মাটিতে বসে থাকা শ্রমিকদের উপর জীবাণুনাশক ছড়ানো হচ্ছে। ছবি: ভিডিয়ো গ্র্যাব।
রাস্তার একপাশে মাটির উপর উবু হয়ে বসে রয়েছেন একদল মানুষ। পিঠ থেকে ব্যাগপত্র পর্যন্ত নামানোর সুযোগ পাননি তাঁরা। সেই অবস্থাতেই তিন দিক থেকে তাঁদের উপর নির্বিচারে জীবাণুনাশক স্প্রে করা হচ্ছে। যে স্বাস্থ্যকর্মীরা জীবাণুনাশক স্প্রে করছেন, বিশেষ পোশাকে পা থেকে মাথা পর্যন্ত ঢাকা রয়েছে তাঁদের। কিন্তু পরনের জামাটুকু ছাড়া আর কোনও সুরক্ষার আবরণ নেই মাটিতে বসে থাকা মানুষগুলির শরীরে। জীবাণুনাশকে ভিজতে ভিজতেই কেউ রুমালে মুখ ঢেকে রেখেছেন। কেউ আবার নিজে ভিজছেন, কিন্তু হাত বাড়িয়ে বাচ্চার চোখ দু’টি ঢেকে রেখেছেন, যাতে জীবাণুনাশক কোনও ভাবে তার চোখে প্রবেশ না করে।
নোভেল করোনাভাইরাসের আতঙ্কে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পরিযায়ী শ্রমিকরা যখন ঘরে ফেরার আপ্রাণ চেষ্টা করছেন, ঠিক সেইসময় সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে যোগীর রাজ্য থেকে এমনই ঘটনা সামনে এল। ঘরে ফেরা শ্রমিকদের জীবাণুমুক্ত করতেই এমন পদক্ষেপ করা হয়েছে বলে রাজ্য সরকারের তরফে যদিও সাফাই দেওয়া হয়েছে। কিন্তু গোটা ঘটনায় তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছে উত্তরপ্রদেশের যোগী আদিত্যনাথের সরকার। তাদের বিরুদ্ধে ‘অমানবিক’ আচরণের অভিযোগ তুলেছেন নেটাগরিক ও রাজনীতিকদের একাংশ।
সম্প্রতি বরেলীর একটি চেকপয়েন্টের কাছে এই ঘটনা ঘটেছে বলে খবর। জানা গিয়েছে, রাজ্য সরকারের বন্দোবস্ত করা বাসে চেপে দিল্লি, হরিয়ানা এবং নয়ডা থেকে ওই সমস্ত মানুষ ফিরেছিলেন। কিন্তু বাস থেকে নামতেই বাড়ি ফিরতে দেওয়া হয়নি তাঁদের। বরং মহিলা, শিশু সমেত ওই শ্রমিকদের রাস্তার এক পাশে উবু হয়ে বসিয়ে দেওয়া হয়। পিঠের ব্যাগপত্রও নামানোর সুযোগ দেওয়া হয়নি তাঁদের। সেই অবস্থাতেই হোস পাইপ থেকে জীবাণুনাশক স্প্রে করা হয় তাঁদের উপর।
Mass migrants labours are disinfected by spraying sanitizer in Uttar Pradesh. This is inhuman. Migrants are treated like beats. Why this same method was not used when #Covid_19 infected & suspected were brought in India at every airport? Does this country belongs to rich only ? pic.twitter.com/jvXJa4u75r
— Sudhir Suryawanshi (@ss_suryawanshi) March 30, 2020
এই ভিডিয়োই সামনে এসেছে।
আরও পড়ুন: করোনা সাহায্যে হাত গুটিয়ে এঁরা অনেকে, দিলেনও অবশ্য অনেকেই
স্বাস্থ্য দফতরের কর্মী এবং পুলিশের উপস্থিতিতেই গোট ঘটনা ঘটে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘটনার যে ভিডিয়ো সামনে এসেছে, তাতে এক পুলিশকর্মীকে বলতে শোনা যায়, ‘‘চোখ বন্ধ কর। বাচ্চাদের চোখ ঢেকে রাখো।’’ সেটি নিয়ে ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় তীব্র সমালোচনা শুরু হয়েছে। নেটাগরিকদের মধ্যে কেউ কেউ প্রশ্ন তুলেছেন, ‘‘শ্রমিক বলেই কি এমন আচরণ? তা না হলে, কোভিড-১৯ আক্রান্ত দেশ থেকে যখন প্রবাসী ভারতীয়দের ফিরিয়ে আনা হল, বিমানবন্দরে তাঁদের সঙ্গে এমন আচরণ করা হল না কেন? এই দেশ কি শুধু ধনীদের?’’ কেউ কেউ আবার প্রশ্ন তুলেছেন, ‘‘এ ভাবে ভাইরাস নির্মূল করতে চাইছেন, নাকি নিরীহ মানুষগুলোকে?’’
Who r u trying to kill, Corona or humans? Migrant labourers and their families were forced to take bath in chemical solution upon their entry in Bareilly. @Uppolice@bareillytraffic @Benarasiyaa @shaileshNBT pic.twitter.com/JVGSvGqONm
— Kanwardeep singh (@KanwardeepsTOI) March 30, 2020
Migrant labourers being sprayed with chemicals in Bareilly.
— Cow Momma (@Cow__Momma) March 30, 2020
That is how India treats its most vulnerable during #CoronavirusOutbreak
DON’T TELL ME TO STOP QUESTIONING THE GOVT. anymore!
Not after this.
pic.twitter.com/rbk9z4iDhC
যোগী সরকারের তীব্র সমালোচনা নেটাগরিকদের।
বিষয়টি নিয়ে উত্তরপ্রদেশ সরকারের বিরুদ্ধে টুইটারে সরব হন কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরাও। তিনি লেখেন, ‘‘উত্তরপ্রদেশ সরকারের কাছে অনুরোধ, এই বিপদের সময়ে সকলকে একজোট হয়ে লড়তে হবে। দয়া করে এমন অমানবিক আচরণ করবেন না। এই সমস্ত শ্রমিকদের এমনিতেই অনেক কষ্ট সহ্য করতে হয়েছে। ওঁদের রাসায়নিক দিয়ে স্নান করাবেন না। এতে ওঁদের ভাল না হয়ে শারীরিক ক্ষতি হতে পারে।’’
यूपी सरकार से गुजारिश है कि हम सब मिलकर इस आपदा के खिलाफ लड़ रहे हैं लेकिन कृपा करके ऐसे अमानवीय काम मत करिए।
— Priyanka Gandhi Vadra (@priyankagandhi) March 30, 2020
मजदूरों ने पहले से ही बहुत दुख झेल लिए हैं। उनको केमिकल डाल कर इस तरह नहलाइए मत। इससे उनका बचाव नहीं होगा बल्कि उनकी सेहत के लिए और खतरे पैदा हो जाएंगे। pic.twitter.com/ftovaFHR5q
প্রিয়ঙ্কা গাঁধীর টুইট।
আরও পড়ুন: লকডাউনের শহরে ত্রাণ বিলি নিয়ে বোমাবাজি, ইটবৃষ্টি, রণক্ষেত্র গার্ডেনরিচ
যদিও রাসায়নিক ব্যবহারের কথা অস্বীকার করেছেন বরেলীতে কোভিড-১৯-এর দায়িত্বে থাকা নোডাল অফিসার অশোক গৌতম। তিনি বলেন স্যানিটাইজার এবং জলের সঙ্গে ক্লোরিন মিশিয়ে স্নান করানো হয় ওই শ্রমিকদের। কিন্তু পিঠের ব্যাগপত্র না নামাতে দিয়ে, রাস্তার উপর বসিয়ে এ ভাবে জীবাণুনাশক স্প্রে করা হল কেন? জবাবে অশোক গৌতম বলেন, ‘‘সরকারের পাঠানো বাসে চেপে বহু মানুষ ফিরছিলেন। ওঁদের জীবাণুমুক্ত করা প্রয়োজন ছিল। জীবাণুনাশক স্প্রে করার সময় ওঁদের চোখ বন্ধ রাখতে বলেছিলাম। ওঁরা ভিজে গিয়েছিলেন। আমরা তেমনটাই চেয়েছিলাম, যাতে জামা-কাপড়ে থাকা জীবাণুও মরে যায়।’’
সমালোচনার মুখে পড়ে বিষয়টি নিয়ে রাজ্য সরকারও নড়েচড়ে বসেছে। বলা হয়েছে, ‘‘বরেলীর জেলাশাসকের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে অতি উৎসাহ দেখাচ্ছেন কিছু লোকজন। যে আধিকারিক এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত, তাঁর বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা হচ্ছে।’’
This is Kerala, where agencies are mass ‘spraying’ people crossing borders. But all the outrage is reserved for UP, because a saffron clad monk of the BJP is the Chief Minister and is doing a good job!#IndiaFightsCorona while ‘The Lobby’ fights India...pic.twitter.com/FWCUxWbl5z
— Amit Malviya (@amitmalviya) March 30, 2020
অমিত মালব্যর টুইট।
আবার উত্তরপ্রদেশ বলেই বিষয়টি নিয়ে হইচই করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন বিজেপি নেতা অমিত মালব্য। কেরলে ভিন্ রাজ্য থেকে আসা মানুষের উপর জীবাণুনাশক স্প্রে করার একটি ভিডিয়ো তুলে ধরে টুইটারে তিনি লেখেন, ‘‘কেরলেও সীমানা পেরিয়ে আসা মানুষের উপর জীবাণুনাশক স্প্রে করা হচ্ছে। কিন্তু যত রাগ শুধু উত্তরপ্রদেশ নিয়ে। কারণ বিজেপির গেরুয়া বসনধারী এক সন্ন্যাসী সেখানকার মুখ্যমন্ত্রী এবং তিনি ভাল কাজ করছেন। ভারত করোনার বিরুদ্ধে লড়ছে। আর কিছু মানুষ ভারতের বিরুদ্ধে লড়ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy