আইএনএস জলাশ্ব। —ফাইল চিত্র।
দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৩০ হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছে ইতিমধ্যেই। তার মধ্যেই উপসাগরীয় দেশে আটকে পড়া ভারতীয়দের উদ্ধার করে আনার তোড়জোড় শুরু হল। নৌবাহিনীর তিনটি জাহাজ এই উদ্ধারকাজে শামিল হচ্ছে। তাতে শামিল রয়েছে নৌবাহিনীর দ্বিতীয় বৃহত্তম ট্যাঙ্কবাহী জাহাজ আইএনএস জলাশ্বও। করোনা পরিস্থিতিতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা যেহেতু অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, তাই জাহাজগুলিতে প্রয়োজনীয় রদবদল ঘটানো হচ্ছে, যাতে একে অপরের সংস্পর্শে না আসেন কোনও যাত্রী। জাহাজে আলাদা কোয়রান্টিন সেন্টারের ব্যবস্থাও থাকছে। যাত্রীদের স্বাস্থ্যের উপর নজরদারি চালানোর জন্য থাকছে চিকিৎসকদের একটি দলও।
কর্মসূত্রে এই মুহূর্তে যত ভারতীয় বিদেশে রয়েছেন, তার মধ্যে ৭০ শতাংশই রয়েছেন সংযুক্ত আমিরশাহি, সৌদি আরব, কুয়েত, ওমান, কাতার এবং বাহরিনে। উদ্ধারকার্যের প্রথম পর্যায়ে কাদের দেশে ফেরানো যায় তা নিয়ে ইতিমধ্যেই কাজ শুরু করে দিয়েছে সেখানকার ভারতীয় দূতাবাসগুলি। দিল্লি সূত্রে জানা গিয়েছে, যে সমস্ত পরিযায়ী শ্রমিকের ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছে বা শেষ হওয়ার মুখে, প্রথম পর্যায়ে তাঁদেরকেই উদ্ধার করে আনা হবে। মহিলা, পুরুষ, শিশু এবং বয়স্কদের জন্য জাহাজে আলাদা আলাদা ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তবে আগে তাঁদের সকলের কোভিড-১৯ পরীক্ষা করা হবে। যাঁরা সংক্রমিত নন, তাঁদেরকেই জাহাজে তোলা হবে।
নৌবাহিনীর এক অফিসারকে উদ্ধৃত করে একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ‘‘উদ্ধারকার্য চালাতে গিয়ে এর আগে বিপত্তি বাধিয়েছিল মার্কিন ও ফরাসি নৌবাহিনী। ডাক্তারি পরীক্ষা না করিয়ে জাহাজে তোলায় দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়েছিল সংক্রমণ। তাই করোনা পরীক্ষা ছাড়া কাউকে জাহাজে না তোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। জাহাজের নীচের ডেকে মহিলা, শিশু এবং বয়স্কদের রাখা হবে। উপরের ডেক এবং খোলা জায়গায় থাকবেন পুরুষরা। প্রত্যেকের মধ্যে যাতে নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় থাকে, এই মুহূর্তে জাহাজে তার কাজ চলছে। অতিরিক্ত খাবার এবং ওষুধ মজুত করা হচ্ছে, যাতে যাত্রাপথে অসুবিধায় পড়তে না হয়।’’
আরও পড়ুন: মনমোহন সিংহের সঙ্গে পরামর্শ করুন, ঋণ ‘মকুব’ নিয়ে রাহুলকে কটাক্ষ সীতারামনের
আরও পড়ুন: করোনা-হানায় মহিলাদের তুলনায় পুরুষরাই বেশি মারা যাচ্ছেন কেন?
ভাইজাগ, কোচি এবং কারওয়ার থেকে এই তিনটি জাহাজ ছাড়বে বলে সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন নৌবাহিনীর অন্য এক অফিসার। সরকারের তরফে সবুজ সঙ্কেত মিললেই রওনা দেবে জাহাজগুলি। তবে শুধুমাত্র নৌবাহিনীই নয়, বায়ুসেনা এবং এয়ার ইন্ডিয়ার তরফেও উপসাগরীয় দেশ থেকে ভারতীয়দের ফিরিয়ে আনার প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে। একসঙ্গে ১০০ যাত্রী পরিবহণে সক্ষম বায়ুসেনার ১১-সি-১৭ গ্লোবমাস্টার বিমানকে এই উদ্ধারকাজে নামানো হতে পারে। এ ছাড়াও এয়ার ইন্ডিয়ার তরফে বিশেষ কিছু বিমান পাঠানো হতে পারে। সবমিলিয়ে ১ লক্ষের বেশি ভারতীয়কে উপসাগরীয় দেশ থেকে উদ্ধার করে আনার পরিকল্পনা রয়েছে।
একসঙ্গে নৌ বাহিনী ও বায়ু সেনাকে নিয়ে সাম্প্রতিককালে এত বড় উদ্ধারকাজ চালানোর পরিকল্পনা গৃহীত হয়নি। তবে দেশে ফেরা মাত্র বাড়ি পাঠানো হবে না কাউকেই। বরং বিদেশ থেকে আসা প্রত্যেককে দু’সপ্তাহ কোয়রান্টিনে রাখা হবে। সংক্রমিত না হলে বা সংক্রমণের উপসর্গ না থাকলে তবেই তাঁদের বাড়ি পাঠানো হবে। এটাও সরকারের কাছে একটা বড় চ্যালেঞ্জ হতে চলেছে বলে ধারণা বিশেষজ্ঞদের। কেরলের মোট জনসংখ্যার একটা বড় অংশ যেহেতু এই সব উপসাগরীয় দেশগুলিতে রয়েছে, তাঁদের পুনর্বাসন দিতে ইতিমধ্যেই প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে সেখানে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব গোটা প্রক্রিয়া যাতে সম্পন্ন হয় তার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠিও দিয়েছেন পিনারাই বিজয়ন। অন্য রাজ্যগুলিকেও প্রস্তুত থাকতে নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy