গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
করোনা- সংক্রমণ শুরু হওয়া ইস্তক দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধির নিরিখে বিশ্বরেকর্ড গড়ল ভারত।
গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনা সংক্রমিত হলেন আরও ৭৮ হাজার ৭৬১ জন। এর আগে বিশ্বের অন্য কোনও দেশে এক দিনে এত বেশি সংখ্যক মানুষ আক্রান্ত হয়নি। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে, ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে ৯৪৮ জনের। গত চার দিন যাবৎ দেশে একটানা রোজ করোনা আক্রান্ত হচ্ছেন ৭০ হাজারের বেশি মানুষ। সমীক্ষা বলছে, ভারতে কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা ৩০ লক্ষ ছোঁয়ার এক সপ্তাহের মধ্যে তা ৩৫ লক্ষ পেরিয়ে গিয়েছে। ২০ লক্ষ থেকে ৩০ লক্ষে পৌঁছে গিয়েছে ১৬ দিনে। এবং ১০ লক্ষ থেকে ২০ লক্ষে পৌঁছেছিল ২১ দিনে। এ দিকে, আক্রান্তের সংখ্যা ১ লক্ষ ছুঁতে যেখানে ১১০ দিন লাগে, সেখানে মাত্র আরও ৫৯ দিনে তা ১০ লক্ষের গণ্ডি ছাড়িয়ে গিয়েছে। যার ব্যাখ্যায় বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভারতে সংক্রমণ বৃদ্ধির গতি সর্বোচ্চ। আমেরিকায় গড়ে দিনে সংক্রমণ বাড়ছে ০.৯ শতাংশ (সাত দিনের গড়)। ব্রাজিলে বাড়ছে ১.০ শতাংশ সেখানে ভারতে বাড়ছে ২.২ শতাংশ যা সারা বিশ্বের দৈনিক সংক্রমণ বৃদ্ধির হারের (১.১ শতাংশ) থেকেও বেশি।
গত ১০ দিনের যা কোভিড-চিত্র, তাতে গোটা দেশ না-হলেও অন্তত ১০টি রাজ্য দ্বিতীয় দফায় সংক্রমণ শুরুর মুখে দাঁড়িয়ে রয়েছে বলে আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের। তাঁরা বলছেন, এক দিকে যেমন পরীক্ষার হার বাড়ায় সংক্রমণ বাড়ছে, তেমনি ধাপে ধাপে লকডাউন তুলে দেওয়াকেও এর কারণ বলে মনে করছেন তাঁরা। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক আজ জানিয়েছে, এক দিনে ১০ লক্ষের বেশি করোনা পরীক্ষার রেকর্ড ছুঁয়েছে ভারত। যদিও ‘দ্য ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল
রিসার্চ’-এর সংক্রামক রোগ সংক্রান্ত বিভাগের প্রধান সমীরণ পাণ্ডা বলেছেন, ‘‘ব্যবসা-বাণিজ্য চালু হয়ে যাওয়ায় রাস্তাঘাটে মানুষের চলাফেরা বেড়েছে। সুরক্ষাবিধি মেনে সকলেই যে সঠিক আচরণ করছেন এমনটা নয়। এই সবই সংক্রমণ বৃদ্ধির কারণ।’’ ভাইরোলজিস্ট শাহিদ জামিলের কথায়, ‘‘সরকার খাতায়-কলমে বেশি সুস্থতার হার ও কম মৃত্যুহার দেখিয়ে এক ধরনের সন্তুষ্টি লাভের চেষ্টা করেছে। কিন্তু ভাবার বিষয়, এ দেশে দৈনিক সংক্রমণের হার সর্বাধিক। সংক্রমণের মাপকাঠিতে আমরা এখন তৃতীয় স্থানে। এর পরে মৃত্যুর নিরিখেও তৃতীয় স্থানে উঠে আসব।’’
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আজ ‘মন কি বাত’-এ আসন্ন উৎসবের মরসুমে দেশবাসীকে সচেতন থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। যদিও তাঁর মতে, সাধারণ মানুষের মধ্যে ইতিমধ্যেই একটা সচেতনতা তৈরি হয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘করোনা তখনই দূর হবে যখন আপনারা সুরক্ষাবিধি মেনে চলবেন। এটা উৎসবের সময়। ফলে ২ মিটার দূরত্বের বিধি প্রত্যেককেই মানতে হবে। তবে কোভিডের কারণে এখন প্রত্যেকেই যথেষ্ট সচেতন।’’
এরই মধ্যে গত কাল কেন্দ্র চতুর্থ পর্যায়ের আনলকের নির্দেশিকা দেওয়ার পরে আজ সোমবার ও মঙ্গলবার শহরাঞ্চলে দোকান-বাজার বন্ধের নির্দেশ তুলে নিয়েছে হরিয়ানা সরকার। সংক্রমণ ঠেকাতে বহু রাজ্য সরকারই সপ্তাহান্তে লকডাউনের পন্থা বেছেছিল। কিন্তু স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক বলে দিয়েছে, কনটেনমেন্ট জ়োনের বাইরে লকডাউন ঘোষণা করতে হলে কেন্দ্রের অনুমতি নিতে হবে। তার পরেই এক টুইটে সোম-মঙ্গলবারের লকডাউন তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনিল ভিজ।
আজ বরেলীতে সমাজবাদী পার্টির এক কোভিড আক্রান্ত নেতা হাসপাতাল থেকে পালিয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। পুলিশ সূত্রের খবর, শনিবার সন্ধ্যায় জেলা স্তরের নেতা রমন জহুরি দিল্লি-বরেলী-নৈনিতাল হাইওয়ের উপরে একটি সেতু থেকে ঝাঁপ দেন। গত ২৫ অগস্ট করোনা নিয়ে ভর্তি হয়েছিলেন জহুরি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ শনিবার পুলিশকে জানিয়েছেন, তাঁদের এক রোগী কাঁচের জানলা ভেঙে পালিয়েছেন। রবিবার ওই নেতার দেহটি পাওয়া যায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy