ফাইল চিত্র।
সংসদের ভিতরে ঢুকে পড়া জঙ্গিরাও যা করতে পারেনি, এক অদৃশ্য ভাইরাস তাই করে দেখাল। এক নিশ্ছিদ্র দুর্গে পরিণত হয়েছে সংসদভবন। আগামী ১৪ তারিখ থেকে যে বাদল অধিবেশন শুরু হবে, তা নিঃসন্দেহে নজিরবিহীন বলেই মনে করা হচ্ছে। সংসদের রীতি, নিয়ম, বসার ব্যবস্থা, প্রচার মাধ্যমের উপস্থিতি, সেন্ট্রাল হলের প্রথা, ক্যান্টিন ব্যবস্থা— সবই আমূল বদলে দেওয়া হয়েছে কোভিডের কারণে।
প্রবীণ সাংসদদের বক্তব্য, এত করেও নির্ধারিত তারিখ পর্যন্ত অধিবেশন চালানো যাবে কিনা তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। যে ভাবে ভাইরাস ছড়াচ্ছে তাতে, যে কোনও সময় অধিবেশন চলাকালীন কোনও সাংসদ বা কর্মীর করোনা-পজ়িটিভ ধরা পড়তে পারে। সে ক্ষেত্রে অধিবেশন বন্ধ করা ছাড়া উপায় থাকবে না। বিরোধী দলের অবশ্য বক্তব্য, তাতে সরকার পক্ষের কিছু যায় আসে না। তারা বকেয়া বিলগুলি পাশ করানো নিয়েই চিন্তিত। সংসদীয় সূত্রের বক্তব্য, ২৩টি বিল এ বার অধিবেশনে পেশ করার জন্য তালিকাভুক্ত হয়েছে। তার মধ্যে ১৭টি বিল পাশ করানোর জন্য রাখা হয়েছে।
আজ সংসদের অ্যানাক্সি ভবনে সমস্ত সাংসদ যাঁরা উপস্থিত থাকবেন, তাঁদের এবং সংবাদমাধ্যমের কর্মীদের কোভিড টেস্ট করানো হয়। টেস্ট হয় রাজ্যসভার চেয়ারম্যান বেঙ্কাইয়া নায়ডুর। সংক্রমণ এড়াতে গোটা অধিবেশনে কাগজের ব্যবহার যতটা কম করা যায়, তার জন্য বেশির ভাগ নথিই ডিজিটাল মাধ্যমে রাখা হচ্ছে। সাংসদদের কাছে সমস্ত সংসদীয় নথি পাঠানো হবে অনলাইনে। সাংসদেরা দু’টি কক্ষেই ছড়িয়ে-ছিটিয়ে বসবেন। দু’টি আলাদা আলাদা সময়ে রাজ্যসভা এবং লোকসভা হবে। সাংসদেরা দু’টি কক্ষেই থাকবেন। এমনকি বেশ কিছু সাংসদকে বসানো হবে দর্শক গ্যালারিতেও! লোকসভা চলাকালীন সেই কক্ষের বেশ কিছু সাংসদ রাজ্যসভায় বসে অধিবেশন দেখবেন।
ক্যান্টিনে রান্না বন্ধ রাখা হবে। পরিবর্তে প্যাকেটে ড্রাই ফুড সরবরাহ করা হবে। দেড়শো টাকা প্যাকেট। আমিষাশীদের জন্য যাতে থাকবে ফিশ ফ্রাই বা চিকেন কাটলেট। সেন্ট্রাল হলে সাংবাদিক ও কর্মীদের প্রবেশ নিষিদ্ধ।
তাৎপর্যপূর্ণভাবে গত অধিবেশনে মার্চ মাসে কোভিডকে গুরুত্বই দেওয়া হয়নি সরকারের পক্ষ থেকে। রাজনৈতিক সূত্রের খবর, প্রধানমন্ত্রীও এক তৃণমূল সাংসদকে বলেছিলেন, এটা তো সম্ভব নয় যে, যখন-তখন অধিবেশন বন্ধ করে দেওয়া হবে। তৃণমূলের রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েনের বক্তব্য, “আমরা কয়েক জন মাস্ক পরে এসেছিলাম বলে আমাদের বলা হয়েছিল বাইরে গিয়ে মাস্ক খুলে আসতে। আজ প্রমাণিত আমরাই ঠিক পথ দেখিয়েছিলাম।’’ কংগ্রেসের নেতা জয়রাম রমেশ আজ টুইট করে ওই ঘটনার উল্লেখ করে বলেছেন, “সংসদ অবশেষে ১৪ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে। সাংসদদের মাস্ক পরা এখন বাধ্যতামূলক। আমার মনে পড়ছে, মার্চের ২১ এবং ২২ তারিখ মাস্ক পরে আসার জন্য তৃণমূলের বন্ধু সুখেন্দুশেখর রায় এবং ডেরেক ও’ব্রায়েনদের বার করে দিয়েছিলেন রাজ্যসভার চেয়ারম্যান। এর থেকেই বোঝা যায়, আমরা কোভিডকে গুরুত্ব দিতে কতটা দেরি করে ফেলেছি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy