বাগডোগরা বিমানবন্দরেও আর নামবে না মুম্বই ও দিল্লির উড়ান।
এত দিন শুধু কলকাতায় নিষেধাজ্ঞা ছিল। এ বার বাগডোগরা বিমানবন্দর থেকেও দিল্লি, মুম্বইয়ের উড়ান বন্ধ করে দিল রাজ্য সরকার।
দিল্লি, মুম্বই থেকে যাত্রীদের বড় অংশ বাগডোগরা ঘুরে কলকাতা আসছিলেন। এ বার তা বন্ধ হল। যদিও ওই দুই শহরের যাত্রীরা জয়পুর, লখনউ, বারাণসী, ভুবনেশ্বর, পটনা, গুয়াহাটি ঘুরে যাতায়াত করছেন এবং করতেও পারবেন। যাত্রীদেরই একটা বড় অংশের দাবি, ভাবের ঘরে চুরি করা হচ্ছে। কারণ, দিল্লি, মুম্বই থেকে যাত্রীদের কলকাতায় আসতে না দেওয়ার জন্য যে নিষেধাজ্ঞা রাজ্য জারি করেছে, সেটা আদতে কোনও কাজেই আসছে না। উল্টে ক্ষতি হবে বাগডোগরা বিমানবন্দরের।।
ট্রাভেল এজেন্ট ফেডারেশনের চেয়ারম্যান অনিল পাঞ্জাবির কথায়, “এমন আশঙ্কা করেই অগস্টের প্রথম সপ্তাহে আমরা কলকাতা থেকে ছ’টি শহরের সরাসরি উড়ানে টিকিট বিক্রি করিনি। তবে, যাত্রীরা বিভিন্ন শহর ঘুরে যাতায়াত করছেন। সেই সব শহরের উড়ানে যাত্রী বাড়ছে।”
রাজ্যের মতে, দিল্লি, মুম্বই, চেন্নাই, নাগপুর, পুণে এবং আমদাবাদ থেকে যাঁরা আসছেন, তাঁদের মাধ্যমে সংক্রমণ বাড়তে পারে। তাই, জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে রাজ্যের অনুরোধে এই ছ’টি শহর থেকে কলকাতার সরাসরি উড়ান বন্ধ করে দেয় কেন্দ্র। প্রথমে ৬ জুলাই থেকে ১৮ জুলাই। সেটা বাড়িয়ে করা হয় ৩১ জুলাই। তবে, এই সময়ে বাগডোগরা থেকে দিল্লি, মুম্বইয়ের সরাসরি উড়ান চলেছে।
অনেকেরই ধারণা ছিল, অগস্ট থেকে হয়তো এই নিষেধাজ্ঞা উঠে যাবে। এক উড়ান সংস্থার কর্তার কথায়, কলকাতা থেকে দিল্লি, মুম্বই এবং চেন্নাইয়ের উড়ানে অগস্টের প্রথম সপ্তাহের সিংহভাগ টিকিট বিক্রি হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু, রাজ্যের অনুরোধে কেন্দ্র এই নিষেধাজ্ঞা ১৫ অগস্ট পর্যন্ত বাড়িয়ে দিয়েছে। সঙ্গে যোগ করা হয়েছে বাগডোগরাকেও। শনিবার বাগডোগরা বিমানবন্দরের অধিকর্তা সুব্রহ্মণ্যম পি বলেন, “এখান থেকে দিনে দিল্লির তিনটি করে এবং মুম্বইয়ের একটি করে উড়ান চলছিল। শনিবার সকালে শেষ মুহূর্তে তা বন্ধ করার নির্দেশ এসেছে।” কলকাতা বিমানবন্দরের অধিকর্তা কৌশিক ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, এই নিষেধাজ্ঞার ফলে কলকাতা থেকে প্রায় ২৪টি উড়ান বন্ধ রাখা হবে।
সমস্যায় পড়েছেন যাত্রীরা। কলকাতার ব্যবসায়ী অলক জৈন স্ত্রীকে নিয়ে জুনে মুম্বই যান অস্ত্রোপচারের জন্য। জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে ফিরে আসেন। পরে জুলাইয়ের শেষে আবার তাঁকে চিকিৎসক ডেকে পাঠান। এ বার সরাসরি উড়ান না থাকায় তিনি অসুস্থ স্ত্রীকে নিয়ে জয়পুর হয়ে মুম্বই পৌঁছন। এখন দ্বিতীয় অস্ত্রোপচারের পরে চিকিৎসক জানিয়েছেন, বেশিক্ষণ উড়ানে ধকল নিতে পারবেন না স্ত্রী।
শনিবার ফোনে মুম্বই থেকে অলক বলেন, “আজই শনিবারের মুম্বই-কলকাতার টিকিট কাটা ছিল। কলকাতায় বাড়িতে বৃদ্ধ বাবা-মা। এ দিকে অসুস্থ স্ত্রী। এই অবস্থায় না পারছি মুম্বই থাকতে না পারছি কলকাতা যেতে।” রাজ্যের প্রাক্তন আমলা সুমন্ত্র রায়চৌধুরির আত্মীয় অসুস্থ। তাঁকে অবিলম্বে দিল্লি যেতে হবে। তাঁর কথায়, “উপায় নেই। আমাকে তো যেতেই হবে। অন্য শহর ঘুরেই যাব।” ঋতিকা শর্মা ইউরোপ থেকে বন্দে ভারত উড়ানে দিল্লি এসে আটকে পড়েছেন। এখন গুয়াহাটি ঘুরে তিনি আসবেন বলে ঠিক করেছেন। ট্রাভেল এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের কর্তা অঞ্জনি ধানুকার কথায়, “এক দিকে ইদ, অন্য দিকে রাখি। এই সময়ে মুম্বই-দিল্লি-চেন্নাইয়ে কর্মরত বাঙালিরা অনেকেই চার-পাঁচ দিন বাড়িতে কাটিয়ে ফিরে যেতেন। কিন্তু এত টাকা ও সময় খরচ করে যাতায়াত আর সম্ভব নয়।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy