কংগ্রেসের নেতৃত্ব বদল। গ্রাফিক — শৌভিক দেবনাথ।
আড়াই দশক পর গান্ধী পরিবারের বাইরে কেউ সভাপতি হলেন কংগ্রেসের। বিপুল ব্যবধানে জিতে সভাপতির পদে বসলেন ‘সনিয়া-অনুগত’ মল্লিকার্জুন খড়্গেই। ভোটের ব্যবধানে খড়্গের থেকে অনেকটাই পিছনে রয়েছেন আর এক পদপ্রার্থী শশী তারুর।
মঙ্গলবার ভোট গণনার পর দেখা যায় কংগ্রেস সভাপতি শশীকে বিপুল ব্যবধানে পিছনে ফেলে দিয়েছেন মল্লিকার্জুন। ভোট পড়েছিল ৯৩৮৫টি, তার মধ্যে মল্লিকার্জুন পেয়েছেন ৭৮৯৭ ভোট। শশীর ঝুলিতে গিয়েছে মাত্র ১০৭২টি ভোট। তার ফলে কংগ্রেস সভাপতি পদে আসীন হলেন মল্লিকার্জুনই। বাতিল হয়েছে ৪১৬টি ভোট। কংগ্রেসের সেন্ট্রাল ইলেকশন অথরিটি (সিইএ) তথ্য বলছে, দেশে মোট ভোটগ্রহণ কেন্দ্র ছিল ৩৬টি। বুথের সংখ্যা ৬৭। প্রতি ২০০ ভোটার পিছু একটি করে বুথ নির্ধারিত করা হয়। ‘ভারত জোড়ো’ যাত্রার কারণে কর্নাটকের বল্লারির সাঙ্গানাকাল্লুর শিবির থেকে ভোট দেন রাহুল। তাঁর সঙ্গে ভোট দেন যাত্রায় অংশ নেওয়া প্রায় ৫০ জন ‘ভারত যাত্রী’। সভাপতি নির্বাচনের জন্য গোপন ব্যালটে হয় ভোটগ্রহণ। এই প্রথম বার ভোটদাতাদের কিউআর কোড-সহ পরিচয়পত্র দেয় সিইএ। পরিচয়পত্র ছাড়া ভোট দেওয়া যায়নি। ভোটগ্রহণের জন্য ৯৪৩ জন রিটার্নিং অফিসারও নিয়োগ করে কংগ্রেস।
১৯৯৮ সালের পর এই প্রথম কংগ্রেসের সভাপতি পদে গান্ধী পরিবারের বাইরের কেউ বসতে চলেছেন। এর আগে ওই পদে ছিলেন সীতারাম কেশরী। কংগ্রেসের অন্দরের খবর, লড়াইয়ে প্রথম থেকে এগিয়ে ছিলেন খড়্গেই। ‘সনিয়া অনুগত’ খড়্গের জয়ে দলের রাশ যে গান্ধী পরিবারের হাতে থাকবে বলেই ধারণা অনেকের। সভাপতি পদে নির্বাচনের সময় রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গহলৌত এবং দিগ্বিজয় সিংহ ঘোষণা করেছিলেন যে, তাঁরাও ভোটে মনোনয়ন পেশ করবেন। শেষ পর্যন্ত অবশ্য দু’জনেই সরে যান। খড়্গের নাম প্রস্তাব করেন দিগ্বিজয়। কংগ্রেসের জি-২৩ ‘বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠী’রও অনেকেই খড়্গের নামই প্রস্তাব করেন।
মল্লিকার্জুনই যে লক্ষ্যভেদ করবেন তা স্পষ্ট ছিল এক রকম। কারণ, জয়ীর নাম প্রকাশ্যে আসার আগেই বুধবার কর্নাটকে মল্লিকার্জুনের নাম দলের সভাপতি হিসাবে ঘোষণা করে দেন রাহুল গান্ধী। সাংবাদিকরা তাঁকে প্রশ্ন করেন নয়া সভাপতির আমলে তাঁর কী ভূমিকা হবে তা নিয়ে। উত্তরে রাহুল বলেন, ‘‘নতুন সভাপতি স্থির করবেন আমার ভূমিকা। খড়্গেজি এবং সনিয়াজিকে জিজ্ঞাসা করে নিন।’’
ভোটগণনা ঘিরে খড়্গে এবং শশী শিবিরের মধ্যে টানটান উত্তেজনা ছিল। শশী শিবির অভিযোগ করে, ভোট প্রক্রিয়ায় ‘অত্যন্ত গুরুতর অনিয়ম’ হয়েছে। উত্তরপ্রদেশের ভোট ‘অবাধ এবং স্বচ্ছ নয়’ বলেও দাবি ওই শিবিরের। তারুরের নির্বাচনী এজেন্ট সলমন সোজ় বলেন, ‘‘আমরা মধুসূদন মিস্ত্রির অফিসের সঙ্গে ক্রমাগত যোগাযোগ করছি। বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে অবহিত করেছি। এখনই সুনির্দিষ্ট ভাবে কিছু বলছি না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy