ছবি: পিটিআই।
সংসদের দুই কক্ষে অর্থবিল পাশ করিয়ে নির্ধারিত সময়ের আগেই অনির্দিষ্ট কালের জন্য মুলতুবি করে দেওয়া হল সংসদ। নোভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ে অভূতপূর্ব আতঙ্কের মধ্যে সংসদের অধিবেশন কিছু দিনের জন্য স্থগিত রাখার দাবিতে গত দশ দিন ধরে চাপ দিয়ে আসছিল তৃণমূল ও অন্য বিরোধী দলগুলি। অবশেষে সরকার এবং বিরোধী পক্ষের সংসদীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে আজ অধিবেশন মুলতুবি করার সিদ্ধান্ত নেন স্পিকার। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, গোটা দেশকে যখন ধীরে ধীরে ঘরবন্দি করে দেওয়া হচ্ছিল, তার মধ্যেও মোদী সরকার এত দিন কেন সংসদ চালু রেখেছিল?
বিষয়টি নিয়ে স্পিকারের সঙ্গে একাধিক বার কথা বলেও কোনও সুরাহা হয়নি বলে এর আগে জানিয়েছেন বিরোধী নেতারা। তাঁদের বক্তব্য, গত সপ্তাহেই এই অর্থবিল পাশ করিয়ে অধিবেশন মুলতুবি করে দেওয়া যেত। কিন্তু তা না-করে গত সপ্তাহ জুড়ে বর্তমান পরিস্থিতির নিরিখে অন্যান্য কম গুরুত্বপূর্ণ বিলগুলি একের পর এক আনা হয়েছে। গোটা অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রীর নিজের উপস্থিতিও ছিল নামমাত্র। আজ লোকসভায় ছিলেন অধিবেশনের শেষ কয়েক মিনিট। বিরোধীরা বলছেন, অপ্রিয় প্রসঙ্গ ও অস্বস্তিকর প্রশ্ন এড়াতেই সংসদে এত কম সময় দিয়েছেন মোদী। তাঁর মূল লক্ষ্য ছিল শুধু অধিবেশন চালিয়ে যাওয়া। এটা কেন?
রাজনীতির লোকজন বলছেন, মধ্যপ্রদেশে সরকার গড়ার তাগিদে। বিরোধীদের চাপ বা জনমানসে, এমনকি বিজেপির বহু নেতা-কর্মীর মধ্যে প্রবল আতঙ্ক সৃষ্টি হওয়া সত্ত্বেও মোদী সরকার এত দিন সংসদ মুলতুবি করতে পারেনি ওই একটি রাজনৈতিক লক্ষ্যে। মধ্যপ্রদেশে কংগ্রেস সরকার হীনবল হয়ে যাওয়ার পরে রাজ্যপালের নির্দেশে বিধানসভায় শক্তিপরীক্ষা করার কথা ছিল। কিন্তু করোনা-সংক্রমণের যুক্তি দেখিয়ে তা ২৬ মার্চ পর্যন্ত মুলতুবি করে দেয় কংগ্রেস সরকার। স্বাভাবিক ভাবে পিছিয়ে যায় আস্থাভোটও। এর বিরোধিতা করে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করে বিজেপি। তাই দিল্লিতে যদি সেই করোনাভাইরাসের কারণেই সংসদ বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিত বিজেপি সরকার, তা হলে সুপ্রিম কোর্টে কংগ্রেস বিষয়টিকে তুলে ধরে নিজেদের সিদ্ধান্তকে অকাট্য প্রমাণ করতে পারত। কিন্তু ইতিমধ্যে সরকার গড়া অসম্ভব দেখে পদত্যাগ করেছেন কংগ্রেসের মুখ্যমন্ত্রী কমল নাথ। সূত্রের মতে, এর পরে করোনাভাইরাসের চাপ কাঁধে নিয়েও সংসদ চালিয়ে যাওয়ার দায় ছিল না কেন্দ্রের। বিশেষ করে আজ রাতে মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শিবরাজ সিংহ চৌহানের শপথ নেওয়ার বন্দোবস্ত পাকা হয়ে যাওয়ার পরে আর সংসদ চালিয়ে যাওয়ার প্রয়োজন মনে করেনি মোদী সরকার। যার জেরেই আজ সরকার পক্ষ থেকে স্পিকারকে অধিবেশন মুলতুবি করার সবুজ সঙ্কেত দিয়ে দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: লকডাউন নিয়েই ১০০ দিনে শাহিনবাগ
তৃণমূলের রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েনের কথায়, “এটা স্পষ্ট যে স্বাস্থ্য ক্ষেত্রের এই জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলা মোদী সরকারের অগ্রাধিকার নয়। তার আগে মধ্যপ্রদেশে সরকার গড়াটাই তাদের কাছে প্রাধান্য পেয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy