দিল্লির একটি সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চলছে করোনাভাইরাসের পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ। ছবি: পিটিআই
দ্বিতীয় দফার লকডাউন চলছে দেশ জুড়ে। তার মধ্যেও করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা প্রতিদিন বাড়ছে। বৃদ্ধি পাচ্ছে মৃতের সংখ্যাও। সেই উদ্বেগ আরও বাড়িয়ে কেন্দ্রের একটি সূত্র দাবি করল, মে মাসের প্রথম সপ্তাহে করোনা সংক্রমণের সর্বোচ্চ শিখরে পৌঁছতে পারে দেশ। তবে লকডাউনের জেরে যে সংক্রমণ অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রাখা গিয়েছে, তাও মনে করছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের আধিকারিকরা।
জানুয়ারি মাসে প্রথম দেশে করোনার সংক্রমণ ধরা পড়েছিল। মার্চে এসে সেই সংক্রমণ অনেকটাই বেড়ে যায়। তার পর ২৫ মার্চ প্রথম দফায় ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত এবং দ্বিতীয় দফায় ৩ মে পর্যন্ত লকডাউন জারি করা হয়েছে। দু’দিন আগেই করোনার হটস্পটগুলি চিহ্নিত করে এলাকাগুলি সিল করে জীবাণুমুক্ত করার কাজ চলছে। এই পুরো বিষয় নিয়ে কেন্দ্র একটি অভ্যন্তরীণ মূল্যায়ন শুরু করেছে।
সেই মূল্যায়নের সঙ্গে জড়িত কেন্দ্রের এক পদস্থ আধিকারিক একটি সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন, ‘‘পরের এক সপ্তাহ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে যাচ্ছে। দেশে করোনার পরীক্ষা ব্যাপক হারে বাড়ানো হচ্ছে। যাঁদের জ্বর, সর্দি-কাশি বা শ্বাসকষ্টের মতো সমস্যা রয়েছে, তাঁদের টেস্ট করা হবে।’’
এ ছাড়া সারা দেশে বাড়িতে বা হাসপাতালে কোয়রান্টিনে থাকা প্রায় সবার পরীক্ষা করা হবে। প্রায় প্রত্যেকের কোভিড-১৯ টেস্ট হবে হটস্পটগুলিতে। স্বাভাবিক ভাবেই টেস্টের সংখ্যা বাড়লে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়বে। সেই কারণেই আগামী সপ্তাহকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে উল্লেখ করেছেন ওই আধিকারিক।
আরও পড়ুন: রাজারহাটে মৃত্যু কোভিড আক্রান্ত ক্যানসার রোগীর, আতঙ্ক হাসপাতালে
এর পাশাপাশি যে সব রাজ্য আগেভাগে লকডাউন ঘোষণা করেছে, সেখানে সংক্রমণ অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রাখা গিয়েছে বলে কেন্দ্রের ওই মূল্যায়নে উঠে এসেছে। উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরা হচ্ছে তিনটি রাজ্যে— রাজস্থান, পঞ্জাব ও বিহার। এই রাজ্যগুলিতে করোনা আক্রান্তরা চিকিৎসায় সুস্থ হয়ে উঠছেন। নতুন আক্রান্তের সংখ্যা কমছে। ফলে ধীরে ধীরে নিয়ন্ত্রণে আসছে পরিস্থিতি।
আজ শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত রাজস্থানে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১১৩১। চিকিৎসায় সুস্থ হয়ে উঠেছেন ১৬৪ জন। রাজ্যে প্রায় সাড়ে সাত হাজার মানুষকে কোয়রান্টিনে রাখা হয়েছে। পঞ্জাবে আক্রান্তের সংখ্যা ১৮৬ এবং সুস্থ হয়েছেন ২৭। মৃত ১৩। এই রাজ্যে ১১ হাজারেরও বেশি মানুষ কোয়রান্টিন বা হোম আইসোলেশনে রয়েছেন। বিহারে আক্রান্তের সংখ্যা ৮০। মৃত ১, সুস্থ হয়েছেন ৩৭ জন।
আরও পড়ুন: ট্রাম্পের লকডাউন তোলার ঘোষণার পরেই রেকর্ড মৃত্যু আমেরিকায়, ২৪ ঘণ্টায় মৃত ৪৪৯১
উল্টো দিকে দেরি করে লকডাউন ঘোষণার ফল ভুগতে হচ্ছে মহারাষ্ট্রকে। দেশে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত ও মৃত এই রাজ্যেই। আক্রান্ত ৩২০৫ জন। মৃত্যু হয়েছে ১৯৪ জনের। কোয়রান্টিন বা হোম আইসোলেশনে রয়েছেন প্রায় ৭৫ হাজার মানুষ। উত্তরপ্রদেশেও প্রথম দিকে আংশিক লকডাউন ঘোষণা হয়েছিল। সে রাজ্যে আক্রান্ত ৮০৫ জন। মৃত ১৩। সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৭৪ জন। ৩৭ হাজারেরও বেশি মানুষকে রাখা হয়েছে আইসোলেশনে।
সারা দেশে এখন ৩৬ হাজারেরও বেশি মানুষ কোয়রান্টিন কেন্দ্রে বা বাড়িতে আইসোলেশনে রয়েছেন। এই বিপুল সংখ্যক মানুষের প্রায় প্রত্যেকের কোভিড-১৯ টেস্ট করা হবে বলে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের ওই আধিকারিক জানিয়েছেন।
কিন্তু কেন্দ্রের উদ্বেগ বেড়েছে আরও একটি কারণে। ওই আধিকারিকের মতে, ‘হটস্পট’ বা ক্লাস্টারগুলির চেয়েও বিচ্ছিন্ন সংক্রমণ নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। তিনি বলেন, ক্লাস্টারগুলি নিয়ন্ত্রণে আনা যাবে। কিন্তু বিচ্ছিন্ন সংক্রমণ আটকানো খুব কঠিন।’’
তবে মে মাসে সংক্রমণ চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছলেও তার পর থেকে ধীরে ধীরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসবে বলেও মনে করেন ওই আধিকারিক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy