সম্ভলের শাহি জামা মসজিদ ঘিরে বিতর্ক অব্যাহত। শনিবার রাজ্যের প্রধান বিরোধী পক্ষ সমাজবাদী পার্টির ১৫ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল সম্ভলে ঢুকতে গেলে তাদের বাধা দেয় উত্তরপ্রদেশ প্রশাসন। রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা মাতা প্রসাদ পাণ্ডের নেতৃত্বে দলটি সম্ভলে সাম্প্রতিক গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে দেখা করার পাশাপাশি বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে দেখা করবে বলে দলের তরফে জানানো হয়। কিন্তু তার আগেই আগামী ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত সম্ভলে বহিরাগতদের ঢোকা আটকাতে একটি নির্দেশ জারি করে যোগী আদিত্যনাথ সরকার। এই পরিস্থিতিতে এসপি-র প্রতিনিধি দলকে সেখানে ঢুকতে না দেওয়ায় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন এসপি প্রধান অখিলেশ যাদব।
অখিলেশ আজ বলেন, “আজ এত কড়াকড়ি, তা হলে সে দিন সম্ভলে প্রশাসন কী করছিল? প্রথম যে দিন সমীক্ষা হয়, সে দিন কিছু হয়নি। কিন্তু তার পরের সমীক্ষার দিন সেখানে যারা স্লোগান দিয়েছিল, তারা তো বিজেপি সমর্থক! যত দিন এই বিজেপি সরকার ক্ষমতায় রয়েছে, তত দিন মানুষ সুবিচার পাবেন না। সম্ভলে মসজিদে সমীক্ষাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ এবং পুলিশের গুলিতে পাঁচ জনের মৃত্যুর পরেই আঙুল উঠেছিল যোগী সরকারের দিকে। নিহতেরা সকলেই মুসলিম। বিরোধীদের অভিযোগ, বিজেপির সশস্ত্র বাহিনী এবং পুলিশ বেছে বেছে হামলা করেছে এবং গুলি চালিয়েছে। অখিলেশ এ দিন তাঁর এক্স হ্যান্ডলে বলেন, নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতেই সম্ভলে ঢোকার উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে বিজেপি সরকার এবং তাদের প্রশাসন। এই নিষেধাজ্ঞা আগে জারি করা হলে ওখানে কোনও গোলমালই হত না।”
গত কালই সম্ভল নিয়ে মামলার শুনানিতে প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্না এবং বিচারপতি সঞ্জয় কুমারের বেঞ্চ জানিয়েছিল, মসজিদে সমীক্ষা সংক্রান্ত আর নির্দেশ দিতে পারবে না স্থানীয় নিম্ন আদালত। পাশাপাশি সমীক্ষার নির্দেশ নিয়ে হাই কোর্টে আবেদন করতে হবে মসজিদ কর্তৃপক্ষকে। এবং ৬ জানুয়ারি পর্যন্ত মসদিজ চত্বরে সমীক্ষার রিপোর্ট প্রকাশ্যে আনা যাবে না বলেও জানিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট।
এরই মধ্যে ভারতীয় পুরাতত্ব সর্বেক্ষণ (এএসআই) এক হলফনামায় জানিয়েছে, তাদের নিয়ন্ত্রণে থাকা সত্ত্বেও সম্ভলের শাহি জামা মসজিদে সমীক্ষার কাজে তাদের বারবার বাধার মুখে পড়তে হয়েছে। ১৯২০ সালে এই মসজিদটিকে সংরক্ষিত স্মারক হিসেবে ঘোষণা করা হয়। কিন্তু এএসআইয়ের দাবি, তাদের অনুমোদন ছাড়াই মোগল আমলের কাঠামোটিতে বিভিন্ন সময় রদবদল করেছে মসজিদ কমিটি। এসএসআইয়ের দলকে পর্যবেক্ষণের জন্য মসজিদ চত্বরে ঢুকতে নানা সময়ে বাধা দেওয়া হয় বলেও হলফনামায় দাবি করা হয়েছে।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)