৯ মে-র চলন্ত গড় হল ১৭ থেকে ২১ মে-র আক্রান্তের সংখ্যার গড়। পরিসংখ্যানবিদ্যায় দীর্ঘমেয়াদি গতিপথ সহজ ভাবে বোঝার জন্য এবং স্বল্পমেয়াদি বড় বিচ্যুতি এড়াতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy