ফাইল চিত্র।
সদা সক্রিয় তো বটেই। জনদরদিও। গরিব, সাধারণ মানুষের কথাই তিনি বেশি ভাবেন।
কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউয়ের ধাক্কায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর এই ভাবমূর্তিতেই ধাক্কা লেগেছে বলে সরকার তথা বিজেপি শীর্ষনেতৃত্ব এখন চিন্তিত। পশ্চিমবঙ্গের ভোটে হারের ফলে এমনিতেই নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহরা রাজনৈতিক ভাবে ধাক্কা খেয়েছেন। এক দিকে কোভিড সামলাতে দিশাহীন অবস্থা, অন্য দিকে বাংলার ভোটে হার— এই দুইয়ের ধাক্কা কাটিয়ে এখন কী ভাবে প্রধানমন্ত্রীর ভাবমূর্তি ফেরানো যায়, তা নিয়ে মোদী সরকারের শীর্ষ স্তরে চিন্তাভাবনা শুরু হয়েছে।
সরকারি সূত্রের খবর, প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছে, আগামী ৩০ মে দ্বিতীয় মোদী সরকারের দ্বিতীয় বর্ষপূর্তিকে উপলক্ষ করে ভাবমূর্তি ফেরানোর প্রচার শুরু হবে। কোভিডের জন্য কোনও উচ্চকিত প্রচার হবে না। তবে মূলত ‘কোভিড সেবা’—অর্থাৎ কোভিডের সময় মোদী সরকার কী ভাবে গরিব মানুষের খেয়াল রেখেছে, তা তুলে ধরা হবে। একই সঙ্গে বিদেশ মন্ত্রককেও দূতাবাসগুলির মাধ্যমে বিদেশি সংবাদমাধ্যমের সমালোচনার জবাব দেওয়ার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। যদিও তাতে কতখানি লাভ হবে, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। বিজেপির একাধিক নেতা ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর মত, কোভিড পরিস্থিতি শোধরানো পর্যন্ত অপেক্ষা করা ছাড়া উপায় নেই।
বিরোধীরা অভিযোগ তুলছেন, কোভিড মোকাবিলা নয়, মোদী সরকারের আসল নজর প্রধানমন্ত্রীর ভাবমূর্তি রক্ষার দিকে। কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধীর অভিযোগ, সত্যিটা ধামাচাপা দিয়ে, অক্সিজেনের ঘাটতি অস্বীকার করে, মৃত্যুর সংখ্যা কম দেখিয়ে, কেন্দ্রীয় সরকার এক জনের ‘ফেক’ ভাবমূর্তি রক্ষা করতে সব রকম চেষ্টা করছে। গুরুগ্রামের একটি হাসপাতালে অক্সিজেন ফুরিয়ে যাওয়ায় ডাক্তার-নার্সরা রোগীদের ফেলে চলে গিয়েছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ওই হাসপাতালে ছ’জন রোগীর মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ। রাহুলের বক্তব্য, এ সব শুধু ‘কভার আপ’ নয়, এটা খুন।
কংগ্রেস শাসিত একটি রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, “গত বছর কোভিড অতিমারির সময় প্রায়ই কেন্দ্রীয় সরকার অভিযোগ তুলত, রাজ্যগুলিতে যথেষ্ট কোভিড পরীক্ষা হচ্ছে না। কোভিডের কেস, মৃত্যুর সংখ্যা কমিয়ে দেখানো হচ্ছে। এক বছর পরে কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউয়ে কেন্দ্র নিজেই এ বিষয়ে নীরব। মনে হচ্ছে, মোদী সরকারই চায় না, কোভিডে আক্রান্ত, ও মৃতের আসল সংখ্যা প্রকাশ হোক।”
গত কয়েক দিনে একাধিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ বলেছেন, ভারতে সরকারি পরিসংখ্যানের থেকে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা অনেক বেশি। যে সব রাজ্যে আক্রান্তের সংখ্যা বেশি, সেখানে অনেক জেলাতেই দেখা যাচ্ছে, শ্মশানে যত জন কোভিড রোগীর দেহ দাহ হচ্ছে, তার থেকে মৃতর সংখ্যা অনেক কম। দিল্লি-সহ বহু রাজ্যেই যথেষ্ট কোভিড পরীক্ষা হচ্ছে না বলে অভিযোগ।
দেশের সমালোচনার সঙ্গে বিদেশের সংবাদমাধ্যমেও অভিযোগ উঠেছে, গত দু’-তিন মাসে নরেন্দ্র মোদী কোভিড মোকাবিলার থেকে পশ্চিমবঙ্গের ভোটে জয়কে বেশি প্রাধান্য দিয়েছেন। ফলে কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউ সামলাতে যথেষ্ট প্রস্তুতি নেওয়া হয়নি। বিজেপির এক কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, “কোভিডের পরিস্থিতি যে সঙ্কটজনক, তাতে কোনও সন্দেহ নেই। এরই মধ্যে পশ্চিমবঙ্গে ভোটে দল জিতলে নজর অনেকটাই অন্য দিকে ঘুরে যেত। বলা যেত, কোভিড মোকাবিলায় মোদী সরকারের কাজে মানুষ আস্থা রেখেছে। কিন্তু এখন বিরোধীরাই বলছেন, কোভিডের মোকাবিলায় কেন্দ্র ব্যর্থ বলেই বাংলার মানুষ বিজেপিকে ভোট দেয়নি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy