Advertisement
E-Paper

মন্তব্য বিচারকের মৃত্যু নিয়ে, ফের বিতর্কে মহুয়া

মহুয়া বক্তব্য শেষ করে নিজের আসনে বসতেই বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে লোয়ার মৃত্যু নিয়ে যে সন্দেহ তোলা হয়েছে মহুয়াকে তাঁর প্রমাণ দেওয়ার দাবি জানান। সংসদীয় মন্ত্রী রিজিজু বলেন, লোয়ার মৃত্যু নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট প্রশ্ন তোলেনি।

তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র।

তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৭:১৯
Share
Save

ফের বিতর্কের মুখে তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র। আজ লোকসভায় সংবিধান সংক্রান্ত বিতর্কে সিবিআই আদালতের বিচারক বি এইচ লোয়ার মৃত্যু প্রসঙ্গে মহুয়া বলেন, সময়ের আগে মৃত্যু হয়েছিল ওই বিচারকের। শেখ সোহরাবুদ্দিন ভুয়ো সংঘর্ষ মামলায় অভিযুক্ত ছিলেন তৎকালীন গুজরাতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সেই মামলাটি চলছিল লোয়ার এজলাসে। আজ মহুয়া ওই মন্তব্য করার পরেই তীব্র প্রতিবাদ জানান সংসদীয় মন্ত্রী কিরেন রিজিজু। পাল্টা মন্তব্যে মহুয়ার অভিযোগ, তাঁকে হুমকি দিয়েছেন কিরেন। উভয় পক্ষের বক্তব্য খতিয়ে দেখে পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানাবেন বলে জানিয়েছেন স্পিকার ওম বিড়লা।

সংবিধান সংক্রান্ত বিতর্কে তৃণমূলের হয়ে দ্বিতীয় বক্তা ছিলেন মহুয়া। নিজের বক্তব্যে বিচারব্যবস্থার সঙ্গে শাসকের সুসম্পর্ক নিয়ে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মহুয়া বলেন, সংবিধান প্রণেতারা কোনও দিন ভাবতে পারেননি রায় দেওয়ার সময়ে বিচারপতিরাও ব্যক্তিগত ভাবে ভগবানের সঙ্গে কথা বলে নেন। নাম না করে দেশের সদ্য প্রাক্তন প্রধান বিচারপতির বাড়িতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর যাওয়া নিয়েও প্রশ্ন তোলেন মহুয়া। বিজেপি শিবিরের বক্তব্য, মহুয়ার অভিযোগের তিরে ছিলেন সদ্য অবসর নেওয়া দেশের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়। যাঁর বাড়িতে গণেশ পুজোয় গিয়েছিলেন মোদী। যিনি জানান, রাম মন্দির-বাবরি মসজিদ মামলার রায় দেওয়ার সময়ে সমাধানের জন্য ভগবানের কাছে প্রার্থনা করেছিলেন। বিজেপি নেতৃত্বের বক্তব্য, প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি সম্পর্কে এমন মন্তব্য করতে পারেন না মহুয়া। মহুয়া বলেন, “আজ সকালে প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ নিজের বক্তব্যে প্রাক্তন বিচারপতি এইচ আর খন্নার ১৯৭৬ সালে নেওয়া সাহসী রায়ের প্রসঙ্গ উল্লেখ করেছিলেন। আমি সবাইকে মনে করিয়ে দিতে চাই, ১৯৭৬ সালের পরে খন্না আরও ৩২ বছর জীবিত ছিলেন। যে সময়ের বেশিরভাগটাই শাসন করেছে কংগ্রেস। নিজের জীবনী লেখার জন্য যে সময় যথেষ্ট। অথচ হতভাগ্য বিচারক লোয়াকে সময়ের অনেক আগেই চলে যেতে হয়েছিল।” বিরোধীদের মতে, লোয়ার রহস্যজনক মৃত্যুর সঙ্গে অমিত শাহের নামও জড়িয়ে রয়েছে বলেই শাসক দলের কাছে বিষয়টি ভীষণই স্পর্শকাতর। অমিত শাহ গুজরাতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী থাকাকালীন শেখ সোহরাবুদ্দিন নামে এক জঙ্গির এনকাউন্টার হয়। যদিও সোহরাবুদ্দিনের পরিবারের দাবি ছিল তিনি জঙ্গি নন। তাঁকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করা হয়েছে। তদন্তের ভার যায় সিবিআইয়ের কাছে। কিন্তু ২০১৪ সালে ওই সিবিআই আদালতের বিচারক লোয়ার মৃত্যু হয়। যে মৃত্যু রহস্যজনক বলে অভিযোগ ওঠে। মামলাও হয় সুপ্রিম কোর্টে।

মহুয়া বক্তব্য শেষ করে নিজের আসনে বসতেই বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে লোয়ার মৃত্যু নিয়ে যে সন্দেহ তোলা হয়েছে মহুয়াকে তাঁর প্রমাণ দেওয়ার দাবি জানান। সংসদীয় মন্ত্রী রিজিজু বলেন, লোয়ার মৃত্যু নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট প্রশ্ন তোলেনি। কোর্টে নিষ্পত্তি হয়ে যাওয়া বিষয় নিয়ে প্রশ্ন তোলায় মহুয়ার বিরুদ্ধে সংসদীয় নিয়ম মেনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। লোকসভায় হট্টগোল হওয়ায় দু’বার সংবিধান সংক্রান্ত বিতর্ক মুলতুবি করে দিতে হয়। পরে মহুয়ার সমর্থনে সুর চড়িয়ে কংগ্রেস সাংসদ কে সি বেণুগোপালের প্রশ্ন, “কী ভাবে সংসদীয় মন্ত্রী এক জন মহিলা সাংসদকে হুমকি দেন?” তিনি স্পিকার ওম বিড়লার হস্তক্ষেপ দাবি করেন। স্পিকার জানান, সংবিধান সংক্রান্ত বিতর্কে মহুয়া ও রিজিজু কী বলেছেন তা তিনি খতিয়ে দেখবেন। সূত্রের মতে বিজেপির বিরুদ্ধে মহুয়া যে অভিযোগ তুলেছেন তা প্রমাণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তাঁকে। মহুয়ার বক্তব্য, “আমাকে হুমকি দেওয়ার জন্য সংসদীয় মন্ত্রীকে শাস্তির মুখে পড়তে হবে। তাঁর বক্তব্য মোছা হবে,আমার নয়!”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

TMC MP Mahua Moitra Lok Sabha

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}