ছবি: রয়টার্স।
বিশ্ব জুড়ে কোভিড-১৯-এর সম্ভাব্য টিকাগুলির পরীক্ষা শুরু হয়ে গিয়েছে। নয়াদিল্লিও নিজেদের মতো করে তৈরি হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন মন্ত্রকের সমন্বয়ে প্রায় প্রতিদিনই বৈঠক হচ্ছে। সরকারি সূত্রের খবর, তবে কোনও প্রতিষেধক পাওয়াটাই শেষ কথা নয়, অনেকগুলি দিক রয়েছে এই সংক্রান্ত প্রস্তুতির।
এর প্রথমটিই হচ্ছে, দেশে টিকা সংক্রান্ত উপযুক্ত পরিকাঠামো তৈরি করা। যার মধ্যে রয়েছে: ১) টিকার সরবরাহের পথটি সুগম রাখা। ২) কাদের টিকা দেওয়া হচ্ছে, তার হিসেব রাখা। যাতে কেউ একাধিক বার তা না-নিতে পারেন। ৩) কারা অগ্রাধিকার পাবেন, তা নির্ণয় করা। ৪) প্রতিষেধক রাখার জন্য হিমঘর তৈরি করা।
দ্বিতীয় বিষয়টির সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে টিকা-কূটনীতি। যে দেশগুলি এই কাজে অনেকটা এগিয়ে গিয়েছে, তাদের প্রতিদিনের অগ্রগতির সঙ্গে তাল রেখে চলা ও নিজেদের সংযুক্ত রাখা। সংশ্লিষ্ট দেশি-বিদেশি বাণিজ্যিক সংস্থাগুলির সঙ্গে যোগাযোগ রাখা। সরকারি সূত্রের বক্তব্য, চিনের থেকে যেন টিকা না-নিতে হয়, সেটাকেই অগ্রাধিকার দিয়ে দেখছে সাউথ ব্লক। এক কর্তার কথায়, “এমন পরিস্থিতি যেন না তৈরি হয়, যে চিন থেকে নেওয়া ছাড়া উপায় থাকছে না।” গত চার দশকের নিরিখে, চিনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এখন সবচেয়ে খারাপ। এ ছাড়া, চিন থেকে টিকা না-নিতে চাওয়ার আরও একটি কারণ বলছেন সংশ্লিষ্ট কর্তারা। তা হল, চিনের তৈরি টিকা কতটা নির্ভরযোগ্য হবে তা নিয়েও সন্দেহের অবকাশ রয়েছে বলে মনে করছেন তাঁরা।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে আটকে দিন কাটছে অনেক ভারতীয়ের
আরও পড়ুন: ‘মোদীর সঙ্গে বৈঠক সহজে ভুলব না’
আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে টিকা আবিষ্কারের মোট ৯টি প্রক্রিয়ার দিকে নজর রাখা হচ্ছে। সূত্রের মতে, ভারত সবচেয়ে আশাবাদী অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত অ্যাস্ট্রাজেনেকা সংস্থাকে নিয়ে। এ নিয়ে বাণিজ্যিক চুক্তির পাশাপাশি ভারত-ব্রিটেন দ্বিপাক্ষিক স্তরেও কথাবার্তা চলছে বলে খবর। সার্ক অঞ্চলের সবচেয়ে বড় রাষ্ট্র হিসেবে ভারতের আন্তর্জাতিক দায়বদ্ধতা থাকবে এই অঞ্চলের অন্য রাষ্ট্রকেও টিকা সরবরাহ করার। এতে কূটনৈতিক স্তরে ভারত এলাকায় নেতৃত্ব দানের সুযোগ পাবে ঠিকই, কিন্তু এটাও হিসেবে রাখতে হচ্ছে যে, দেশের ভাঁড়ারে যেন টান না পড়ে। সদ্যই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-র অনুরোধে, উত্তর কোরিয়াকে ১০ লক্ষ ডলার মূল্যের যক্ষ্মার ওষুধ সরবরাহ করার কথা ঘোষণা করেছে ভারত। সূত্রের বক্তব্য, নিয়মমাফিক সার্ক-সদস্য পাকিস্তানকেও কোভিড-১৯-এর প্রতিষেধক রফতানির প্রস্তাব দেওয়া হবে। কিন্তু সাউথ ব্লকের ধারণা, তারা ভারতের কাছ থেকে নয়, চিনের থেকেই তা সংগ্রহ করতে চাইবে।
অন্য যে দেশগুলিতে টিকা তৈরির কাজ চলছে তার মধ্যে রয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া, ব্রাজিল, ফ্রান্স, রাশিয়া, আমেরিকা ইত্যাদি। বিল গেটস সম্প্রতি দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্টকে একটি চিঠিতে জানিয়েছেন, সে দেশে তাঁর সহায়তা পাওয়া প্রতিষ্ঠান এস কে বায়োটেক আগামী বছর জুন মাসে ২০০ মিলিয়ন ডোজ় টিকা উৎপাদন করতে পারবে। এই বিষয়টির দিকে বিশেষ নজর রাখছে ভারত। দক্ষিণ কোরিয়া শুধু আমেরিকার অন্যতম ঘনিষ্ঠ রাষ্ট্রই নয়, ভারতের সঙ্গেও তার সম্পর্ক যথেষ্ট ভাল। ভারতীয় বংশোদ্ভূত এবং সে দেশে বসবাসকারী একটি বিশাল অংশ দক্ষিণ কোরিয়ার সমাজ-অর্থনীতিতে সক্রিয়। আপাতত ব্রিটেনের সঙ্গে কথা চালানোর পাশাপাশি দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা শুরু করার কথা ভাবছে সাউথ ব্লক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy