ভারতে মোট করোনা আক্রান্ত হলেন ১৯ লক্ষ ৬৪ হাজার ৫৩৬ জন। গ্রাফিক- শৌভিক দেবনাথ।
দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণ, গত তিন দিন ধরেই ৫২ হাজারের গণ্ডিতে সীমাবদ্ধ থাকার পর আজ ফের বাড়ল। যদিও গত দু’দিনের মতো দশ শতাংশের নীচেই রয়েছে সংক্রমণ হার। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে যে সংখ্যক করোনা পরীক্ষা হয়েছে তা এখনও অবধি সর্বোচ্চ। সেই সঙ্গে দেশে মোট সুস্থ হয়ে ওঠার সংখ্যা ১৩ লক্ষ ছাড়াল।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় ৫৬ হাজার ২৮২ জন নতুন করে কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন। আমেরিকা ও ব্রাজিলে ওই সময়ের মধ্যে নতুন আক্রান্তের সংখ্যা যথাক্রমে ৫৩ হাজার ৫২৪ ও ৫৭ হাজার ১৫২ জন। সংক্রমণের এই বৃদ্ধির জেরে ভারতে মোট করোনা আক্রান্ত হলেন ১৯ লক্ষ ৬৪ হাজার ৫৩৬ জন। যেখানে দ্বিতীয় স্থানে থাকা ব্রাজিলে মোট আক্রান্ত ২৮ লক্ষ ৫৯ হাজার ও প্রথম স্থানে থাকা আমেরিকাতে ৪৮ লক্ষ ২৩ হাজার।
প্রতি দিন যে সংখ্যক মানুষের পরীক্ষা হচ্ছে, তার মধ্যে যত শতাংশের কোভিড রিপোর্ট পজিটিভ আসছে, সেটাকেই বলা হচ্ছে ‘পজিটিভিটি রেট’ বা সংক্রমণের হার। দিন তিনেক ধরে দেশে দশ শতাংশের নীচেই রয়েছে এই হার। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে সংক্রমণের হার ৮.৪৬ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনা পরীক্ষা হয়েছে ছ’লক্ষ ৬৪ হাজার ৯৪৯ জনের। এক দিনে এত সংখ্যক মানুষের টেস্ট করোনাকালে এর আগে হয়নি।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন।)
আক্রান্তের সংখ্যা বাড়লেও, ভারতে করোনা রোগীর সুস্থ হয়ে ওঠার পরিসংখ্যানটাও বেশ স্বস্তিদায়ক। এখনও পর্যন্ত মোট ১৩ লক্ষ ২৮ হাজার ৩৩৬ জন করোনা আক্রান্ত সুস্থ হয়ে উঠেছেন। অর্থাৎ দেশে মোট আক্রান্তের প্রায় ৬৭ শতাংশই সুস্থ হয়ে উঠেছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ৪৬ হাজার ১২১ জন।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
মৃত্যুর নিরিখে স্পেন, ফ্রান্স, ইটালিকে পিছনে ফেলে বিশ্বের পঞ্চম স্থানে রয়েছে ভারত। যদিও মৃত্যুর হার ওই সব দেশগুলির তুলনায় ভারতে অনেকটাই কম। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনার জেরে মৃত্যু হয়েছে ৯০৪ জনের। এ নিয়ে দেশে মোট ৪০ হাজার ৬৯৯ জনের প্রাণ কাড়ল করোনাভাইরাস। এর মধ্যে মহারাষ্ট্রেই মারা গিয়েছেন ১৬ হাজার ৪৭৬ জন। দিল্লিকে পিছনে ফেলে মৃত্যু তালিকার দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে তামিলনাড়ু। দক্ষিণের এই রাজ্যে মোট মৃত চার হাজার ৪৬১ জন। দেশের রাজধানীতে সেই সংখ্যাটা চার হাজার ৪৪ জন।
জুলাই জুড়েই মৃত্যু বেড়ে তালিকার চতুর্থ স্থানে উঠে এসেছে কর্নাটক। সেখানে কোভিডের কারণে এখনও অবধি দু’হাজার ৮০৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। গুজরাতে দু’হাজার ৫৫৬ জনের প্রাণ কেড়েছে করোনাভাইরাস। উত্তরপ্রদেশ (১,৮৫৭), পশ্চিমবঙ্গ (১,৮৪৬) ও অন্ধ্রপ্রদেশে (১,৬৮১) মৃতের সংখ্যা রোজদিন বেড়েই চলেছে। এর পর ক্রমান্বয়ে রয়েছে মধ্যপ্রদেশ (৯২৯), রাজস্থান (৭৪৫), তেলঙ্গানা (৫৮৯), পঞ্জাব (৪৯১), হরিয়ানা (৪৫৫), জম্মু ও কাশ্মীর (৪২৬), বিহার (৩৫৫), ওড়িশা (২২৫) ও ঝাড়খণ্ড (১৩৬)। বাকি রাজ্যগুলিতে মৃতের সংখ্যা এখনও ১০০ পেরোয়নি।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
শুরু থেকেই মহারাষ্ট্র সংক্রমণের শীর্ষে রয়েছে। সে রাজ্যে মোট আক্রান্ত চার লক্ষ ৬৮ হাজার ২৬৫ জন। দ্বিতীয় স্থানে থাকা তামিলনাড়ুতে মোট আক্রান্ত দু’লক্ষ ৭৩ হাজার ৪৬০ জন। সংক্রমণ তালিকায় তৃতীয় স্থানে রয়েছে অন্ধ্রপ্রদেশ। গত ২৪ ঘণ্টায় প্রায় ১০ হাজার নতুন সংক্রমণের জেরে সেখানে এখন মোট আক্রান্ত এক লক্ষ ৮৬ হাজার ৪৬১ জন। তবে জুলাই জুড়েই রাজধানী দিল্লিতে দৈনিক সংক্রমণ বৃদ্ধিতে বেশ খানিকটা লাগাম পড়েছে। এখন সেখানে দৈনিক আক্রান্ত বৃদ্ধি এক হাজারের নীচে নেমে গিয়েছে। রাজধানীতে মোট আক্রান্ত হয়েছেন এক লক্ষ ৪০ হাজার ২৩২ জন। সংক্রমণের নিরিখে দিল্লিকে পিছনে ফেলে চতুর্থ স্থানে উঠে এল কর্নাটক। সেখানে মোট আক্রান্ত হয়েছেন এক লক্ষ ৫১ হাজার ৪৪৯ জন। উত্তরপ্রদেশেও মোট আক্রান্ত আজ এক লক্ষ পেরিয়ে গিয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গ (৮৩,৮০০), তেলঙ্গানা (৭৩,০৫০), গুজরাত (৬৬,৬৬৯), বিহার (৬৪,৭৭০) ও অসমে (৫০,৪৪৫) আক্রান্তের সংখ্যা প্রতি দিন উল্লেখযোগ্য হারে বেড়ে চলেছে। এর পর ক্রমান্বয়ে রয়েছে রাজস্থান (৪৭,২৭২), ওড়িশা (৩৯,০১৮), হরিয়ানা (৩৮,৫৪৮), মধ্যপ্রদেশ (৩৫,৭৩৪), কেরল (২৯,১৫১), জম্মু ও কাশ্মীর (২২,৯৫৫), পঞ্জাব (১৯,৮৫৬), ঝাড়খণ্ড (১৪,৮৮৮) ও ছত্তীসগঢ় (১০,৪০৭)। উত্তরাখণ্ড, গোয়া, ত্রিপুরার মতো রাজ্যে মোট আক্রান্ত এখনও দশ হাজারের কম।
পশ্চিমবঙ্গেও রোজদিন বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। সোমবার সন্ধ্যায় রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের প্রকাশিত বুলেটিন অনুসারে, নতুন করে দু’হাজার ৮১৬ জনের দেহে করোনা ভাইরাসের অস্তিত্ব মিলেছে। এক দিনে এত সংখ্যক মানুষ এর আগে আক্রান্ত হননি রাজ্যে। এ নিয়ে রাজ্যে মোট আক্রান্ত হলেন ৮৩ হাজার ৮০০ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে মৃত্যু হয়েছে সর্বোচ্চ (৬১ জনের)। করোনার কবলে পড়ে রাজ্যে এখনও অবধি প্রাণ হারিয়েছেন এক হাজার ৮৪৬ জন।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
(চলন্ত গড় বা মুভিং অ্যাভারেজ কী: একটি নির্দিষ্ট দিনে পাঁচ দিনের চলন্ত গড় হল— সেই দিনের সংখ্যা, তার আগের দু’দিনের সংখ্যা এবং তার পরের দু’দিনের সংখ্যার গড়। উদাহরণ হিসেবে— দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণের লেখচিত্রে ১৮ মে-র তথ্য দেখা যেতে পারে। সে দিনের মুভিং অ্যাভারেজ ছিল ৪৯৫৬। কিন্তু সে দিন নতুন আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ছিল ৫২৬৯। তার আগের দু’দিন ছিল ৩৯৭০ এবং ৪৯৮৭। পরের দুদিনের সংখ্যা ছিল ৪৯৪৩ এবং ৫৬১১। ১৬ থেকে ২০ মে, এই পাঁচ দিনের গড় হল ৪৯৫৬, যা ১৮ মে-র চলন্ত গড়। ঠিক একই ভাবে ১৯ মে-র চলন্ত গড় হল ১৭ থেকে ২১ মে-র আক্রান্তের সংখ্যার গড়। পরিসংখ্যানবিদ্যায় দীর্ঘমেয়াদি গতিপথ সহজ ভাবে বোঝার জন্য এবং স্বল্পমেয়াদি বড় বিচ্যুতি এড়াতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy