প্রতীকী ছবি।
শিশু ও অল্পবয়সিদের মধ্যে করোনার সংক্রমণ কতটা ছড়িয়েছে তা জানতে দেশের চার প্রান্ত— দিল্লি, গোরক্ষপুর, ভুবনেশ্বর ও আগরতলার গ্রামীণ এলাকা থেকে নমুনা সংগ্রহ করে সেরো সমীক্ষা চালিয়েছিলেন এমসের চিকিৎসকেরা। তাতে দেখা গিয়েছে, বড়দের সঙ্গে সমান তালে সংক্রমিত হয়েছে ছোটরা। আর একটি সমীক্ষায় ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর) দেখেছে, অন্তঃসত্ত্বা কিংবা সদ্য মা হওয়া মহিলারা করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে অনেক বেশি সংক্রমিত হয়েছেন। বেড়েছে তাঁদের মৃত্যুর হারও। ফলে ভবিষ্যতে গর্ভবতীদের টিকাকরণে সবুজ সঙ্কেত দেওয়ার কথা ভাবছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক।
সেরো সমীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে এমসের গবেষকেরা দাবি করেছেন, তৃতীয় ঢেউয়ে ছোটরা বেশি আক্রান্ত হবে, এই ধারণা অমূলক। কারণ, ছোটদের মধ্যে সংক্রমণ এখনই ভাল মতো ছড়িয়েছে। সংক্রমণের কারণে শরীরে তৈরি হওয়া অ্যান্টিবডি বরং তাদের তৃতীয় ঢেউ থেকে বাঁচাবে। শিশুদের একটি বড় অংশ ইতিমধ্যেই সংক্রমিত হওয়ায় আগামী দিনে ছোটদের মধ্যে করোনা ছড়াবেও কম।
দেশের চারটি কেন্দ্র থেকে প্রায় সাড়ে চার হাজার নমুনা সংগ্রহ করে সমীক্ষাটি চালানো হয়। ছোটদের নিয়ে এমন সমীক্ষা এই প্রথম। দিল্লি এমসের মিডিয়া কোঅর্ডিনেটর বিশ্বনাথ আচারিয়া জানান, এ বছরের ১৫ মার্চ থেকে ১০ জুনের মধ্যে দুই থেকে আঠারো বছরের ৭০০ জন ও আঠারো বছরের বেশি বয়সি ৩৮০৯ জনের রক্তের নমুনা নেওয়া হয়েছিল। দেখা যায়, হরিয়ানার ফরিদাবাদের গ্রামীণ এলাকা থেকে সমীক্ষায় অংশ নেওয়া ছোটদের ৫৯.৩ শতাংশ ইতিমধ্যেই করোনায় সংক্রমিত হয়েছে। গোরক্ষপুরে সমীক্ষায় যোগ দেওয়া দুই থেকে আঠারো বছর
বয়সিদের ৮০.৬ শতাংশই সংক্রমণের শিকার। ওই এলাকায় ১৮ বছরের বেশি বয়সিদের মধ্যে সংক্রমণের হার ৯০.৩ শতাংশ। আগরতলার গ্রামীণ এলাকায় সংক্রমিত হয়েছে ৫১.৯ শতাংশ শিশু। গবেষণায় যুক্ত এমসের চিকিৎসক এস কে কাবরার মতে, আগরতলায় জনজাতিদের গতিবিধি সীমিত হওয়ায় সম্ভবত এঁদের মধ্যে সংক্রমণের হার কম। সংক্রমণের আশঙ্কায় বন্ধ রয়েছে অধিকাংশ রাজ্যের স্কুল-কলেজ। কিন্তু সেরো সমীক্ষা অনুযায়ী, দক্ষিণ দিল্লিতে স্কুলপড়ুয়াদের মধ্যে সংক্রমণের হার ৭৩.৯ শতাংশ। ওই এলাকার আঠারো-ঊর্ধ্বদের মধ্যে সংক্রমণের হার ৭৪.৮ শতাংশ। অর্থাৎ বড়দের সঙ্গে পাল্লা দিয়েই সংক্রমিত হয়েছে ছোটরা। এমসের কমিউনিটি মেডিসিনের চিকিৎসক পুনিত মিশ্রের মতে, যে ভাবে দিল্লির শহর এলাকায় স্কুলপড়ুয়ারা সংক্রমিত হয়েছে, তাতে মনে হয় না স্কুল খুললে কোনও বাড়তি বিপদ হতে পারে।
দ্বিতীয় ঢেউয়ে সংক্রমণের হার বেড়েছে অন্তঃসত্ত্বা এবং সদ্য মায়েদের মধ্যেও। আইসিএমআর জানিয়েছে, ১৫৩০ জন অন্তঃসত্ত্বা ও সদ্য মায়ের উপরে সমীক্ষা চালানো হয়েছিল। প্রথম ঢেউয়ে যেখানে এই দুই শ্রেণির মহিলাদের ১৪.২ শতাংশের মধ্যে উপসর্গ দেখা দিয়েছিল, সেখানে দ্বিতীয় ঢেউয়ে তা দ্বিগুণ (২৮.৭ শতাংশ) হয়েছে। তাঁদের মধ্যে মৃত্যুহার ০.৭ শতাংশ থেকে বেড়ে হয়েছে ৫.৭ শতাংশ। অধিকাংশ মৃত্যুর কারণ নিউমোনিয়া বা শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ছাড়পত্র দিলেও ভারতে এখনও অন্তঃসত্ত্বাদের টিকাকরণ চালু হয়নি। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের এক কর্তার কথায়, ‘‘আইসিএমআরের রিপোর্ট থেকেই স্পষ্ট, অন্তঃসত্ত্বাদের টিকার প্রয়োজন রয়েছে। সরকার এ নিয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy