মানবিক: দেশ জুড়ে লকডাউন পরিস্থিতিতে গৃহহীন ও দিনমজুরদের খাওয়ার ব্যবস্থা করেছে দিল্লি সরকার। রান্না চলছে এমনই এক শিবিরে। ছহবি: পিটিআই।
সংক্রমণের প্রশ্নে গোটা দেশের মধ্যে দিল্লি শীর্ষে থাকতে পারে বলে আগেই সতর্ক করে দিয়েছে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর)। সে বিষয়টি মাথায় রেখে করোনা-সংক্রমিত রোগীর চিকিৎসায় যাতে কোনও ঘাটতি না থাকে তার জন্য সরকারের প্রস্তুতি পুরোদমে চালু রয়েছে বলে আজ দাবি করলেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল। সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি জানান, এই মুহূর্তে দিল্লি স্বাস্থ্য পরিকাঠামো প্রতিদিন ১০০ করোনা-রোগী সামলাতে সক্ষম। ভবিষ্যতের কথা ভেবে হাজার রোগী সামলানোর মতো পরিকাঠামো তৈরি করা হচ্ছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রকের মতে, বর্তমানে দিল্লিতে করোনা-আক্রান্তের সংখ্যা ৩৫। যদিও দিল্লি স্বাস্থ্য দফতরের হিসেবে আক্রান্তের সংখ্যা ৩৯। দিল্লিতে বিদেশি নাগরিকদের আনাগোনা বেশি হওয়ায় অন্যান্য রাজ্যের তুলনায় দিল্লিতে করোনা সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা বেশি হতে পারে বলে আগেই আশঙ্কা জানিয়ে রেখেছে আইসিএমআর। বিষয়টি মাথায় রেখেই করোনা রোগী দেখভালের প্রশ্নে দিল্লির স্বাস্থ্য পরিকাঠামো উন্নতিতে তৎপর হয়েছে কেজরীবাল সরকার। ইতিমধ্যেই পরিকাঠামো উন্নতির প্রশ্নে পাঁচ চিকিৎসকের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। আজ কেজরীবাল বলেন, এই মুহূর্তে প্রতিদিন গড়ে চার-পাঁচ জন করোনার সংক্রমণ নিয়ে ভর্তি হচ্ছেন। আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে পাঁচশো বা হাজার হলে কী সংখ্যায় ভেন্টিলেটর, শয্যা, আইসিইউ বেড, পরীক্ষাকেন্দ্র, অ্যাম্বুল্যান্স, চিকিৎসক ও চিকিৎসাকর্মী প্রয়োজন হবে, তা খতিয়ে দেখে রিপোর্ট জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কমিটিকে। মুখ্যমন্ত্রী জানান, সেই রিপোর্টের ভিত্তিতে পরিকাঠামো উন্নতির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
দিল্লির স্বাস্থ্য দফতরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এ পর্যন্ত বিদেশ থেকে আসা ১২,০৭৩ ব্যক্তিকে ঘরবন্দি করে রাখা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ৪,৫১৩ ব্যক্তি ইতিমধ্যেই ১৪ দিনের বন্দি দশা শেষ করেছেন। বাকিদের মধ্যে ১,১৭৩ জন ব্যক্তি সরকারি নজরদারিতে রয়েছেন। স্বাস্থ্য দফতরের মতে, আক্রান্ত ৩৯ জনের মধ্যে ২৯ জন সরাসরি সংক্রমিত হয়ে বিদেশ থেকে এসেছিলেন। বাকি দশ জন বিদেশ ফেরত ওই সংক্রমিত ব্যক্তিদের সংস্পর্শে আসায় সংক্রমিত হয়েছেন। এ পর্যন্ত দিল্লিতে করোনায় মারা গিয়েছেন ১ জন।
স্বাস্থ্য পরিকাঠামো উন্নতির পাশাপাশি দিল্লিতে বসবাসকারী কোনও ব্যক্তি যাতে অভুক্ত না থাকেন, তার জন্য কাল থেকে চার লক্ষ লোককে দু’বেলা খাওয়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেজরীবাল সরকার। ইতিমধ্যেই রাজ্যের ২২৪টি নৈশ শিবির থেকে প্রতিদিন ২ লক্ষ লোককে খাওয়ানোর কাজ চলছিল বলে দাবি করেছেন কেজরীবাল। কিন্তু অভিযোগ ওঠে, দিল্লির বহু মানুষ ভিন্ রাজ্যের গরিব দিনমজুর, যাঁরা লকডাউনের ফলে না-খেয়ে রয়েছেন। দিল্লিতে বসবাসকারী পশ্চিমবঙ্গের বহু শ্রমিক আধপেটা বা না-খেয়ে রয়েছেন, এমন অভিযোগও ওঠে। বিষয়টি দেখার জন্য গত কাল অরবিন্দ কেজরীবালকে চিঠি দেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পরেই আজ কেজরীবাল বলেন, ‘‘দিল্লিতে যাঁরা থাকেন তাঁরা সবাই আমার লোক। তাঁদের দেখভালের জন্য আমি দায়বদ্ধ।’’ তিনি আরও জানান, ওই নৈশ শিবিরগুলি ছাড়াও দিল্লির ৩২৫টি সরকারি স্কুল থেকে অভুক্তদের দু’বেলা খাবার বিতরণ করা হবে। প্রতিটি স্কুলে প্রতিবেলা পাঁচশো লোক খেতে পারবেন বলে জানিয়েছেন কেজরীবাল। তিনি জানান, শনিবার থেকে সরকারের তরফে চার লক্ষ ব্যক্তিকে দু’বেলা খাবার বিতরণ করা হবে। তিনি দিল্লির প্রত্যেক বিধায়ককে নিজের এলাকায় এ ধরনের ব্যক্তিদের একটি তালিকা তৈরি করে স্থানীয় প্রশাসনের হাতে তুলে দেওয়ার জন্যও অনুরোধ করেছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy