Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Delta Variant

Delta variant: বঙ্গে সক্রিয় ডেল্টা, সতর্কবার্তা কেন্দ্রের

জানুয়ারিতে যে পরীক্ষা হয়েছে, সেখানে অধিকাংশ আক্রান্তের শরীরে বিএ.২ প্রজাতি পাওয়া গিয়েছে। যার অর্থ, গোষ্ঠী সংক্রমণের জন্য ওই প্রজাতি দায়ী।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৮ জানুয়ারি ২০২২ ০৪:৫৪
Share: Save:

পশ্চিমবঙ্গ, উত্তরপ্রদেশ, দিল্লি, মহারাষ্ট্রের মতো রাজ্যে করোনা সংক্রমণ আগের থেকে কিছুটা হলেও কমেছে বলে দাবি করল স্বাস্থ্য মন্ত্রক। তবে দেশের অধিকাংশ রাজ্যে সংক্রমণের প্রধান প্রজাতি হিসাবে ওমিক্রনকে চিহ্নিত করলেও, ওড়িশা, পশ্চিমবঙ্গ, মহারাষ্ট্রের মতো রাজ্যে এখন ডেল্টা প্রজাতি সক্রিয় রয়েছে বলে সতর্ক করে দিল কেন্দ্র। সেই কারণে ওই সব রাজ্যের উদ্দেশে কেন্দ্রের হুঁশিয়ারি, সংক্রমণের সব ঘটনাকেই ওমিক্রনের কারণে যেন ধরে না নেওয়া হয়। যে হেতু ওই সব রাজ্যে ডেল্টা প্রজাতি সক্রিয় রয়েছে এবং ডেল্টায় আক্রান্তদের এখনও নানা ধরনের গুরুতর উপসর্গ দেখা যাচ্ছে, সেই কারণে ওই সব রাজ্যকে প্রতিটি সংক্রমণের ঘটনাকে উপসর্গের ভিত্তিতে আলাদা করে গুরুত্ব দিয়ে দেখার আর্জি জানিয়েছে কেন্দ্র।

গত এক মাসের বেশি সময় ধরে দেশে সংক্রমণ তৃতীয় ঢেউ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বর্তমানে দেশে সংক্রমণের হার প্রায় ১৭ শতাংশ। অর্থাৎ প্রতি একশো জনে পরীক্ষা করালে আক্রান্ত ধরা পড়ছেন ১৭ জন। দেশে আজকের দিনে প্রায় দু’লক্ষ করোনা সংক্রমিত রোগী রয়েছেন বলে জানিয়েছে কেন্দ্র। আজ স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে, গোড়ায় যে রাজ্যগুলিতে সংক্রমণের তৃতীয় ঢেউ প্রবল আকার নিয়েছিল (যেমন পশ্চিমবঙ্গ, মহারাষ্ট্র, দিল্লি উত্তরপ্রদেশ), সেই রাজ্যগুলিতে সংক্রমণের হার অনেকটাই কমার ইঙ্গিত দিতে শুরু করেছে। যেমন পশ্চিমবঙ্গে ১৪ জানুয়ারি থেকে ২০ জানুয়ারির সপ্তাহে সংক্রমণের হার ছিল ২৩.৮ শতাংশ। কিন্তু গত সাত দিনে পশ্চিমবঙ্গে তা নেমে দাঁড়িয়েছে ৯.৫ শতাংশে। দিল্লির ক্ষেত্রেও যেখানে সংক্রমণের হার ২৯.১ শতাংশ (১৪ জানুয়ারি-২০ জানুয়ারি) থেকে কমে চলতি সপ্তাহে দাঁড়িয়েছে ১৪.৭ শতাংশে। তেমনই স্বাস্থ্য মন্ত্রকের চিন্তা বাড়িয়ে সংক্রমণ সূচক বাড়ার ইঙ্গিত দিয়েছে কেরল, কর্নাটক, গুজরাতের মতো রাজ্যগুলি। কেরল ও গুজরাতে গত ১৩ জানুয়ারি-২০ জানুয়ারির সপ্তাহে সংক্রমণের হার ছিল যথাক্রমে ৩১.৩৩ শতাংশ ও ১১.৬২ শতাংশ।

সেখানে ওই দুই রাজ্যে সংক্রমণ বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ৪৯.৮৬ শতাংশ ও ১৫ শতাংশ। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের যুগ্মসচিব লব আগরওয়ালের কথায়, ‘‘কিছু রাজ্যে সূচক ওপরে ওঠা বন্ধ করে নীচে নামার ইঙ্গিত দিলেও, বেশ কিছু রাজ্যে সংক্রমণের সূচক ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছে। ফলে সব মিলিয়ে দেশের সার্বিক সংক্রমণের ছবিটি অনেকটাই এক জায়গায় রয়েছে।’’ স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে, এখনও দেশের ৪০০টি জেলায় সংক্রমণের হার দশ শতাংশের বেশি। ওই তালিকায় শীর্ষে রয়েছে মহারাষ্ট্র। ওই রাজ্যের ৩৩টি জেলায় সংক্রমণের হার ১০ শতাংশের বেশি। তালিকায় ১৮টি জেলা রয়েছে পশ্চিমবঙ্গের।

সংক্রমণের প্রশ্নে ওমিক্রনই যে এখন প্রধান দুশ্চিন্তার কারণ, তা আজ স্পষ্ট করে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক। আজ ন্যাশনাল সেন্টার ফর ডিজ়িজ কন্ট্রোলের প্রধান সুজিত সিংহ জানান, গত ডিসেম্বর মাসে জিনোম সিকোয়েন্সে দেশের মধ্যে ওমিক্রনের বিএ.১ প্রজাতি বেশি পাওয়া যাচ্ছিল। মূলত যাঁরা বিদেশ থেকে আসছিলেন, তাঁদের শরীরে ওই প্রজাতির ভাইরাস বেশি পাওয়া যাচ্ছিল। কিন্তু জানুয়ারি মাসে যে পরীক্ষা হয়েছে, সেখানে অধিকাংশ আক্রান্তের শরীরে বিএ.২ প্রজাতি পাওয়া গিয়েছে। যার অর্থ, গোষ্ঠী পর্যায়ে যে সংক্রমণ ছড়িয়েছে, তার জন্য ওমিক্রনের ওই প্রজাতি দায়ী। সুজিত সিংহ আরও বলেন, দেশে জানুয়ারি মাসে যে জিনোম পরীক্ষা হয়েছে তাতে ৭৫ শতাংশই আক্রান্ত হয়েছেন ওমিক্রনের কারণে। যার অর্থ, এখনও দেশের বিভিন্ন অংশে ডেল্টা প্রজাতি সক্রিয় রয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা, দিল্লিতে ডেল্টা প্রজাতির উপস্থিতি এখনও লক্ষ্য করা যাচ্ছে।’’ তাই ওই সব রাজ্যে করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসার ক্ষেত্রে সকলেই ওমিক্রন আক্রান্ত না ধরে বরং উপসর্গের ভিত্তিতে পরীক্ষা করে চিকিৎসার উপরে জোর দিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রক।

ধারাবাহিক ভাবে টিকাকরণ চালিয়ে যাওয়ায় দ্বিতীয় ঢেউয়ের তুলানায় তৃতীয়য় মৃত্যুর সংখ্যা কমেছে বলে আজ ফের দাবি করেছে কেন্দ্র। লব আগরওয়াল বলেন, গত বছরের ৭ মে সংক্রমণের প্রশ্নে দ্বিতীয় ঢেউ শিখরে ছুঁয়েছিল। সে দিন দেশে নতুন করে আক্রান্ত হন ৪.১৪ লক্ষ ব্যক্তি। আর মারা যান ৩,৬৭৯ জন। সেই সময়ে দেশের জনসংখ্যার মাত্র তিন শতাংশ টিকার দুই ডোজ় নিয়েছিলেন। সেখানে এ বারের ঢেউয়ে সবচেয়ে বেশি আক্রান্তের সংখ্যা দেখা গিয়েছে গত ২১ জানুয়ারি। সে দিন দেশে আক্রান্ত হন ৩.৪৭ লক্ষ ব্যক্তি। কিন্তু মারা যান ৪৩৫ জন। লব জানান, যাঁরা মারা গিয়েছেন, তাঁদের অধিকাংশই দেখা গিয়েছে টিকার দুই ডোজ় নেননি। লবের কথায়, ‘‘করোনায় হাসপাতালে ভর্তি ও মৃত্যু রুখতে এখনও আমাদের সেরা অস্ত্রই হল টিকাকরণ।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Delta Variant Coronavirus COVID-19 Omicron
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy