Advertisement
০৩ নভেম্বর ২০২৪
Hydroxychloroquine

চালু বহু ওষুধই বাদ নয়া কোভিড চিকিৎসা-বিধিতে

ওই ওষুধগুলি ছাড়াও রেমডেসিভিয়ারের যথেচ্ছ ব্যবহারের প্রশ্নে ফের চিকিৎসকদের সতর্ক করে নির্দেশিকা জারি করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রক।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৮ জুন ২০২১ ০৬:২৭
Share: Save:

ব্যবহার করে ইতিবাচক ফল না-পাওয়ায় কোভিড-চিকিৎসার তালিকা থেকে বাদ পড়ল ডক্সিসাইক্লিন, আইভারমেকটিন, হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন ও ফ্যাভিপিরাভিরের মতো চালু ওষুধ। গত কাল ডিরেক্টরেট জেনারেল অব হেল্থ সার্ভিসেস (ডিজিএইচএস) কোভিড রোগীদের জন্য যে ৯ পাতার নতুন চিকিৎসা প্রোটোকল জারি করেছে, তাতে বাদ পড়েছে ওই ওষুধগুলি। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিসিন ১৭ মে যে প্লাজ়মা চিকিৎসাকে বাদ দিয়ে নতুন প্রোটোকল জারি করেছিল, তাতে আইভারমেকটিন, হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন ব্যবহারের কথা রয়েছে। ডিজিএইচএস-এর নতুন ওই প্রোটোকলে বলা হয়েছে, উপসর্গহীন বা মৃদু উপসর্গযুক্ত সংক্রমিতদের চিকিৎসায় ওষুধ ব্যবহার করার কোনও আবশ্যকতা নেই। সংশোধিত নিয়মে মৃদু উপসর্গ রয়েছে এমন রোগীদের প্রয়োজনে কেবল জ্বর ও কাশির ওষুধ খেতে বলা হয়েছে।

ওই ওষুধগুলি ছাড়াও রেমডেসিভিয়ারের যথেচ্ছ ব্যবহারের প্রশ্নে ফের চিকিৎসকদের সতর্ক করে নির্দেশিকা জারি করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রক। পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে, ওই ওষুধে কোভিড রোগীর মৃত্যু রোখা সম্ভব নয়। তাই যাদের অক্সিজেন দিতে হচ্ছে, অতিরিক্ত সাবধানতার সঙ্গে স্বাস্থ্য বিচার করে রিজ়ার্ভ ওষুধ হিসেবে তাদেরই কেবল রেমডেসিভিয়ার দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। একমাত্র সিনিয়র চিকিৎসকেরাই যেন ওই ওষুধ রোগীর জন্য সুপারিশ করেন, এমন নির্দেশ দেওয়ার পাশাপাশি যিনি রেমডেসিভিয়ার দেওয়ার সুপারিশ করেছেন সেই চিকিৎসের নাম, স্বাক্ষর ও সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের স্ট্যাম্প যাতে প্রেসক্রিপশনে থাকে, তা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। রোগীকে সুপারিশ করা রেমডেসিভিয়ার যাতে কেবল হাসপাতাল থেকেই দেওয়া হয়, ওই ওষুধ যাতে রোগীর পরিবারকে বাজার থেকে কিনতে না-বলা হয়, সে বিষয়েও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে নজর রাখতে বলা হয়েছে।

নতুন এই নির্দেশিকায় যাদের মৃদু উপসর্গ রয়েছে, বাড়িতেই নিয়ম করে তাদের জ্বর ও শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা পরীক্ষার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। খুব দরকারে জ্বর ও কাশির ওষুধ নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। অতীতে সামান্য উপসর্গ থাকলে ডক্সিসাইক্লিন, জিঙ্ক এবং মাল্টিভিটামিন ট্যাবলেট দেওয়ার যে প্রোটোকল তৈরি হয়েছিল, নয়া নিয়মে চিকিৎসা পদ্ধতি থেকেই বাদ পড়েছে সেই ওষুধগুলি। নতুন প্রোটোকলে বলা হয়েছে, রোগীর অবস্থা গুরুতর না-হলে সিটি স্ক্যান করানোরও প্রয়োজন নেই। যে সব কোভিড রোগীর অবস্থা গুরুতর, স্টেরয়েড দেওয়ার ২৪-৪৮ ঘণ্টা পরেও যাদের রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা স্বাভাবিক হচ্ছে না, তাদেরই একমাত্র টসিলিজুমাব ওষুধ দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। অন্যথায় নয়। তবে ওই ওষুধ দেওয়ার আগে দেখে নিতে হবে ওই রোগীর শরীরে কোনও ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক বা যক্ষ্মার সংক্রমণ রয়েছে কি না।

একই সঙ্গে স্টেরয়েডের যথেচ্ছ ব্যবহার রোখার উপরেও জোর দিয়েছেন স্বাস্থ্য কর্তারা। সুপারিশে বলা হয়েছে, কোনও সঙ্কটজনক রোগীকে যেন সঠিক সময়ে সঠিক মাত্রায় স্টেরয়েড ওষুধ সুপারিশ করা হয় এবং তা যেন ঠিক সময়ে বন্ধও করা হয়। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের ওই নতুন নির্দেশিকাকে স্বাগত জানিয়েছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মুখ্য বিজ্ঞানী সৌম্যা স্বামীনাথন। তাঁর টুইট, ‘এটি চিকিৎসকদের জন্য সহজ, যুক্তিগ্রাহ্য ও স্পষ্ট একটি নির্দেশিকা। এই নির্দেশিকা সমস্ত আঞ্চলিক ভাষায় ছাপিয়ে দেশে ছড়িয়ে দেওয়া হোক।’

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus in India Ivermectin Hydroxychloroquine
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE