ফাইল চিত্র।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী রাজ্য সরকারগুলির ‘খয়রাতি’র নিন্দা করেই চলেছেন। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এন ভি রমণাও বলেছেন, ভোটারদের ঢালাও খয়রাতির প্রতিশ্রুতি গুরুতর বিষয়। অর্থনীতি ও জনকল্যাণের মধ্যে ভারসাম্য দরকার।
প্রধানমন্ত্রী ও প্রধান বিচারপতির এই অবস্থান নিয়ে আজ বিরোধীরা কার্যত এক সুরে প্রশ্ন তুললেন। কংগ্রেস নেতৃত্ব থেকে অরবিন্দ কেজরীওয়াল, সীতারাম ইয়েচুরিদের এক সুরে অভিযোগ, নরেন্দ্র মোদী কর্পোরেট সংস্থাগুলিকে ১.৮৫ লক্ষ কোটি টাকার কর ছাড় দিয়েছেন। কিন্তু গরিবদের বিনামূল্যে সুযোগসুবিধা দিলে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। প্রধান বিচারপতি নিজে কী কী বিনামূল্যে পেয়ে থাকেন, তা নিয়ে রাষ্ট্রীয় লোক দলের নেতা জয়ন্ত চৌধুরী প্রশ্ন তুলেছেন। বিরোধীদের বক্তব্য, সাধারণ মানুষের জন্য নিখরচায় স্বাস্থ্য, শিক্ষা বা বিদ্যুৎ দেওয়াকে কী ভাবে খয়রাতি বলা যায়? মোদী সরকার নিজে বিনামূল্যে রেশন, রান্নার গ্যাসের সংযোগ দিলে তাকে কেন খয়রাতি বলা হবে না?
কংগ্রেসের মুখপাত্র গৌরব বল্লভ আজ সাংবাদিক বৈঠকে প্রশ্ন তোলেন, মোদী সরকারই কোভিডের সময় দেশের ৮০ কোটি মানুষকে বিনামূল্যে বাড়তি রেশন দিয়েছিল। প্রধানমন্ত্রীর কথা মতো এখন সেটা রেউড়ি সংস্কৃতি। অথচ ব্যাঙ্কগুলি গত পাঁচ বছরে ৯.৯২ লক্ষ কোটি টাকা অনাদায়ী ঋণের খাতা থেকে মুছে দিয়েছে। তা নিয়ে সরকার নীরব। একশো দিনের কাজে ৩.০৭ কোটি পরিবার কাজ চাইলেও সরকার তাতে বরাদ্দ কমিয়েছে। কিন্তু গত দু’বছরে কর্পোরেট কর ছাড় বাবদ কেন্দ্রের ১.৮৪ লক্ষ কোটি টাকা লোকসান হয়েছে। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়ালের বক্তব্য, ‘‘হাতে গোনা ধনী বন্ধুদের কর ছাড় না দিলে আর গরিবের খাদ্যে কর আদায় করতে হত না।’’ সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরির প্রশ্ন, ‘‘এই কর ছাড়ও কি রেউড়ি? না কি রাজকোষের টাকায় বন্ধুদের সাহায্য করা?’’
কংগ্রেস আজ জানিয়েছে, গরিবদের জন্য বিনামূল্যে সুযোগ-সুবিধা দেওয়া থেকে সরে আসার প্রশ্নই নেই। গুজরাতে ক্ষমতায় এলে কংগ্রেস ৩ লক্ষ টাকা পর্যন্ত কৃষি ঋণ মকুব করবে এবং চাষিদের ১০ ঘণ্টা নিখরচায় বিদ্যুৎ জোগাবে বলে ঘোষণা করেছে। কংগ্রেস নেতা মণীশ তিওয়ারির প্রশ্ন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী গরিব অন্ন কল্যাণ যোজনায় রেশন বিলিও কি খয়রাতি ছিল? পঞ্জাবের চাষিদের জন্য, দিল্লির সাধারণ মানুষের জন্য বিনামূল্যে বিদ্যুৎ কি খয়রাতি? কোথায় জনকল্যাণ শেষ আর খয়রাতি শুরু?”
বিজেপি আজ বোঝানোর চেষ্টা করেছে, মোদী সরকার মানুষের স্থায়ী উন্নতির জন্য বিনামূল্যে রেশন বিলি বা রান্নার গ্যাসের সংযোগের ব্যবস্থা করেছে। কিন্তু অনেক দল স্বল্পমেয়াদী লাভের জন্য, ভোট পেতে খয়রাতি বিলি করছে। বিজেপির মুখপাত্র সম্বিত পাত্র বলেন, ‘‘দিল্লির কেজরীবাল সরকার কৌশল বিকাশ গ্যারান্টি যোজনায় ২০২১-২২-এ দুই পড়ুয়াকে ঋণ গিয়েছে। কিন্তু তার প্রচারে ১৯.৪৭ কোটি টাকা ব্যয় করেছে।’’
কেন্দ্রের সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টে বলেছিলেন, অনেক প্রতিশ্রুতিই নির্বাচনী প্রচারে ঘোষণা হয়। কিন্তু ইস্তাহারে থাকে না। রাষ্ট্রীয় লোক দলের নেতা জয়ন্ত চৌধুরীর বক্তব্য, ‘‘এটা বিজেপির জন্য সত্যি হতে পারে। আমাদের জন্য নয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy