Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪
Coronavirus

রোগের পরীক্ষা ও আর্থিক সুরাহাই চ্যালেঞ্জ কেন্দ্রের

দেশে করোনায় আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা যে ভাবে লাফিয়ে বাড়ছে, তাতে এখনই যে লকডাউন তোলা কঠিন, তা মানছেন অনেক মুখ্যমন্ত্রী।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৩ এপ্রিল ২০২০ ০৪:১৪
Share: Save:

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক শেষে শনিবারই নিজের-নিজের মতো করে লকডাউনের মেয়াদ বৃদ্ধির কথা ঘোষণা করেছে পশ্চিমবঙ্গ-সহ বিভিন্ন রাজ্য। কিন্তু ১৪ এপ্রিলের পরে কেন্দ্রের তরফে দেশ জুড়ে লকডাউনের সময়সীমা আর বাড়ানো হবে কি না, এখনও তা নিয়ে মুখ খোলেননি নরেন্দ্র মোদী। তাই দেশজুড়ে লকডাউনের মেয়াদ আরও বাড়বে কি না, বাড়লে কত দিন, নাকি এখন থেকেই ধাপে ধাপে তা শিথিল করার উপায় খোঁজা হবে, সেই ছবি মোটেই স্পষ্ট নয়।

দেশে করোনায় আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা যে ভাবে লাফিয়ে বাড়ছে, তাতে এখনই যে লকডাউন তোলা কঠিন, তা মানছেন অনেক মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু শুধু ঘরবন্দি করে রাখাই যে সমাধান নয়, তা-ও মনে করাচ্ছেন বিরোধীরা। কংগ্রেস নেতা কমল নাথ, সমাজবাদী পার্টির অখিলেশ যাদব থেকে সিপিএমের সীতারাম ইয়েচুরি— সকলেরই বক্তব্য, শুধু দীর্ঘদিন ঘরবন্দি রাখলেই করোনার বিরুদ্ধে জয় আসবে না। তার জন্য জরুরি ওই রোগে সম্ভাব্য আক্রান্তদের খুঁজে যত বেশি সম্ভব শারীরিক পরীক্ষা, আক্রান্ত ও তাঁদের সংস্পর্শে আসা লোকেদের চিহ্নিতকরণ এবং এঁদের সকলের চিকিৎসা ও নিভৃতবাসের বন্দোবস্ত করা। যুক্তি, পরীক্ষা কম হলে, রোগের গতিবিধি বোঝা যাবে না। স্পষ্ট হবে না, কবে থেকে এবং কী ভাবে ধাপে ধাপে তোলা যাবে লকডাউন। দ্বিতীয়ত, বহু করোনা রোগী চিহ্নিত না-হয়েই থেকে যাবেন। তখন লকডাউন উঠে গেলে ঝড়ের বেগে রোগ ছড়ানোর সম্ভাবনা।

করোনা-সঙ্কট থেকে এমনিতেই ধুঁকতে থাকা দেশের অর্থনীতিকে কী ভাবে মোদী সরকার সামাল দেবে, সেই পরিকল্পনাও স্পষ্ট নয় এখনও। বিশ্ব ব্যাঙ্ক, আইএমএফ থেকে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ইতিমধ্যেই হুঁশিয়ারি দিয়েছে। শিল্পমহল থেকে কর্মী সংগঠন— উদ্বিগ্ন সকলেই। খোদ মোদীও কাল বলেছেন, গোড়ায় সরকার ‘জীবন থাকলে তবে জীবিকা’র নীতিতে হাঁটলেও এখন ‘জীবন এবং জীবিকা’কে পাশাপাশি গুরুত্ব দেওয়ার কথা ভাবছে। লকডাউনের মেয়াদ যত দীর্ঘ হবে, তত কঠিন হবে অর্থনীতিকে টেনে তোলা। সংশ্লিষ্ট সূত্রে খবর, সেই কারণেই পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রেখে কোন-কোন কাজ দ্রুত শুরুর অনুমতি দেওয়া যায়, তার নীল নকশা তৈরির চেষ্টা করছে কেন্দ্র। এ বিষয়ে সুপারিশ এসেছে মমতা-সহ বিভিন্ন মুখ্যমন্ত্রীর তরফ থেকেও।

করোনা-আক্রান্তের সংখ্যা বিচারে দেশকে লাল, কমলা এবং সবুজ রঙে ভাগ করে অল্প-অল্প করে কাজ শুরুর পক্ষপাতী অনেকে। যেখানে করোনার চিহ্ন মেলেনি, সুপারিশ এসেছে সেই সবুজ অঞ্চলে পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রেখে কৃষি, শিল্পের কাজকর্ম শুরুর। সেই সঙ্গে যে সমস্ত শিল্পে কম কর্মী দিয়েও উৎপাদন সম্ভব, সেখানে কী ভাবে কাজ শুরু করা যায়, তা নিয়ে ভাবনাচিন্তা চলছে। ছোট শিল্প, ইট ভাটা, আটা মিল ইত্যাদি কী ভাবে দ্রুত চালু করা যায়, দেখা হচ্ছে তা-ও। মুখ্যমন্ত্রীদের তরফে প্রস্তাব, ফসল কাটাকে এ বারের মতো ‘১০০ দিনের কাজ’-এর আওতায় আনা হোক।

কেন্দ্রের আশ্বাস, দেশে ন’মাসের খাবার মজুত আছে। ঘরবন্দি থাকাকালীন যাতে বাড়িতে খাবারে টান না-পড়ে, তার জন্য সারা দেশে চিহ্নিত করা হচ্ছে ২০ লক্ষ ছোট মুদি-দোকানকে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে খবর, আতান্তরে পড়া ছোট শিল্প, কাজ খোয়ানো কর্মীদের জীবিকা নিশ্চিত করতে ভাবনা-চিন্তা চলছে ত্রাণ প্যাকেজ-সহ দশ দফা পরিকল্পনার। দ্রুত যা চূড়ান্ত করতে এখন থেকে দফতরে আসতে বলা হয়েছে সমস্ত মন্ত্রী এবং উচ্চপদস্থ (যুগ্ম সচিব ও তার উপরে) আমলাদের। রাজস্বে টান থাকায় কেন্দ্রের কাছে সহায়তা দাবি করছে বিভিন্ন রাজ্য। সংশ্লিষ্ট সূত্রে খবর, রাজকোষের স্বাস্থ্য অন্তত কিছুটা ফেরাতে মদ বিক্রি চালু করার আর্জি জানাচ্ছে তারা।

(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Narendra Modi
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy