প্রতীকী ছবি।
পুনঃসংক্রমণ মিলল এ বার ভারতেও।
বেঙ্গালুরুতে দু’মাসের মধ্যে দ্বিতীয় বার করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এক মহিলা। ২৭ বছর বয়সি মহিলা গত জুলাইয়ে করোনা সংক্রমিত হয়ে তার পরে সুস্থ হয়ে উঠেছিলেন। কিন্তু গত সপ্তাহে তাঁর শরীরে ফের করোনার মৃদু উপসর্গ দেখা যায়। পরীক্ষায় আজ জানা গিয়েছে, তিনি ফের করোনায় আক্রান্ত। স্বভাবিক ভাবেই দুই থেকে আড়াই মাসের মধ্যে তাঁর দু’বার করোনা-আক্রান্ত হওয়ার খবর নিশ্চিত হওয়ায় নড়েচড়ে বসেছেন স্বাস্থ্যকর্তারা। বেঙ্গালুরুর যে হাসপাতালে ওই মহিলা চিকিৎসাধীন, তাদের কাছে বিস্তারিত রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রক। ইতিমধ্যেই বেশ কিছু দেশে দ্বিতীয় বার সংক্রমণের তথ্য সামনে এসেছে। ভারতেও বেশ কিছু ঘটনা সামনে এলেও সরকারি ভাবে পুনঃসংক্রমণের তথ্য মানতে রাজি হয়নি কেন্দ্র।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, ওই মহিলা প্রথম বার করোনা-আক্রান্ত হলেও, সম্ভবত তাঁর শরীরে করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে দীর্ঘস্থায়ী অ্যান্টিবডি তৈরি হয়নি। এমসের মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক নীরজ নিশ্চল বলেন, সংক্রমণের দুই থেকে তিন সপ্তাহের মাথায় শরীরে ইমিউনোগ্লোবিউলিন-জি অ্যান্টিবডি তৈরি হয়, যা পরবর্তী সময়ে পুনঃসংক্রমণের হাত থেকে রক্ষা করে। সম্ভবত এ ক্ষেত্রে ওই মহিলার শরীরে কোনও কারণে ওই অ্যান্টিবডি তৈরি হয়নি। তাই তিনি ফের সংক্রমিত হয়েছেন। তা ছাড়া প্রথম বার ঠিক ভাবে পরীক্ষা হয়েছিল কি না, তা-ও দেখার প্রয়োজন রয়েছে। বেঙ্গালুরুর হাসপাতাল সূত্রেও বলা হয়েছে, মহিলা অতীতে সংক্রমিত হয়েছেন জেনে তাঁর অ্যান্টিবডি পরীক্ষা করা হয়। কিন্তু দেখা যায় ওই মহিলার শরীরে করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়ার প্রয়োজনীয় অ্যান্টিবডি অনুপস্থিত। সাধারণত কোনও মানুষ রোগে আক্রান্ত হলে বহিরাগত জীবাণুর সঙ্গে লড়াইয়ের জন্য সেই ব্যক্তির শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়। একটি সাময়িক ও অন্যটি দীর্ঘস্থায়ী। ওই দীর্ঘস্থায়ী অ্যান্টিবডি পরবর্তী কালে ওই ব্যক্তিকে একই সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষা করে। কিন্তু নোভেল করোনাভাইরাসের অ্যান্টিবডি শরীরে কত দিন সক্রিয় থেকে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে ফের করোনা-সংক্রমণের হাত থেকে বাঁচাবে, তা নিয়ে নিশ্চিত কিছু বলতে পারছেন না চিকিৎসকেরা। আইসল্যান্ডে দেখা গিয়েছে ওই অ্যান্টিবডির স্থায়িত্ব চার মাস। চিনের ক্ষেত্রে দুই থেকে তিন মাস। ভারতে মোটামুটি চার-পাঁচ মাস ওই অ্যান্টিবডি সক্রিয় থাকছে বলে দেখা গিয়েছে।
আরও পড়ুন: সংসদে যাবেন না সুদীপেরা, ঝুঁকি না-নেওয়ার পরামর্শ তৃণমূল নেত্রীর
আরও পড়ুন: করোনা-রোগীকে ধর্ষণ, গ্রেফতার অ্যাম্বুল্যান্স চালক
কিন্তু ওই মহিলার শরীরে দীর্ঘস্থায়ী অ্যান্টিবডি অনুপস্থিতির দু’টি অর্থ হতে পারে বলে মত চিকিৎসকদের। এক— প্রথম বার সংক্রমণের পরে ওই মহিলার শরীরে করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা একেবারেই গড়ে ওঠেনি। দ্বিতীয়ত— তা গড়ে উঠলেও এক থেকে
দেড় মাসের মধ্যে সেই অ্যান্টিবডি শরীর থেকে গায়েব হয়ে গিয়েছে। যার ফলে ওই রোগিণী পুনঃসংক্রমণের শিকার হয়েছেন। বেঙ্গালুরুর ঘটনায় দু’মাসের মধ্যে নতুন করে সংক্রমণের ঘটনা ঘটায় কিছুটা ধন্দে চিকিৎসকেরা। স্বাস্থ্য মন্ত্রক বলছে, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশেই খুব অল্প সংখ্যক দ্বিতীয় বার সংক্রমণের তথ্য পাওয়া গিয়েছে। সেগুলি ব্যতিক্রম হিসেবে ধরা হয়েছে। গোটা দেশে এমন পুনঃসংক্রমণের তথ্য সামনে না-আসা পর্যন্ত বেঙ্গালুরুর ঘটনাটিও আপাতত ব্যতিক্রমী হিসেবে দেখতে চাইছেন স্বাস্থ্যকর্তারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy