‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানে বক্তা নরেন্দ্র মোদী। পিটিআই
সাবধানতায় সামান্য ঢিল দিলেই হাতের বাইরে চলে যাবে পরিস্থিতি। অসম্ভব হয়ে দাঁড়াবে করোনার সঙ্গে কঠিন যুদ্ধে জেতা। রবিবার ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানে দেশের মানুষকে এ বিষয়ে সতর্ক করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। জানিয়ে দিলেন, আগামীতে বাড়ির বাইরে পা-রাখতে গেলেই পরতে হবে মাস্ক। ছাড়তে হবে যেখানে-সেখানে থুতু ফেলার অভ্যাস। জোর দিলেন পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রাখার উপরেও। তাঁর কথায় “দো গজ দূরি বহুত হ্যায় জরুরি।” অর্থাৎ, দু’গজ দূরত্ব বজায় রাখা একান্ত জরুরি।
লকডাউন যত লম্বা হচ্ছে, তত বাড়ছে বাড়ি থেকে বেরিয়ে ‘এক পাক ঘুরে আসার প্রবণতা’। আর্থিক কর্মকাণ্ড সচল রাখতে কেন্দ্র-রাজ্য সামান্য ছাড় দিতেই অনেকে ধরে নিচ্ছেন, পরিস্থিতি ঢের স্বাভাবিক। অথচ এতে বিদ্যুৎগতিতে সংক্রমণ বৃদ্ধির আশঙ্কা। গোড়ায় নোভেল করোনাভাইরাসকে এমন হালকা ভাবে নেওয়াতেই মৃত্যুমিছিল দেখতে হচ্ছে আমেরিকা ও ইউরোপের উন্নত দেশগুলিকে। বিশ্বে ২ লক্ষ ছাড়িয়েছে মৃতের সংখ্যা। এই বাস্তব মনে করিয়ে দিয়েই প্রধানমন্ত্রী এ দিন স্পষ্ট হুঁশিয়ারি দেন। তাঁর কথায় “অতিরিক্ত আত্মতুষ্টির ফাঁদে পা দেবেন না। ভাববেন না যে, করোনা এখনও আমার শহর, গ্রাম, রাস্তা বা অফিসে হানা দেয়নি মানে, তা আর দেবেও না। এই ভুল কখনও নয়।… আগুন, ঋণ আর ব্যাধিকে হালকা ভাবে নিলে, তা প্রথম সুযোগেই ভয়ঙ্কর হয়ে ফিরে আসে।” মোদী এ দিন এ-ও বুঝিয়ে দিয়েছেন যে, করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে এই লড়াইটা হতে চলেছে বেশ লম্বা। লকডাউন উঠলে মানুষের ঘরবন্দি দশা কাটার পরেও প্রাত্যহিক জীবনের অনেক কিছুই পাকাপাকি ভাবে পাল্টে ফেলতে হবে। বাইরে বেরোলেই মাস্ক পরাটা জাপানিরা রীতিমতো অভ্যাসে পরিণত করেছেন। এটা ভারতেও হয়ে উঠবে সভ্য জীবনের অঙ্গ। মাস্কই লাগবে এমন নয়। দৈনন্দিন জীবনের গামছা বা তোয়ালেও চলবে। পাকাপাকি ভাবে ছাড়তে হবে যত্রতত্র থুতু ফেলার অভ্যাস।
মূলত জন-সচেতনতা এবং জন-আন্দোলনের অস্ত্রেই যে ভারত কোভিড-১৯ অতিমারির সঙ্গে লড়ছে, এ দিন তা বারবার বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। তবে জন-আন্দোলন কিংবা দেশজোড়া একতা তৈরির কৃতিত্ব ঘুরিয়ে নিজের দিকেই টেনেছেন। বলেছেন, ঘরবন্দি দশার মধ্যেও সারা দেশকে এক সূত্রে বেঁধেছে হাততালি-থালা বাজানো, প্রদীপ জ্বালানোর মতো কর্মসূচি। আগেই যার ভিত তৈরি হয়েছে স্বচ্ছতা অভিযান, স্বেচ্ছায় রান্নার গ্যাস ও রেলে ভর্তুকি ছেড়ে দেওয়ার মাধ্যমে।
আরও পড়ুন: লকডাউন থেকে পরিযায়ী শ্রমিক, আজ মোদীর কথা মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে
বিরোধীরা একে কার্যত নিজের পিঠ-চাপড়ানো হিসেবেই দেখছেন। রাস্তায় গোল্লা আঁকা, মাস্ক বিলি বা লকডাউনের তদারকি করা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চারটি ছবি দিয়ে তৃণমূলের ডেরেক ও’ব্রায়েনের টুইট, “এই পৃথিবীতে দুই ধরনের মানুষ রয়েছে। যারা কথা বলে। যারা কাজ করে।” মোদীকে লেখা চিঠিতে সিপিএমের সীতারাম ইয়েচুরির অভিযোগ, পরিযায়ী শ্রমিকদের খাবার জোগানো, কাজ খোয়ানো কর্মীদের হাতে টাকা দেওয়া— সরকার সবেতেই চূড়ান্ত ব্যর্থ। পিপিই-র মতো স্বাস্থ্য-সরঞ্জামের সঙ্কট তো আছেই, তার উপরে আছে রোগকেও সাম্প্রদায়িক রং দেওয়ার প্রবণতা। কংগ্রেসের মতে, করোনা-যুদ্ধ জিততে প্রতিদিন যত জনের শারীরিক পরীক্ষা জরুরি, তার ধারেকাছে পৌঁছনো যায়নি এত দিনে। বসে যাওয়া অর্থনীতির ইঞ্জিনকে ফের সচল করতে, দেখা নেই ত্রাণ প্রকল্পেরও।
আরও পড়ুন: দূরত্ব রাখতে ছাতা খুলুন, বলছে কেরল
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy