Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Rajnath Singh

Rajnath Singh: গাঁধীর পরামর্শেই মুচলেকা! রাজনাথ সাভারকর-বিতর্কে

রাজনাথের সঙ্গে আরএসএস-বিজেপিকে তুলোধোনা করেছে কংগ্রেস ও সিপিএম। সঙ্ঘের ‘ইতিহাস বিকৃতির পুরনো বদভ্যাসের’ সমালোচনায় মুখর হয়েছে দুই দলই।

ফাইল চিত্র

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ অক্টোবর ২০২১ ০৭:২৩
Share: Save:

মিলছে না সময়ে বা তথ্যে। যোগসূত্র পাওয়া যাচ্ছে না যুক্তিতেও। তবু ব্রিটিশের কাছে বিনায়ক দামোদর সাভারকরের বারবার ক্ষমা চাওয়ার সঙ্গে মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধীর নাম জড়িয়ে বিতর্ক বাধিয়েছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। সম্প্রতি সাভারকারকে নিয়ে একটি বই প্রকাশের অনুষ্ঠানে রাজনাথের দাবি, “মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধীর অনুরোধেই সাভারকর অনেক বার ব্রিটিশের কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করে মুচলেকা দিয়েছিলেন। মার্ক্সবাদী-লেনিনবাদীরা অন্যায় ভাবে তাঁকে ফ্যাসিবাদী তকমা দিয়ে থাকেন।”

সাভারকরের মুচলেকার ঘটনা ঘটেছিল ১৯১১ ও ১৯১৩/১৪ সালে। আর গাঁধী ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে যোগ দেন ১৯১৫ সালে। এর পাঁচ বছর পরে ১৯২০ সালের ২৫ জানুয়ারি তিনি বিনায়ক দামোদর সাভারকরের ভাই এন ডি সাভারকরকে একটি চিঠি লিখেছিলেন। ওই চিঠিতে যা-ই থাক, তাতে ১২-১৩ বছর আগে দেওয়া মুচলেকার জন্য পরামর্শ কী ভাবে থাকতে পারে? নিজে ১১ বার জেলে গেলেও গাঁধী কখনও ব্রিটিশদের কাছে মুক্তির জন্য ক্ষমা চেয়ে মুচলেকা দেননি। তিনি কোন যুক্তিতে সাভারকরকে মুচলেকা দেওয়ার পরামর্শ দিতে যাবেন উঠেছে এই প্রশ্নও। এই সব তথ্য ও যুক্তি তুলে ধরে রাজনাথের সঙ্গে আরএসএস-বিজেপিকে তুলোধোনা করেছে কংগ্রেস ও সিপিএম। সঙ্ঘের ‘ইতিহাস বিকৃতির পুরনো বদভ্যাসের’ সমালোচনায় মুখর হয়েছে দুই দলই। বিতর্কে ইন্ধন জুগিয়েছেন আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবতও।

রাজনাথের ১২ তারিখের ওই মন্তব্যের সূত্রে কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ বলেছেন, ‘‘মোদী সরকারে হাতে গোনা যে কয়েকটি সম্ভ্রান্ত মুখ রয়েছে, রাজনাথ সিংহ তার অন্যতম। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, সঙ্ঘের নতুন করে ইতিহাস লেখার বদভ্যাস থেকে তিনিও মুক্ত নন!’’ রমেশের দাবি, “প্রক্ষিপ্ত ভাবে ১৯২০ সালের ২৫ জানুয়ারি লেখা ওই চিঠি সামনে এনে তার বক্তব্যকে বিকৃত ও অপব্যাখ্যা করেছেন রাজনাথ। তবে এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই। এটাই বিজেপি-আরএসএসের স্বভাব।”

সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরির মন্তব্য, ‘‘ইতিহাসকে নতুন করে লেখার আরও একটা ভয়ঙ্কর চেষ্টা এটা! সাভারকরের মুচলেকার ঘটনা ঘটেছিল ১৯১১ ও ১৯১৩ সালে। গাঁধী ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে যোগ দেন ১৯১৫-তে। মোদ্দা কথা হল, আরএসএস কখনও স্বাধীনতা সংগ্রামের অংশ ছিল না। তারা বরং সুযোগ মতো ব্রিটিশদের সঙ্গে তাল মিলিয়েছে। এই ধরনের তথ্যবিকৃতি ঘটিয়ে সত্যকে মুছে দেওয়া যাবে না!’’

ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগ এনেছেন এমআইএম নেতা আসাদুদ্দিন ওয়েইসিও। ছ’মাস জেলে থাকার পরে সাভারকর প্রথম মুচলেকা দেন ১৯১১-তে। গাঁধী তখন দক্ষিণ আফ্রিকায়। পরের মুচলেকা ১৯১৩/১৪ সালে। আর গাঁধী চিঠি লিখেছিলেন ১৯২০ সালে। সাভারকর যে তেরঙা পতাকাকে খারিজ করেছিলেন, এই সত্যও কি রাজনাথজিরা অস্বীকার করতে পারেন প্রশ্ন রেখেছেন ওয়েইসি। রাজনাথের ওই বক্তৃতা যিনি লিখেছেন, তাঁর চাকরি যাওয়া উচিত বলেও কটাক্ষ ছুড়েছেন ওয়েইসি।

বিজেপি সাংসদ রাকেশ সিংহ পাল্টা কটাক্ষ ছুড়েছেন তৎকালীন কংগ্রেস নেতাদের ব্রিটিশ-ঘনিষ্ঠতা নিয়ে। টুইটে লিখেছেন, “কংগ্রেস চিরকালই সাভারকরের বিরোধিতা করে এসেছে। সাভারকর কখনওই ব্রিটিশ প্রশাসনের সঙ্গে মেলামেশা করেননি। মাতৃভূমির জন্য সর্বোচ্চ আত্মত্যাগ করেছেন। দেখা গিয়েছে, কংগ্রেসের নেতারাই বরং মাউন্টব্যাটনের বাসভবনে গিয়ে নৈশাহার সারতেন।”

রাজনাথের মতে, সাভারকার ছিলেন স্বাধীনতা সংগ্রামী ও কট্টর জাতীয়তাবাদী। তাঁর প্রশংসায় রাজনাথের দাবি, “কট্টর স্বাধীনতাকামী ছিলেন বলেই ব্রিটিশরা সাভারকরকে দু’বার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছিল। বিশ শতকে তিনিই ছিলেন ভারতের প্রথম প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞ। দেশের কূটনৈতিক অবস্থানের প্রবক্তা।”

অন্য বিষয়গুলি:

Rajnath Singh mahatma gandhi
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy