Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪
Coronavirus

লাইনে ভিড়, পথ বদলাল শ্রমিক ট্রেন

যানজটে বাস ঘুরিয়ে দেওয়া হয়, কিন্তু ট্রেন! রেল মন্ত্রকের দাবি, এ-ও স্বাভাবিক।

বিক্ষোভ পরিযায়ী শ্রমিকদের। ছবি: পিটিআই।

বিক্ষোভ পরিযায়ী শ্রমিকদের। ছবি: পিটিআই।

অনমিত্র সেনগুপ্ত
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৪ মে ২০২০ ০১:৩৭
Share: Save:

রাত পোহালেই ট্রেন পৌঁছে যাবে উত্তরপ্রদেশের গোরক্ষপুর। সেখান থেকে বাড়ি। অন্তত তেমনই ভেবেছিলেন দু’মাস মুম্বইয়ে আটকে থাকা যোগী আদিত্যনাথের রাজ্যের শ্রমিকেরা। রাত শেষে ট্রেন যখন দৌড় থামাল, তখন স্টেশনের নাম দেখে ঘুম উড়ে গিয়েছে ১২০০ যাত্রীর! কোথায় গোরক্ষপুর, এ তো ওড়িশার রৌরকেলা।

তা হলে কি উত্তরপ্রদেশ পার হয়ে ট্রেন পৌঁছে গিয়েছে ওড়িশায়। চালক কিংবা গার্ড, কেউ ভুলটা বুঝতে পারেননি? ট্রেন থেকে নেমে পড়েন যাত্রীদের একাংশ। বিক্ষোভের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় রৌরকেলা স্টেশনে। পরে রেল কর্তারা জানান, লাইন খালি না-থাকায় ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছে ট্রেন। ট্রেনটির মুম্বইয়ের কল্যাণ-জলগাঁও-ভুসবল-খাণ্ডওয়া-ইটারসি-জবলপুর-মোগলসরাই (দীনদয়াল উপাধ্যায়) হয়ে গোরক্ষপুর যাওয়ারই কথা ছিল। কিন্তু ওই লাইনে শ্রমিক স্পেশালের ভিড়ের কারণে ট্রেনটি ঘুরিয়ে দেওয়া হয়। বিলাসপুর-ঝাড়সুগুদা-রৌরকেলা-আদ্রা-আসানসোল হয়ে গোরক্ষপুর পৌঁছবে ট্রেনটি। যানজটে বাস ঘুরিয়ে দেওয়া হয়, কিন্তু ট্রেন! রেল মন্ত্রকের দাবি, এ-ও স্বাভাবিক।

দেশে স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে যেখানে দিনে প্রায় দু’হাজার ট্রেন চলে, সেখানে শ্রমিক ও এসি স্পেশাল মিলিয়ে কয়েকশো ট্রেন চালাতে কেন নাস্তানাবুদ হতে হচ্ছে রেলকে? আজ ওই প্রশ্নের উত্তরে রেল বোর্ডের চেয়ারম্যান বিনোদকুমার যাদব বলেন, ‘‘শ্রমিক স্পেশাল ট্রেনের ৮০ শতাংশই চলছে বিহার ও উত্তরপ্রদেশের উদ্দেশে। সে কারণে পুবমুখী লাইনে আগে থেকেই ভিড় ছিল।’’ এক রেলকর্তা জানান, অন্তিম স্টেশনে ট্রেন থেকে যাত্রীদের নামিয়ে প্রত্যেকের দেহের তাপমাত্রা পরীক্ষা করে নামধাম লেখাতে দু’আড়াই ঘণ্টা সময় লাগছে। পিছনের ট্রেন আটকে পড়ছে। ফলে এক-এক সময়ে দেখা যাচ্ছে প্রতিটি ব্লক সেকশনে একটি করে শ্রমিক স্পেশাল দাঁড়িয়ে আছে। যাদব বলেন, ‘‘সময় নষ্ট এড়াতেই বিকল্প রাস্তা বেছে নেওয়া হয়।’’

আরও পড়ুন: উপসর্গ না থাকলে কোয়রান্টিনে যেতে হবে না অন্তর্দেশীয় বিমানযাত্রীদের

লাইন খালি না-পাওয়ায় কাল রাত থেকে বিশাখাপত্তনম-পটনা শ্রমিক স্পেশাল মোগলসরাই স্টেশনের আগে আটকে পড়ে। ১০ ঘণ্টারও বেশি সময় আটকে থাকায় আজ সকালে জল ও খাবারের অভাবে লাইন অবরোধ করেন যাত্রীরা। অভিযোগ, শৌচাগারে জল তো ছিলই না, পানীয় জলের সরবরাহও ছিল না ট্রেনে। মহারাষ্ট্রের পানভেল থেকে জৌনপুরগামী শ্রমিক স্পেশাল গত কাল কাশীর কাছে প্রায় আট ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকে। ওই ট্রেনে পচা খাবার দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ট্রেনে কেন জল ছিল না, তা খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছে রেল মন্ত্রক। মন্ত্রক জানিয়েছে, ১ মে থেকে চালু হওয়া শ্রমিক স্পেশালের মাধ্যমে ইতিমধ্যে ৩৫ লক্ষ শ্রমিক নিজেদের রাজ্যে ফিরেছেন। আগামী দশ দিনে আরও ৩৫ লক্ষ শ্রমিক যাতে ঘরে ফিরতে পারেন সেই জন্য ২৬০০ ট্রেন চালানোর পরিকল্পনা নিয়েছে রেল।

অন্য বিষয়গুলি:

Migrant Workers Shramik Special Train Gorakhpur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE