Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
Coronavirus

কোভিডে কেন আয়ুষ, প্রশ্নের মুখে স্বাস্থ্যমন্ত্রী

প্রোটোকলের কার্যকারিতা নিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রীকেই কাঠগড়ায় তুলল দেশের চিকিৎসকদের সব চেয়ে বড় সংগঠন ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (আইএমএ)। 

প্রশ্নের মুখে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষবর্ধন। —ফাইল চিত্র

প্রশ্নের মুখে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষবর্ধন। —ফাইল চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১০ অক্টোবর ২০২০ ০৬:০৫
Share: Save:

করোনার চিকিৎসা ও প্রতিরোধের অন্যতম পথ হিসেবে অশ্বগন্ধা, চ্যবনপ্রাশ, হলুদ দেওয়া গরম দুধ খাওয়া, যোগব্যায়াম করার পরামর্শ দিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধন। এ নিয়ে দিন দুয়েক আগেই দেশবাসীর জন্য আয়ুষ মন্ত্রকের একটি প্রোটোকল প্রকাশ করেন তিনি। সেই প্রোটোকলের কার্যকারিতা নিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রীকেই কাঠগড়ায় তুলল দেশের চিকিৎসকদের সব চেয়ে বড় সংগঠন ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (আইএমএ)।

হর্ষ বর্ধন নিজেও চিকিৎসক। আজ তাঁকে চিঠি লিখে আইএমএ জানতে চেয়েছে, কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কত জন সতীর্থের আয়ুষের প্রোটোকল অনুযায়ী চিকিৎসা হয়েছে? ওই প্রোটোকল কতটা বিজ্ঞানসম্মত ও সেটির সাফল্য কত দূর প্রমাণিত, তার বিস্তারিত বিবরণ দাবি করেছে সংগঠনটি। তাদের বক্তব্য, স্বাস্থ্যমন্ত্রী জবাব না-দিলে ধরে নিতে হবে, তিনি মানুষকে ধোঁকা দিচ্ছেন।

করোনা রোখার পাশাপাশি উপসর্গহীন বা মৃদু উপসর্গ রয়েছে, এমন সংক্রমিতদের জন্য আয়ুষ মন্ত্রকের ওই চিকিৎসা-প্রোটোকলটি হর্ষ বর্ধন প্রকাশ করার পরেই বিতর্কের সূত্রপাত। আয়ুষ মন্ত্রকের অধীন একাধিক সংস্থা ও আয়ুষ চিকিৎসকেরা কোভিড রোগীদের উপরে ওই পদ্ধতি প্রয়োগ করে সাফল্য পেয়েছেন বলেই তা জারি করা হচ্ছে বলে হর্ষ বর্ধন জানান। পাশাপাশি দাবি করেন, রোগীদের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার ভিত্তিতেও প্রোটোকলটি তৈরি করা হয়েছে। এখানেই প্রশ্ন তুলেছে আইএমএ।

আরও পড়ুন: শারদোৎসবে অসতর্ক হলেই করোনা-সুনামির আশঙ্কা, চিকিৎসকরা সতর্ক করলেন মমতাকে

চিকিৎসক সংগঠনটির যুক্তি, এই প্রোটোকল নিয়ে কি যথেষ্ট গবেষণা হয়েছে? সাধারণত কোনও চিকিৎসা-পদ্ধতিকে ছাড়পত্র দেওয়ার আগে রোগীদের দু’দলে ভাগ করে নিয়ে পরীক্ষা হয়ে থাকে। একটি দলকে প্রকৃত ওষুধ দেওয়া হয়। অন্য দলকে ওষুধের বদলে সাধারণত অন্য কিছু (জল, স্যালাইন— এমন কিছু, যা ওষুধ নয়) দিয়ে শরীরে কী প্রভাব পড়ল, তা খতিয়ে দেখা হয়। এই ধরনের ‘ডবল ব্লাইন্ড কন্ট্রোল’ পরীক্ষায় দু’দলকেই অন্ধকারে রাখা হয়। আখেরে দেখা হয়, কারা ওষুধের গুণে আর কারা মানসিক জোরে সুস্থ হয়ে উঠছেন। আইএমএ-র প্রশ্ন, এ ক্ষেত্রে কি সেই পদ্ধতিতে পরীক্ষা হয়েছে? পর্যাপ্ত সংখ্যক রোগী কি আয়ুষের চিকিৎসায় সেরে উঠেছেন? এমন কোনও ‘সাফল্যের’ বৈজ্ঞানিক প্রমাণ থাকলে তা প্রকাশ্যে আনা হোক। অন্যথায় লাভের চেয়ে ক্ষতির আশঙ্কা বেশি।

আরও পড়ুন: পুজোয় এ বার মেলা-জলসায় বারণ, হবে না কার্নিভ্যালও

এই সূত্রেই আইএমএ বলেছে, গত ছ’মাসে একাধিক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন, যাঁদের অধিকাংশই হাসপাতালে সুস্থ হয়েছেন। কিন্তু তাঁদের মধ্যে কত জনের আয়ুষের প্রোটোকল মেনে চিকিৎসা হয়েছে? একই বিষয়ে কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ টুইটারে লেখেন, ‘‘স্বাস্থ্য মন্ত্রকের এক কর্তা আমায় বলেছেন, মন্ত্রীরা নিজেরাই অ্যালোপথি চিকিৎসায় জোর দেন। আর এখানে ঠিক উল্টো। ভণ্ডামি জিন্দাবাদ!’’ আয়ুষের ওই

প্রোটোকলে আমজনতা বিভ্রান্ত হবেন বলে দাবি করে স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে আইএমএ-র প্রশ্ন, দেশে কোভিড নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব কেন আয়ুষ মন্ত্রককে দেওয়া হচ্ছে না? স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও তাঁর মন্ত্রক অবশ্য এই প্রশ্নবাণের মুখে রাত পর্যন্ত নীরব।

তবে গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী প্রমোদ সবন্ত জানিয়েছেন, আগামী সপ্তাহ থেকেই তাঁর রাজ্যে মৃদু ও মাঝারি উপসর্গের রোগীদের চিকিৎসায় আয়ুষ চিকিৎসকদের নিয়োগ করা হবে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy