গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
রাজ্যসভায় দাঁড়িয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ দাবি করেছিলেন, কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে কেরল সরকারকে ২৩ জুলাই থেকে সতর্কবার্তা পাঠানো হয়েছিল। কেরল সরকার আগে থেকে পদক্ষেপ করলে ওয়েনাড়ে এত জনের মৃত্যু এড়ানো যেত। সেই দাবির ‘সত্যতা’ নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই শাহের বিরুদ্ধে স্বাধিকারভঙ্গের নোটিস আনলেন কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ।
রাজ্যসভার চেয়ারম্যানকে শুক্রবার শাহের বিরুদ্ধে স্বাধিকারভঙ্গের চিঠি দিয়েছেন জয়রাম। তাতে তিনি একটি সর্বভারতীয় ইংরেজি দৈনিকের নামোল্লেখ করে লিখেছেন, তারা-সহ একাধিক সংবাদমাধ্যম শাহের দাবির তথ্য যাচাই করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। সেখানে স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে, আগাম সতর্কবার্তা ছিল না। জয়রামের বক্তব্য, সংসদের উচ্চকক্ষকে বিভ্রান্ত করেছেন দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বুধবার সংসদের উচ্চকক্ষে দাবি করেন, ওয়েনাড়ে ভূমিধসকাণ্ডের অন্তত এক সপ্তাহ আগে, গত ২৩ জুলাই, কেন্দ্রীয় সরকার বিজয়ন সরকারকে সতর্ক করেছিল। ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস শুনেই পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর ন’টি দল। শাহ বলেছিলেন, ‘‘কেরলে আগেভাগেই জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী (এনডিআরএফ)-র ন’টি দলকে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু কেরল সরকার সময় থাকতে মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরানোর বন্দোবস্ত করেনি। তা করা হলে প্রাণহানি কিছুটা হ্রাস পেত।’’
শাহের দাবি উড়িয়ে কেরলের সিপিএম নেতৃত্বাধীন সরকারের মুখ্যমন্ত্রী বিজয়ন বলেন, ‘‘ওয়েনাড়ে ধসের সম্ভাবনা নিয়ে কেন্দ্রের তরফে কেরলকে কোনও সতর্কবার্তা পাঠানো হয়নি।’’ শুধুমাত্র কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতর (আইএমডি)-এর তরফে ওয়েনাড় এবং সংলগ্ন এলাকায় ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা নিয়ে একটি ‘মামুলি’ কমলা সতর্কতা পাঠানো হয়েছিল বলে দাবি করেছিলেন বিজয়ন।
এর মধ্যেই শুক্রবার আগাম সতর্কবার্তার বিষয়ে মুখ খুলেছে জিয়োলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া (জিএসআই)। সংস্থার তরফে শুক্রবার জানানো হয়েছে, পাহাড়ি এলাকায় ধস থেকে প্রাণ বাঁচাতে বছর কয়েক আগে যে বিশেষ সতর্কবার্তা চালু করা হয়েছিল, তা এখনও পরীক্ষামূলক স্তরে রয়েছে। এখনও দেশের আমজনতাকে নিখুঁত ভাবে ভূমিধসের পূর্বাভাস দেওয়ার পদ্ধতি চালু করতে চার-পাঁচ বছর সময় লাগবে বলে জানানো হয়েছে প্রতিষ্ঠানের তরফে। জিএসআই শুক্রবার সংবাদ সংস্থা পিটিআই-কে জানিয়েছে, এখনও সেই ‘সতর্কবার্তা মডেল’ প্রাথমিক স্তরে রয়েছে এবং দিনে মাত্র এক বার সেই বার্তা পাঠানো হয়। এ ক্ষেত্রেও রাজ্য বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ (এসডিএমএ) এবং জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ (ডিডিএমএ)-কে সেই পরীক্ষামূলক সতর্কবার্তা পাঠানো হয়েছিল বলে জিএসআই মুখপাত্রের দাবি। যা বিজয়নের দাবিকে প্রতিষ্ঠিত করেছে বলে দাবি অনেকের।
কেরলে সিপিএম তথা বামেদের প্রধান বিরোধী কংগ্রেস। কিন্তু রাজ্যের সেই বাস্তবতার উর্ধ্বে উঠে ওয়েনাড় বিপর্যয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধেই সুর চড়াল কংগ্রেস। এর আগে রাজ্যসভায় কংগ্রেসের এক মহিলা সাংসদ ওয়েনাড়ের জন্য কেন্দ্রের কাছে পাঁচ হাজার কোটি টাকার প্যাকেজও দাবি করেছিলেন। শুক্রবার শাহের বিরুদ্ধে স্বাধিকারভঙ্গের নোটিস আনলেন প্রবীণ কংগ্রেস নেতা জয়রাম।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy