—ফাইল চিত্র।
এখনও অজানা ওমিক্রনের সম্পূর্ণ চরিত্র। করোনাভাইরাসের এই নতুন ভেরিয়েন্টকে নিয়ে সদ্য পরীক্ষাগারে কাটাছেঁড়া শুরু হয়েছে। যদিও ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর)-এর বিজ্ঞানীরা আশাবাদী, ওমিক্রনকে রুখতে কার্যকর হবে দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি ভারত বায়োটেকের প্রতিষেধক কোভ্যাক্সিন। অতীতে অন্যান্য ভেরিয়েন্টের বিরুদ্ধে কোভ্যাক্সিনের সাফল্য দেখেই তাঁরা এমন আশা করছেন বলে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন। যদিও অনেকের প্রশ্ন, যে কোভ্যাক্সিনকে ঘিরে গোড়া থেকেই বিতর্ক রয়েছে, পরীক্ষামূলক প্রয়োগের তৃতীয় ধাপের ফল বেরোনো ও কোনও বৈজ্ঞানিক জার্নালে সেই সংক্রান্ত গবেষণাপত্র প্রকাশের আগেই যেটিকে মানবদেহে প্রয়োগের ছাড়পত্র দিয়ে দেওয়া হয়েছিল— অতি-সংক্রামক ভেরিয়েন্টটির বিরুদ্ধে তার কার্যকারিতা সম্পর্কে কী ভাবে নিশ্চিত হচ্ছেন সংস্থার বিজ্ঞানীরা?
আইসিএমআরের ব্যাখ্যা, কোভ্যাক্সিন প্রতিষেধকটি বানানো হয়েছে একটি মৃত সামগ্রিক করোনাভাইরাসকে নির্ভর করে। নিষ্ক্রিয় ভাইরাসের ওই প্রতিষেধক নিরাপদে ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে নিতে পারেন যে কোনও মানুষ। কোভ্যাক্সিন শরীরে প্রবেশ করলে রোগ প্রতিরোধকারী দেহকোষগুলি প্রতিষেধকে থাকা মৃত ভাইরাসকে চিনতে পেরে দেহের প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে সক্রিয় করে তোলে। শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়। আইসিএমআরের ডিজি বলরাম ভার্গব বলেন, ‘‘কোভ্যাক্সিনের ক্ষেত্রে মৃত ভাইরাসের গোটা অংশের বিরুদ্ধেই দেহে সামগ্রিক ভাবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়। যেহেতু সমগ্র ভাইরাসটির বিরুদ্ধেই তা প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলে, ফলে রূপ পরিবর্তন করা মূল ভাইরাসের ভেরিয়েন্টগুলির বিরুদ্ধেও অন্তত তত্ত্বগত ভাবে এই প্রতিষেধক কার্যকর হওয়া উচিত।’’ অতীতে করোনাভাইরাসের আলফা, বিটা, গামা, ডেল্টা ভেরিয়েন্টের বিরুদ্ধে নিজের কার্যকরিতা প্রমাণ করেছে কোভ্যাক্সিন। ভার্গবের মতে, ‘‘যেহেতু করোনার মূল ভাইরাসের বিরুদ্ধে কাজ করে থাকে কোভ্যাক্সিন, তাই আশা করা যাচ্ছে, ওমিক্রন প্রজাতির বিরুদ্ধেও তা কার্যকর হবে।’’ তবে বিস্তারিত প্রমাণ হাতে পাওয়ার আগে এ বিষয়ে নিশ্চিত ভাবে কিছু বলা সম্ভব নয় বলে স্বীকার করে নিয়েছেন ভার্গব নিজেই।
মডার্না বা ফাইজ়ারের প্রতিষেধক করোনাভাইরাসের স্পাইক প্রোটিনকে নির্ভর করে বানানো হয়েছে। তেমনই রাশিয়ার স্পুটনিক বা ভারতের কোভিশিল্ড হল ‘ভাইরাল ভেক্টর ভ্যাকসিন’ বা ‘ডামি ভ্যাকসিন’। কোভিশিল্ড তৈরি হয়েছে মানুষের পরিবর্তে শিম্পাঞ্জির শরীর থেকে নেওয়া এক ধরনের ভাইরাসের স্পাইক প্রোটিন দিয়ে। ওই স্পাইক প্রোটিন মানবদেহে প্রবেশ করানো হলে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়। এর পরে আসল ভাইরাস আক্রমণ করলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা তার বিরুদ্ধে লড়াই করে। কিন্তু এই প্রতিষেধকগুলির অধিকাংশই স্পাইক প্রোটিন-নির্ভর। আর ওমিক্রনের ক্ষেত্রে স্পাইক প্রোটিনই অন্তত তিরিশ বার চরিত্র পরিবর্তন করেছে। ক্রমাগত মিউটেশনের ফলে তা নিজের প্রকৃত চরিত্র হারিয়েছে। ফলে গোড়ায় যে স্পাইক প্রোটিনের উপরে নির্ভর করে প্রতিষেধকগুলি তৈরি হয়েছিল, বর্তমানে তা পাল্টে গিয়েছে বলেই মত বিশেষজ্ঞদের। সেই কারণেই স্পাইক প্রোটিন-নির্ভর প্রতিষেধক কতটা কার্যকর হবে, তা নিয়ে বিজ্ঞানীমহলের একাংশের প্রশ্ন রয়েছে। যদিও ফাইজ়ার-মডার্নার মতো সংস্থাগুলি দাবি করেছে, স্পাইক প্রোটিনে ওই পরিবর্তনের ভিত্তিতে তাদের প্রতিষেধকেও দরকার মতো পরিবর্তন করা হবে। আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই নতুন টিকা বাজারে ছাড়া হবে বলে জানিয়েছে এই সংস্থাগুলি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy