ফাইল চিত্র।
করোনার প্রথম ধাক্কার সময়ে ভারত-সহ কোনও দেশই অতিমারি মোকাবিলায় প্রস্তুত ছিল না। আন্তর্জাতিক যোগ দিবসে আজ এ কথা স্বীকার করে নিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেই সঙ্গে তাঁর দাবি, সেই কঠিন সময়ে একমাত্র যোগই করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে মানুষকে শক্তি ও বিশ্বাস জুগিয়েছে। বিরোধীদের বক্তব্য, প্রথম দফায় দেশ প্রস্তুত ছিল না, সেই যুক্তি মানা যায়। কিন্তু করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ধাক্কার সময় দেশ কেন প্রস্তুত ছিল না, তার দায় সরকারকেই নিতে হবে। তৃতীয় ঢেউ আসার আগে দেশের স্বাস্থ্য পরিকাঠামো যথেষ্ট প্রস্তুত কি না, তা-ও খতিয়ে দেখার দাবি তুলেছে কংগ্রেস।
গত বছর করোনার কারণে সে ভাবে যোগদিবস পালন করা হয়নি। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের ধাক্কা খানিকটা কেটে যাওয়ায় এ বছর সাড়ম্বরে যোগদিবস পালন করল কেন্দ্র। শামিল করা হল মন্ত্রী ও শাসক শিবিরের নেতা-কর্মীদের, সরকারি কর্মী, সেনা ও আধাসেনাদের। যোগ দিবস উপলক্ষে এ দিন সকালে দেশবাসীর উদ্দেশে বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, “দু’বছর ভারতে কোনও সরকারি অনুষ্ঠান হয়নি। তাতেও যোগ দিবসের প্রতি মানুষের উৎসাহ বিন্দুমাত্র কমেনি। বরং করোনা অতিমারির সময়ে সুস্থ থাকতে যোগের প্রতি উৎসাহ বেড়েছে।”
মোদীর দাবি, তাঁকে অনেক চিকিৎসক জানিয়েছেন, করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তাঁরা যোগের মাধ্যমে নিজেদের সুরক্ষাকবচ গড়ে তুলেছেন। রোগীদের সুস্থ থাকার জন্যও যোগকে ব্যবহার করা হচ্ছে। অতিমারির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ছোটদের প্রস্তুত করে তুলতে অনলাইন ক্লাসের আগে যোগ প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।
গীতার শ্লোক উল্লেখ করে মোদীকে বলতে শোনা যায়, দুঃখ থেকে বিয়োগ ও মুক্তিকেই যোগ বলা হয়। যোগের গুরুত্ব বোঝাতে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের উদ্ধৃতিও ব্যবহার করেন মোদী, “ঈশ্বর বা অন্য কিছু থেকে নিজের বিচ্ছিন্নতার বোধে নয়, নিজেকে খুঁজে পাওয়া যায় যোগ বা সংযুক্তির নিরবচ্ছিন্ন অনুভূতির মধ্যে।” কথাগুলি রবীন্দ্রনাথ লিখেছিলেন, ১৯১৩ সালে প্রকাশিত ইংরেজি প্রবন্ধগ্রন্থ সাধনা-য় ‘দ্য প্রবলেম অব সেলফ’ শীর্ষক রচনায়।
তবে গীতা থেকে রবীন্দ্রনাথ, নানা উদ্ধৃতি তুলে ধরে মোদী যোগ-মাহাত্ম্যে পঞ্চমুখ হলেও সরকারের মনোভাবের সমালোচনা করছেন বিরোধীরা। কংগ্রেসের এক নেতার কথায়, “নীতিকথা হিসেবে এ সব শুনতে ভাল। কিন্তু পরিকাঠামো বা অক্সিজেনের অভাবে, হাসপাতালে ভর্তি হতে না-পেরে যাঁরা মারা গিয়েছেন, তাঁদের পরিবারের এ সব শুনতে ভাল না-ও লাগতে পারে।”
কংগ্রেসের বক্তব্য, করোনার প্রথম ধাক্কার জন্য প্রস্তুত না-থাকলেও দ্বিতীয় ধাক্কার সময়ে কেন প্রস্তুতি ছিল না, মোদীকেই তার জবাব দিতে হবে। এখনই খতিয়ে দেখতে হবে, তৃতীয় ঢেউ মোকাবিলায় দেশের পরিকাঠামো প্রস্তুত কি না। রাহুল গাঁধীর কথায়, “আজ যোগ দিবস। যোগ দিবসকে সামনে রেখে সরকারের ব্যর্থতাকে লুকিয়ে রাখার দিন নয়।”
প্রাচীন বিজ্ঞান ও আধুনিক বিজ্ঞানের মেলবন্ধনে যোগকে বিশ্বের সামনে তুলে ধরতে ভারত ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা যোগ নিয়ে একটি মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মোদীর কথায়, “যোগ বিজ্ঞানকে গোটা বিশ্বের কাছে সুলভ করে তুলতে যোগব্যায়ামের নানা প্রশিক্ষণ ভিডিয়ো থাকবে ওই অ্যাপে। যা দেখা যাবে ভিন্ন
ভিন্ন ভাষায়।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy