—ফাইল চিত্র।
বাবার নামের নথি নিয়ে বিভ্রান্তিতে মুক্ত পৃথিবী থেকে ছিটকে গিয়েছিলেন তিনি। যখন ফিরে আসছেন, তখন গোটা দেশই ছোঁয়াচে ভাইরাসের ভয়ে ঘরবন্দি। আজ, মঙ্গলবার অসমের গোয়ালপাড়ার ডিটেনশন শিবির থেকে জামিনে বেরোনোর কথা বিদেশি সন্দেহে বন্দি কলকাতার আসগর আলির। কারণ, করোনা অতিমারির পটভূমিতে ঘেঁষাঘেঁষি ঠেকাতে বিদেশি সন্দেহে ধৃতদের মধ্যে দু’বছরের বেশি দিন বন্দি রয়েছেন যাঁরা, তাঁদের জামিনে ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত।
আসগরের মধ্য আশির অশক্ত বৃদ্ধ বাবা রয়েছেন কলকাতার চমরু খানসামা লেনে। লকডাউনে ব্যাগ, টুপি কারখানার কর্মী দুই ভাইয়ের রোজগার শিকেয়। চেয়েচিন্তে ভাত জুটছে। গুয়াহাটির সোফা কারখানার কর্মী ৫০ ছুঁই ছুঁই আসগরের স্ত্রী ও কিশোরপুত্র গুয়াহাটিতে। আজ, মঙ্গলবার গোয়ালপাড়া থেকে সেখানেই যাওয়ার কথা তাঁর। ২০১৭-র জুলাইয়ে আসগরকে বন্দি করে ফরেনার্স ট্রাইবুনাল। ঠিক রমজ়ানের মুখে ঘরের ছেলে জেল থেকে ছাড়া পাচ্ছেন শুনে খুশি আসগরের পরিবার।
সমস্যার সূত্রপাত, আসগরের বাবার নাম মহম্মদ জরিফ না শেখ মোড়ল— এই প্রশ্নে। মোড়ল তাঁর ডাক নাম হলেও পুরনো ভোটার তালিকার মতো কিছু নথিতে মোড়ল নামটাই ছিল। পরে ভোটার কার্ডে মহম্মদ জরিফ নামটা রাখা হয়। পিতৃপরিচয়জনিত ধোঁয়াশাতেই সমস্যায় পড়েন অসমে কর্মরত গুয়াহাটির যুবক। কলকাতায় রাসায়নিক তৈরির কারখানায় বাবার পিএফ নথি, পাসপোর্ট ইত্যাদি পেশ করলেও লাভ হয়নি। বন্দিদশায় গুয়াহাটি হাইকোর্টে মামলা হারেন আসগর। সুপ্রিম কোর্টও বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করতে চায়নি। সর্বোচ্চ আদালতের আগের নির্দেশ অনুযায়ী, ডিটেনশন ক্যাম্পে তিন বছর কাটিয়ে এক লক্ষ টাকা জামিননামা দেখিয়ে কারও মুক্তি পাওয়ার কথা। গত ১৩ এপ্রিল, পুরনো নির্দেশটি পরিমার্জন করে সুপ্রিম কোর্ট। বলা হয়, দু’বছর ধরে বন্দি কেউ ৫০০০ টাকার দু’টি জামিননামা দেখিয়েই ছাড়া পাবেন।
আরও পড়ুন: টিম রাহুল বিকল্প নীতি বাতলাচ্ছে
আরও পড়ুন: ‘দেশ-বিরোধী’ পোস্ট করার অভিযোগে কাশ্মীরে অভিযুক্ত ২ সাংবাদিক
আসগরের আইনজীবী আমন ওদুদ জানান, ডিটেনশন শিবিরে ৮০২ জন বন্দি। আসগর ছাড়া বাঙালি হিন্দু, মুসলিম আরও কয়েক জন ছাড়া পেতে পারেন। আসগরের ভাই আর্শাদ আলির মুখে এই সুসংবাদে ম্লান হাসি। বলছেন, “দাদার মু্ক্তির জন্য কত চেষ্টা করেছি। ইদের আগে ও কলকাতায় ফিরতে পারলে হয়তো দেখা হবে, এটা ভেবে একটু শান্তি হচ্ছে।”
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy